জাপানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত গুরুতর রোগী ছাড়া হাসপাতালে ভর্তি না নেওয়ার নির্দেশনা জারি করলো জাপান সরকার । এরমধ্যে যারা প্রাথমিকভাবে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছে ও যাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক নয় তাদের নিজ বাসায় আইসোলেশনে থাকার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
অলিম্পিকের আয়োজক দেশটি এখন কঠিন সময় পার করছে, অতি সংক্রামক ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে বিপর্যস্ত হয়ে। বর্তমানে দেশটিতে করোনা সংক্রমণ রেকর্ড গতিতে বাড়ছে। দৈনিক ১০ হাজারের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে। শনিবার (৩১ জুলাই, ২০২১) শুধু টোকিও শহরে চার হাজারের বেশি মানুষের করোনা শনাক্ত করা হয়েছে।
শোয়া ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের পরিচালক হিরোনোরি সাগারা বলেছেন, টোকিওর হাসপাতালগুলোতে সংকট শুরু হয়েছে। অনেকে হাসপাতালে ভর্তিই হতে পারছে না। অলিম্পিক নিয়ে উত্তেজনায় চিকিৎসাকর্মীদের বেগ পেতে হচ্ছে।দেশটির প্রধান মন্ত্রিপরিষদ সচিব কাতসুনোবু কাটো সাংবাদিকদের বলেন, কম বয়সী যাদের অধিকাংশই টিকা নেওয়া, তারাও সংক্রমিত হচ্ছে।তিনি বলেন, তরুণদের মধ্যে সংক্রমণ বাড়ছে এবং ৪০ থেকে ৫০ বছর বয়সীদের মধ্যেও সংক্রমণের লক্ষণ বাড়ছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ হাসপাতালে ভর্তি হতে পারলেও অনেকেই ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়নি। তারা নিজ বাসাতেই সুস্থ হয়ে উঠছেন।
সোমবার (২ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা ঘোষণা দিয়েছেন, কোভিড আক্রান্তদের নিজ বাসায় আইসোলেশনে থাকতে হবে। অতি জরুরি ছাড়া হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন নেই।তার এই ঘোষণায় মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। কনিস্টিটিউশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতাও প্রধানমন্ত্রীর ওই ঘোষণার বিরোধিতা করেছেন।শোয়া ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের পরিচালক সাগারা বলেছেন, যতি এভাবে সংক্রমণ বাড়তে থাকে তবে হাসপাতালে কোভিড রোগীর চিকিৎসা দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়বে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী, কেবল গুরুতর রোগীদেরকেই নিবিড় পরিচর্যায় রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জাপান নিউজ পত্রিকায় বলা হয়েছে, ১২ হাজার করোনারোগী নিজ বাসায় রয়েছে। এই হার গত মাসের তুলনায় ১২ গুণ বেড়েছে।
তবে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ও অলিম্পিকের আয়োজকদের দাবি, করোনা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার পেছনে সামার গেমের কোনো প্রভাব নেই। মঙ্গলবার (৩ জুলাই) দুপুর পর্যন্ত দেশটিতে করোনায় মোট ৯ লাখ ৩৫ হাজার ৮৮৬ জন আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছে ১৫ হাজারের বেশি। সুস্থ হয়ে উঠেছে ৮ লাখ ৪২ হাজার ৭৮০ জন।
সুত্রঃ জাপান নিউজ (ইয়োমিউরি শিম্বুন)