নরসিংদী: নরসিংদীতে শহিদুল ইসলাম শহিদ নামে ৬৩ বছর বয়সের এক বৃদ্ধ টানা চার ঘণ্টা উত্তাল মেঘনা নদীতে সাঁতার কেটে ১৫ কিলোমিটার (কিমি) পাড়ি দিয়েছেন।
সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টায় রায়পুরা উপজেলার মনিপুরা ঘাট থেকে শুরু হওয়া সাঁতার দুপুর ১২টায় শেষ হয় নরসিংদী সদরের থানার ঘাট এলাকায়। শহিদুল ইসলাম শহিদ পেশায় একজন কৃষক। তিনি রায়পুরা উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের দাড়ি বালুয়াকান্দি গ্রামের বাসিন্দা।
স্থানীয়রা জানান, বেশ কিছুদিন আগে বকুল মিয়া নামে স্থানীয় এক পল্লী চিকিৎসক কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে রায়পুরা উপজেলার হাইরমারা ইউনিয়নের মনিপুরা ঘাটে আসেন ৪২ কিলোমিটার নদী সাঁতরে। সেখান থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে বৃদ্ধ কৃষক শহিদুলও সিদ্ধান্ত নেন সাঁতরে মেঘনা পাড়ি দেওয়ার। তবে তার গন্তব্য, রায়পুরার মনিপুরা ঘাট থেকে নরসিংদী সদরের থানার ঘাটের ১৫ কিলোমিটার দূরত্ব। এরপর থেকেই এলাকায় হৈ হৈ রব ওঠে। গ্রামবাসী ঘোষণা দেন, এ মেঘনা পাড় হতে পারলে তাকে দেড় লক্ষাধিক টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। শহিদুলও সেই প্রস্তাবে রাজি হয়ে ঘোষণা দেন, পুরস্কারের টাকা তিনি বাড়ির পাশের নির্মাণাধীন মসজিদে দান করবেন। এরপর সোমবার সকাল ৮টার দিকে রায়পুরা উপজেলার হাইরমারা ইউনিয়নের মনিপুরা বাজারের ঘাট থেকে তিনি সাঁতার শুরু করেন। টানা চার ঘণ্টা উত্তাল মেঘনার ঢেউয়ের সঙ্গে যুদ্ধ করে দুপুর ১২টার দিকে পৌঁছান নরসিংদী সদরের থানার ঘাট এলাকায়। পরে গ্রামবাসী ও সেখানকার স্থানীয়রা তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।
কাউসার আহমেদ নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, এ বয়সেও টানা চার ঘণ্টা সাঁতার কাটা চাট্টিখানি কথা নয়। সাঁতার শুরুর সময় থেকে শেষ অব্দি নৌকায় করে আমি সঙ্গেই ছিলাম। তার উচ্ছ্বাস দেখে মনে হয়নি যে তিনি পারবেন না, নৌকায় উঠে যাবেন। ১৫ কিলোমিটার সাঁতরে গন্তব্যে এসেও বলতেছেন, আরও সাঁতরাতে পারবো। বৃদ্ধ কৃষক শহিদুল ইসলাম শহিদ বলেন, আমার ইচ্ছা ছিল, আমি মেঘনা পাড়ি দেবো। সেটা করতে পেরে ভালো লাগছে। কোনো সমস্যা হলে উদ্ধারের জন্য সঙ্গে নৌকা ছিল। তবে আমার কোনো সমস্যা হয়নি। আরও সাঁতরাতে পারতাম মনে হচ্ছে। এ সাঁতারে আমাকে দেড় লক্ষাধিক টাকা পুরস্কার দেওয়ার কথা রয়েছে। ওই টাকা পেলে আমি মসজিদে দান করব।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ব্যতীত ব্যবহার বেআইনি ।
2023 DailyNews24BD.com