ঢাকাসোমবার , ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • অন্যান্য
  1. অর্থনীতি
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. জীবনধারা
  6. বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
  7. বিনোদন ভুবন
  8. বিবিধ
  9. ভিডিও নিউজ
  10. রাজধানী
  11. রাজনীতি
  12. শিক্ষা
  13. সর্বশেষ
  14. সারাবাংলা
  15. স্বাস্থ্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

১২ সেপ্টেম্বর ক্লাসে ফিরছে শিক্ষার্থীরা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | ডেইলিনিউজ২৪বিডি.কম
সেপ্টেম্বর ৪, ২০২১ ২:৪০ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

আগামী ১২ সেপ্টেম্বর প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বন্ধ দ্বার খুলে দেওয়া হবে। শুক্রবার চাঁদপুরে একটি স্কুলের অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ব্যাপারে ইতোমধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে ইতিবাচক সুপারিশ করেছে করোনা সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।

ওই সুপারিশের আলোকেই আগামীকাল আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভা হওয়ার কথা রয়েছে। সেখান থেকেই মূলত এ ব্যাপারে চূড়ান্ত ঘোষণা আসবে। আর এর মধ্য দিয়েই প্রায় দেড় বছরের মাথায় সচল হবে দেশের স্কুল, কলেজ, কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মাদ্রাসা।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরাসরি পাঠদান বন্ধ আছে। আর সর্বশেষ ঘোষণায় বাড়ানো ছুটি শেষ হবে আগামী ১১ সেপ্টেম্বর।

এদিকে আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই আগামী নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে এসএসসি এবং ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে। শিক্ষামন্ত্রী ইতোপূর্বে একাধিকবার এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করেই শ্রেণি ও শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে হবে। পাশাপাশি যেসব শিক্ষক-কর্মচারী টিকা নিতে পারেননি তাদের টিকা দেওয়ার কাজটিও শেষ করতে হবে। খোলার ক্ষেত্রে পরামর্শক কমিটি এই দুটি শর্ত দিয়েছে বলে জানা গেছে।

চাঁদুপরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় চালু প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘গত সভায় ছুটি ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়েছিলাম। এখন আশা করছি, ১২ সেপ্টেম্বর থেকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আমরা খুলে দিতে পারব। দুই মন্ত্রণালয় মিলে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ব্যাপারে আমরা আবারও বসব। সাধারণত এসব প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট সিন্ডিকেট এবং একাডেমিক কাউন্সিল নেয়। আমরা উপাচার্যদের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তারা সব শিক্ষার্থীর অন্তত প্রথম ডোজ টিকা নেওয়ার পর খুলে দিতে চেয়েছিলেন। সেই অনুযায়ীই আমরা অক্টোবরের মাঝামাঝি খোলার তারিখ নির্ধারণ করেছিলাম। এখন ওনাদের সঙ্গে আবার কথা বলব। এর আগে (মধ্য অক্টোবর) তারা চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে পারবেন।’

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ব্যাপারে গত ২৬ আগস্ট আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত ওই সভায় করোনা সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা যুক্ত হয়েছিলেন। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি তার কাছে সংক্রমণ ৫ শতাংশের ওপরে কিন্তু ১০ শতাংশের নিচে থাকা অবস্থায়ই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ব্যাপারে মতামত চান।

কিন্তু তিনি (ডা. সহিদুল্লা) কমিটির সভা ছাড়া মতামত দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তার পরামর্শে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক পরামর্শ চাওয়া হয়। মন্ত্রণালয়ের চিঠি পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতে উল্লিখিত কমিটি বৈঠক করে। সেখানে এ ব্যাপারে ইতিবাচক মতামত দেওয়া হয়। এরপরই শুক্রবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন শিক্ষামন্ত্রী।

সংশ্লিষ্টরা জানান, মূলত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পটভূমি তৈরি হয়েছিল গত ১৮ আগস্ট। ওইদিন অনুষ্ঠিত সচিব সভায় যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে এ ক্ষেত্রে তিনি দুটি দিক গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় রাখার পরামর্শ দেন।

একটি হচ্ছে, করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি, আরেকটি টিকা দেওয়ার বিষয়। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, খুব তাড়াতাড়ি স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার জন্য তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। সে অনুযায়ী ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে বলে তিনি সংসদকে অবহিত করেন।

পরামর্শক কমিটির সভা : শর্তসাপেক্ষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার মতো দিয়েছে করোনাসংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর এই কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়।

শুক্রবার আলাপকালে কমিটির প্রধান অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা যুগান্তরকে বলেন, প্রধান দুই শর্তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া সংক্রান্ত সরকারি সিদ্ধান্তের সঙ্গে সম্মতি দিয়েছে কমিটি। একটি হচ্ছে, জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিধিনিষেধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যথাযথভাবে প্রতিপালন করতে হবে, আরেকটি হচ্ছে শিক্ষক-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্টদের টিকা দেওয়ার কাজটি শেষ করতে হবে।

তিনি জানান, এই মতামত দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা যেসব দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে, সেখানকার খোলা-পরবর্তী পরিস্থিতি এবং খুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে করণীয় দিকগুলো বিবেচনায় নিয়েছি। পাশাপাশি টিকা দেওয়া এবং করোনা সংক্রমণের বর্তমান হার পর্যালোচনায় নেওয়া হয়েছে। একটা সময়ে আমাদের দেশে করোনা সংক্রমণ ৩২-৩৩ শতাংশ ছিল। এখন তা ১০-১১ শতাংশে নেমেছে। অর্থাৎ সর্বোচ্চ শনাক্ত থেকে সংক্রমণের হার ৭০ শতাংশ কমেছে। শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্য থেকে ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ টিকা পেয়েছেন। এখন এই দুই ক্ষেত্রে বিশেষ করে বাকিদের টিকা দেওয়ার কাজটি শেষ করতে হবে। আর খুলে দেওয়ার জন্য কী কী নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে সে ব্যাপারে একটি গাইডলাইন আমরা আজকেই (শুক্রবার) শিক্ষার দুই মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। খুলে দেওয়ার পর জনস্বাস্থ্যবিষয়ক ওইসব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করছে কিনা তা তদারকি করতে হবে।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার সম্ভাব্য রোগীর মধ্যে পরীক্ষার তুলনায় দেশে সংক্রমণের হার পাওয়া গেছে ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার ব্যাপারে ছাত্রছাত্রীরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক চাপও আছে। সর্বশেষ গত ২৪ আগস্ট জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

তাতে বলেছে, করোনার কারণে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ রাখার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয়। এ দীর্ঘ বন্ধের কারণে প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা স্তর পর্যন্ত চার কোটি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অবশ্য বাংলাদেশে মোট শিক্ষার্থী ৩ কোটি ৬০ লাখ বলে ব্যানবেইসের সর্বশেষ সমীক্ষায় উঠে এসেছে।