ঢাকা: সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী বছরের শেষের দিকে রাজধানীর কাওলা থেকে তেজগাঁও রেল স্টেশন পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। এক্সপ্রেসের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে।
তিনি বলেন, ২০২২ সালের ডিসেম্বর ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বিমানবন্দরের দক্ষিণ কাওলা থেকে তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। এটি চালু হলে ঢাকা শহরের যানজট অনেকাংশে কমবে। পাশাপাশি এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে জিডিপিতে।
রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বনানী এলাকায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ পরিদর্শনে এসে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। এসময় সার্বিক কাজের অগ্রগতি ৩০ দশমিক ৫ ভাগ হয়েছে বলেও জানান তিনি। আর কাওলা থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত অংশে শেষ হয়েছে ৬০ ভাগ কাজ।
সেতুমন্ত্রী বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। করোনার কারণে সেতুর কাজ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তারপরও মূল প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি ভালো হওয়ায় ২০২২ সালের মধ্যে কাওলা থেকে মগবাজার পর্যন্ত অংশের কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ অংশের কাজ শেষ হলেই বছরের শেষ নাগাদ কাওলা থেকে তেজগাঁও রেল স্টেশন পর্যন্ত এক্সপ্রেস ওয়ে চালু হবে।
তিনি বলেন, পুরো প্রকল্পটি চালু হলে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন ঘটবে। দীর্ঘপথ অল্প সময়ের মধ্যেই যাতায়াত করা যাবে। পথে কারো অযথা সময় নষ্ট হবে না।
রাজধানীর শাহজাহানপুরে এলাকায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে তিনটি পিলার নির্মাণ নিয়ে জটিলতা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রকল্পের কোথাও কোনো জটিলতা থাকলে তা সবার সমন্বয়ের মাধ্যমে বসে সমাধান করা হবে। নকশায় জটিলতা থাকলে তার সমাধান করেই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ এগিয়ে যাবে।
প্রকল্পের তৃতীয় ধাপে মগবাজার রেললাইন থেকে কুতুবখালী যাওয়ার পথে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের পূর্বদিকে জায়গা নিয়ে রেলওয়ের ‘ঢাকা-টঙ্গী রেলপথে তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়েল গেজ লাইন নির্মাণ’ প্রকল্পের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়ে পড়েছে ঢাকা এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পটি। নকশা অনুযায়ী এক্সপ্রেসওয়ের একটি পিলারের জন্য জায়গা পাওয়া নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
নকশা অনুযায়ী শাজাহানপুর ফুট ওভার ব্রিজের কাছে এক্সপ্রেসওয়ের পিলারের জন্য যে জায়গা ছিল, সেখানে রেলওয়ে প্রকল্পের দু’টি রেল ট্র্যাক স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে রেলওয়ে সঙ্গে সমন্বয় করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে বলেও এসময় জানান সেতুমন্ত্রী।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ মেট্রোরেল ও অন্যান্য প্রকল্পের কাজের ফলে সাধারণ জনগণের অসুবিধা চরম পর্যায়ে রয়েছে-এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, একটি কাজ করতে গেলে একটু জনদুর্ভোগ হবেই। তবে চলমান প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হলে সড়কে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ একেবারেই থাকবে না।
সেতুমন্ত্রীর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বনানী এলাকার নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করার সময় সেতু মন্ত্রণালয় ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের অন্যান্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। তারা মন্ত্রীকে প্রকল্পের কাজের অগ্রগতির বিষয়ে অবহিত করেন।
এর আগে ২০১৭ সালে গৃহীত হয় এ প্রকল্পটি। ২০২২ সালের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার সময় নির্ধারিত থাকলেও ভূমি অধিগ্রহণসহ বিভিন্ন জটিলতার কারণে অগ্রগতি পিছিয়ে পড়ে। এখন ২০২২ সালের মধ্যে কাওলা থেকে তেজগাঁও রেলস্টেশন হয়ে মগবাজার পর্যন্ত কাজ এগিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।