যুক্তরাষ্ট্র ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের জন্য ফাইজারের কোভিড টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার দেশটির ওষুধ নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ এ অনুমোদন দেয়। এর মধ্য দিয়ে দেশটিতে এই বয়সী ২ কোটি ৮০ লাখ শিশুর শিগগির টিকা নেওয়ার পথ তৈরি হলো।
বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের একটি মেডিকেল প্যানেল শিশুদের টিকা দেওয়ার ব্যাপারে সবুজ সংকেত দেয়।
প্যানেলের পক্ষ থেকে বলা হয়, শিশুদের টিকা দেওয়ায় যেসব ঝুঁকি তৈরি হতে পারে, তার চেয়ে উপকারিতা বেশি এবং এর প্রমাণও পাওয়া গেছে। এরপর শিশুদের ক্ষেত্রে ব্যবহারের টিকার অনুমোদন দেওয়া হলো।
চীন, চিলি, কিউবা, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ অল্প কয়েকটি দেশ শিশুদের জন্য কোভিড টিকার অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের আগেই । শিশুদের বেশ কয়েকটি কোভিড টিকা দেওয়া হচ্ছে এসব দেশে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) ভারপ্রাপ্ত প্রধান জেনেট উডকক এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘একজন মা ও চিকিৎসক হিসেবে আমি জানি, অনেক মা–বাবা, স্কুলের কর্মী ও শিশুরা আজকের এ অনুমোদনের অপেক্ষায় ছিল।’
জেনেট উডককের আশা, ‘ছোট বাচ্চাদের করোনার টিকা দেওয়ার মাধ্যমে অনেকেই স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ফেরার কাছাকাছি চলে আসব।’
কবে নাগাদ শিশুদের টিকা দেওয়া শুরু হবে, সে সম্পর্কে অবশ্য কিছু জানানো হয়নি। বার্তা সংস্থা এফপি জানায়, শিশুদের টিকা দেওয়ার সুপারিশ নিয়ে আরও আলোচনা করতে যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) একটি প্যানেল আগামী মঙ্গলবার বৈঠকে বসবে। এরপর যত দ্রুত সম্ভব টিকা দেওয়া শুরু হবে।
ফাইজার ও তাদের অংশীদার বায়োএনটেক চলতি সপ্তাহে জানায়, যুক্তরাষ্ট্র সরকার তাদের কাছ থেকে আরও পাঁচ কোটি ডোজ টিকা কিনেছে। তখন কোম্পানি দুটির পক্ষ থেকে বলা হয়, শিশুদের টিকা দেওয়া নিয়ে কাজ করছে মার্কিন সরকার। এ জন্যই এসব টিকা কিনেছে। এর মধ্যে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুরাও রয়েছে।
করোনার উপসর্গ আছে, এমন ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী দুই হাজারের অধিক শিশুকে নিয়ে একটি পরীক্ষামূলক প্রয়োগে দেখা গেছে, ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা ৯০ শতাংশের বেশি কার্যকর। তাতে এসব শিশুর শরীরে ৯০ দশমিক ৭ শতাংশ করোনাপ্রতিরোধী অ্যান্টিবডির অস্তিত্ব পাওয়ার কথা জানানো হয়।
এ ছাড়া টিকার সুরক্ষা নিয়ে তিন হাজারের বেশি শিশুকে অন্তর্ভুক্ত করে আরও একটি গবেষণা চালাচ্ছে ফাইজার-বায়াএনটেক। ওই গবেষণায় শিশুদের শরীরে তেমন কোনো গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি বলে তারা জানিয়েছে।