এ বছর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত তানজানিয়ার সাহিত্যিক আব্দুলরাজাক গুর্নাহর নাম ছড়াচ্ছে বিশ্বব্যাপী। ‘প্যারাডাইস’ নামে উপন্যাসের জন্য তিনি এ সম্মাননা পেলেন। কে এই ঔপন্যাসিক, তা নিয়েই আগ্রহ এখন বিশ্ব সাহিত্যাঙ্গনে।
পূর্ব আফ্রিকার দ্বীপ জাঞ্জিবারে ১৯৪৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন আব্দুলরাজাক গুর্নাহ। তানজানিয়ায় বেড়ে উঠলেও ১৯৬৮ সালে তিনি যুক্তরাজ্যে চলে যান শরণার্থী হিসেবে। সেখানে শিক্ষার্থী হিসেবে পড়াশোনা চালিয়ে যান এবং পরে ইউনিভার্সিটি অব কেন্টে অধ্যাপনায় যোগ দেন। অবসরও নিয়েছেন ইতোমধ্যে।
তিনি ওয়াসাফিরি নামের একটি জার্নালে সহযোগী সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন। এখন যুক্তরাজ্যের ইস্ট সাসেক্সে বসবাস করছেন এই সাহিত্যিক।
আব্দুলরাজাকের সবশেষ উপন্যাস ডিসার্শন (২০০৫)। এটির জন্য ২০০৬ সালে কমনওয়েলথ সাহিত্য পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন এবং পরে দ্য লাস্ট গিফটের (২০১১) জন্যও পুরস্কৃত হন তিনি।
আব্দুলরাজাকের প্রথম তিনটি উপন্যাস হচ্ছে মেমোরি অব ডিপার্চার ( ১৯৮৭), পিলগ্রিমস ওয়ে (১৯৮৮) এবং দোতেই ( ১৯৯০)। এই তিনটি উপন্যাসে বর্ণিত হয়েছে শরণার্থীবিষয়ক অভিজ্ঞতা ও অন্যান্য ইস্যু।
তার চতুর্থ উপন্যাস প্যারাডাইস (১৯৯৪), যেটি রচনা করা হয়েছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ঔপনিবেশিক পূর্ব আফ্রিকাকে ঘিরে। এটি বুকার প্রাইজের জন্য মনোনীত হয়েছিল। অবশেষে সেই উপন্যাসই তাকে ২০২১ সালের নোবেল পুরস্কার এনে দিলো।
১৯৯৬ সালে তার অ্যাডমিরিং সাইলেন্স উপন্যাসে উঠে আসে এক তরুণের জাঞ্জিবার ত্যাগ করে ইংল্যান্ডে প্রবেশ এবং বিয়ে ও শিক্ষক হওয়ার গল্প। ২০ বছর পর নিজ দেশে ফিরে বিয়ে এবং জীবনবোধের গল্প নিয়ে তিনি লেখেন বাই দ্য সি (২০০১), যেটি সালেহ ওমর নামে এক আশ্রয়হীন বালকের কথা, যে সমুদ্রের পাশের এক শহরে বাস করে।
ঔপনিবেশবাদ, দাসত্বের বেড়াজালে আত্মপরিচয় এবং স্থানান্তরের বিষয়গুলো ঠাঁই পেয়েছে আব্দুলরাজাকের সাহিত্যকর্মে। শরণার্থীদের জীবন কীভাবে বদলে যায়, নতুন জীবনের সঙ্গে কীভাবে খাপ খায়, ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান কীভাবে প্রভাবিত করে জীবনকে, এসব প্রাধান্য পেয়েছে তার লেখায়। ১৭ বছর বয়সে জন্মভূমি ছাড়া আব্দুলরাজাক সব সময় শরণার্থীদের দুঃখ-দুদর্শা চিত্রায়িত করতে প্রয়াসী হয়েছেন তার সাহিত্যপটে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ব্যতীত ব্যবহার বেআইনি ।
2023 DailyNews24BD.com