বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ অসংক্রামক রোগ স্ট্রোক। এর সুচিকিৎসা এখন বাংলাদেশেই হচ্ছে। নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনে এর ঝুঁকি কমে।
স্ট্রোক একটি অসংক্রামক রোগ; যা প্রতিরোধযোগ্য এবং চিকিৎসাযোগ্য। তবে লক্ষণ দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। তাহলে রোগীর মৃত্যুঝুঁকি কমে যায় বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলেছেন, স্ট্রোক প্রতিরোধ করতে হলে নিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন করতে হবে।
গতকাল রোববার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর কার্যালয়ে এক গোলটেবিল আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা এ কথা বলেন।
২৯ অক্টোবর বিশ্ব স্ট্রোক দিবস। এই দিবস সামনে রেখে গতকাল ‘বিশ্ব স্ট্রোক দিবস: প্রতিটি মুহূর্ত মূল্যবান’ শিরোনামে এই গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে সোসাইটি অব নিউরোলজিস্টস অব বাংলাদেশ ও প্রথম আলো। এর সায়েন্টিফিক পার্টনার ছিল এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড।
আলোচনায় সোসাইটি অব নিউরোলজিস্টস অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ফিরোজ আহম্মদ কোরাইশি বলেন, স্ট্রোক প্রতিরোধযোগ্য ও চিকিৎসাযোগ্য অসুখ। এই বার্তা মানুষের কাছের পৌঁছাতে হবে। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, রক্তে চর্বি বেশি, হৃদ্রোগ ও ধূমপানে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি। নিয়ন্ত্রিত জীবযাপন, কায়িক শ্রম এবং খাদ্যাভ্যাস সঠিক থাকলে ঝুঁকিমুক্ত থাকা সম্ভব।
স্ট্রোকের আধুনিক চিকিৎসা দেশে আছে উল্লেখ করে অধ্যাপক ফিরোজ বলেন, শরীরের ভারসাম্য রাখতে সমস্যা হলে, কথা জড়িয়ে যাওয়া, হঠাৎ করে চোখে কম দেখা, মাথা ঘোরানো, একদিক অবশ হয়ে যাওয়া—এ রকম কোনো লক্ষণ থাকলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। দ্রুত শনাক্ত করতে পারলে রোগীর ঝুঁকি কমে আসে। তিনি বলেন, রোগটি প্রতিরোধে নজর দিতে হবে। স্ট্রোক হয়ে গেলে প্রাথমিকভাবে কী চিকিৎসা হবে এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে কীভাবে চিকিৎসা দেওয়া যায়, সেটা নিয়ে কাজ করতে হবে। উপজেলা পর্যায়ের একজন রোগী ঢাকায় না এসে যেন শহরের একজন বিশেষজ্ঞ দেখাতে পারে, সে ব্যবস্থা করতে হবে।
সোসাইটি অব নিউরোলজিস্টস অব বাংলাদেশের মহাসচিব ও বিএসএমএমইউয়ের নিউরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু নাসার রিজভি বলেন, স্ট্রোক হয়ে গেলে একটি পরিবারকে ভুগতে হয়। তাই এই রোগটিকে প্রাথমিক অবস্থাতেই শনাক্ত করে চিকিৎসা শুরু করতে হবে। তিনি দেশে যে স্ট্রোকের আধুনিক চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে, সে বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করার ওপর গুরুত্ব দেন।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের ইন্টারভেনশনাল নিউরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক কাজী মহিবুর রহমান বলেন, তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টার মধ্যে যদি রোগীকে থ্রম্বোলাইটিক থেরাপি দেওয়া যায়, তাহলে রোগীর মৃত্যুঝুঁকি অনেক কমে আসে। দেশে এই থেরাপিসহ সব ধরনের চিকিৎসা দেওয়া হয়।
প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের মধ্যে এই চিকিৎসাসুবিধা এখনো অপ্রতুল, তবে মুজিব বর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালের ১০০ শয্যার একটি অত্যাধুনিক স্ট্রোক ইউনিট স্থাপন করেছে। যাতে প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তে স্ট্রোকের রোগীদের জন্য আইভি থ্রম্বোলাইসিসের ব্যবস্থা রয়েছে। দেশের আটটি বিভাগীয় শহরে বিশেষায়িত ইউনিটে থ্রম্বোলাইসিস পদ্ধতি শুরু করার বিষয়ে পরিকল্পনা চলছে বলে জানান ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল নিউরোলজি অধ্যাপক এম এস জহিরুল হক চৌধুরী।
নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, স্ট্রোক হঠাৎ করেই ঘটে যায়। তাই এর চিকিৎসাও সঙ্গে সঙ্গে দিতে হবে। স্ট্রোকের লক্ষণ দেখা দিলে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে এবং প্রথমে মাথার সিটি স্ক্যান করতে হবে। তাহলে ধরা পড়বে এটি কোন ধরনের স্ট্রোক।
আলোচনায় সোসাইটি অব নিউরোলজিস্টস অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ফিরোজ আহম্মদ কোরাইশি বলেন, স্ট্রোক প্রতিরোধযোগ্য
ও চিকিৎসাযোগ্য অসুখ। এই বার্তা মানুষের কাছের পৌঁছাতে হবে। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, রক্তে চর্বি বেশি, হৃদ্রোগ ও ধূমপানে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি। নিয়ন্ত্রিত জীবযাপন, কায়িক শ্রম এবং খাদ্যাভ্যাস সঠিক থাকলে ঝুঁকিমুক্ত থাকা সম্ভব।
স্ট্রোকের আধুনিক চিকিৎসা দেশে আছে উল্লেখ করে অধ্যাপক ফিরোজ বলেন, শরীরের ভারসাম্য রাখতে সমস্যা হলে, কথা জড়িয়ে যাওয়া, হঠাৎ করে চোখে কম দেখা, মাথা ঘোরানো, একদিক অবশ হয়ে যাওয়া—এ রকম কোনো লক্ষণ থাকলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। দ্রুত শনাক্ত করতে পারলে রোগীর ঝুঁকি কমে আসে। তিনি বলেন, রোগটি প্রতিরোধে নজর দিতে হবে। স্ট্রোক হয়ে গেলে প্রাথমিকভাবে কী চিকিৎসা হবে এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে কীভাবে চিকিৎসা দেওয়া যায়, সেটা নিয়ে কাজ করতে হবে। উপজেলা পর্যায়ের একজন রোগী ঢাকায় না এসে যেন শহরের একজন বিশেষজ্ঞ দেখাতে পারে, সে ব্যবস্থা করতে হবে।
সোসাইটি অব নিউরোলজিস্টস অব বাংলাদেশের মহাসচিব ও বিএসএমএমইউয়ের নিউরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু নাসার রিজভি বলেন, স্ট্রোক হয়ে গেলে একটি পরিবারকে ভুগতে হয়। তাই এই রোগটিকে প্রাথমিক অবস্থাতেই শনাক্ত করে চিকিৎসা শুরু করতে হবে। তিনি দেশে যে স্ট্রোকের আধুনিক চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে, সে বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করার ওপর গুরুত্ব দেন।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের ইন্টারভেনশনাল নিউরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক কাজী মহিবুর রহমান বলেন, তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টার মধ্যে যদি রোগীকে থ্রম্বোলাইটিক থেরাপি দেওয়া যায়, তাহলে রোগীর মৃত্যুঝুঁকি অনেক কমে আসে। দেশে এই থেরাপিসহ সব ধরনের চিকিৎসা দেওয়া হয়।
প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের মধ্যে এই চিকিৎসাসুবিধা এখনো অপ্রতুল, তবে মুজিব বর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালের ১০০ শয্যার একটি অত্যাধুনিক স্ট্রোক ইউনিট স্থাপন করেছে। যাতে প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তে স্ট্রোকের রোগীদের জন্য আইভি থ্রম্বোলাইসিসের ব্যবস্থা রয়েছে। দেশের আটটি বিভাগীয় শহরে বিশেষায়িত ইউনিটে থ্রম্বোলাইসিস পদ্ধতি শুরু করার বিষয়ে পরিকল্পনা চলছে বলে জানান ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল নিউরোলজি অধ্যাপক এম এস জহিরুল হক চৌধুরী।
নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, স্ট্রোক হঠাৎ করেই ঘটে যায়। তাই এর চিকিৎসাও সঙ্গে সঙ্গে দিতে হবে। স্ট্রোকের লক্ষণ দেখা দিলে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে এবং প্রথমে মাথার সিটি স্ক্যান করতে হবে। তাহলে ধরা পড়বে এটি কোন ধরনের স্ট্রোক।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নিউরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. শহীদুল্লাহ বলেন, স্ট্রোকের রোগীর জন্য হাতে সময় থাকে সাড়ে চার ঘণ্টা। এক মিনিটে ২০ লাখ নিউরো সেল মারা যায়। দ্রুত চিকিৎসা পেলে রোগীর ঝুঁকি কমে যায়। এ ছাড়া স্ট্রোক যেকোনো বয়সে হতে পারে। তিনি শিশুদের জাঙ্ক ফুড খাওয়ানোর প্রবণতা কমাতে বলেন।
নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবু নাঈম বলেন, রক্তনালি বন্ধ হয়ে বা রক্তনালি ফেটে গিয়েও স্ট্রোক হতে পারে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্ট্রোকের ঝুঁকিও বাড়ে। বয়স ৪০–এর পর থেকেই ঝুঁকি বাড়তে থাকে। নারীর চেয়ে পুরুষের ঝুঁকি বেশি। এটা বংশগত কারণেও হতে পারে। এ ছাড়া অনিয়ন্ত্রিত জীবযাপনের কারণেও হতে পারে।
স্ট্রোকের বৈশ্বিক ও দেশের পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেন নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ সেলিম শাহী। তিনি বলেন, বিশ্বে যেসব অসংক্রামক ব্যাধি আছে, তার মধ্যে হৃদ্রোগের পরেই স্ট্রোকের অবস্থান। এ ছাড়া পঙ্গুত্ব বা শারীরিক অক্ষমতার জন্য স্ট্রোক বেশি দায়ী। বিশ্বে বছরে দেড় কোটি মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে মারা যান ৫০ লাখ। একই সংখ্যক মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করেন। প্রতি ছয়জন সুস্থ ব্যক্তির মধ্যে একজন স্ট্রোকের ঝুঁকিতে আছেন। উন্নত বিশ্বের চেয়ে নিম্ন আয়ের দেশে ঝুঁকি বেশি।
দেশে ২০১৭ সালের গবেষণা অনুযায়ী, প্রতি ১ হাজার মানুষের মধ্যে ১১ দশমিক ৩৯ জন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছে। যারা আক্রান্ত, তাদের বেশির ভাগই উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত।
বারডেম জেনারেল হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক রুমানা হাবিব বলেন, বাংলাদেশের প্রায় ১০ শতাংশ মানুষ ডায়াবেটিসের আক্রান্ত। আর ডায়াবেটিসের রোগীদের স্ট্রোকের ঝুঁকি দেড় থেকে দুই গুণ বেশি। তাই ডায়াবেটিসের রোগীদের নিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন করতে হবে। তাহলে ঝুঁকি কমে আসবে।
এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (সেলস) গোলাম হায়দার সবাইকে ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, স্ট্রোক চিকিৎসায় বাংলাদেশের অবস্থান এখন সুদৃঢ়। এই অগ্রযাত্রায় এসকেএফ সঙ্গেই থাকবে।
গোলটেবিল আলোচনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম এবং সঞ্চালনা করেন প্রথম আলোর সহকারী সম্পাদক ফিরোজ চৌধুরী।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ব্যতীত ব্যবহার বেআইনি ।
2023 DailyNews24BD.com