টাকা দিলে বাঁকা পথে মিলছে জন্মনিবন্ধন সনদ। কিন্তু সোজা পথে ভোগান্তির যেন শেষ নেই। রয়েছে দীর্ঘ বিলম্বের যন্ত্রণা। ভুক্তভোগীদের এসব অভিযোগ প্রতিদিনের। সরেজমিনে যাচাইয়ের চেষ্টা করে দেখা যায়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক অফিস ঘুরে সনদ আবেদনের সাথে বাড়তি টাকা নেয়ার ঘটনাও ধরা পড়ে ।
বছরের শেষ দিকে বাড়ে জন্মনিবন্ধন সনদ তোলার চাপ। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এর নির্দেশে (ব্যানবেইস) এর আওতায় শিক্ষার্থী তথ্য সংগ্রহ, স্কুল শিক্ষার্থীদের করোনা ভ্যাকসিন দেয়ার ঘোষণায় এই চাপ বেড়েছে আরও কয়েকগুণ।
তবে নিবন্ধন প্রার্থীদের অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। এ নিয়ে প্রশ্ন করলে দায়িত্বরত ব্যক্তি প্রথমে অস্বীকার করেন। পরে টাকা দেয়া নিবন্ধনপ্রার্থীরা সবাই প্রতিবাদ করলে এক পর্যায়ে বেসরকারি একটি টিভির ক্যামেরার সামনে সরি বলেন তিনি।
সোজা পথে বাড়তি টাকা দিয়েও স্বস্তি নেই। আর সামান্য ত্রুটি থাকলে বিপত্তি বাড়বে কয়েকগুণ। এই অফিস সেই অফিস করে জুতা ক্ষয়েও সংশোধন হয় না। সমাধানের ভিন্ন পথ পাওয়া গেলো খিলগাঁও কার্যালয়ে। সাংবাদিক পরিচয় গোপন করে তথ্য চাইলে বাঁকা পথের প্রস্তাব দেন আনসার সদস্য। বলেন, সংশোধনে সমস্যা হলে নতুন জন্মনিবন্ধন করে দেবেন তিনি। কেবল বাবা মায়ের এনআইডি হলেই চলবে। চুক্তিতে সংশোধন করতে লাগবে ৫ হাজার ও সাধারণ জন্ম নিবন্ধন ৮শ থেকে ২ হাজার টাকা। আরও আলোচনার জন্য ফোন করতে বলেন রাতে। রাতে ফোন করলে ওই আনসার সদস্য বলেন, দ্রুত নিবন্ধন পেতে হাজার থেকে ১৫শ টাকা লাগবে। বয়সের প্রমাণপত্র না থাকলেও ‘সিস্টেম করে’ সব ব্যবস্থাই করা যাবে বলে জানালেন তিনি।
তবে পরদিন সাংবাদিক পরিচয় দিলে পাল্টে যায় সুর। বললেন, টাকা দিয়ে দ্রুত নিবন্ধন পাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। আর আনসার সদস্যদের এসব ব্যাপারে কোনো এখতিয়ার নেই, তাদের কাজ ফটকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
মাঠ কর্মচারীদের এমন অনিয়মের বিষয়ে জানেন না খিলগাঁওয়ের আঞ্চলিক কর্মকর্তা সুয়ে মেন জো। অনিয়ম বন্ধ ও দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার আশ্বাস দিলেন তিনি। বললেন, এসব কারা করছে, আর অনিয়মগুলো কীভাবে হচ্ছে তা তদন্ত করতে হবে।
জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের রেজিস্ট্রার জেনারেল মুস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকী জানালেন, এরই মধ্যে জন্মনিবন্ধিত জনসংখ্য ১৮ কোটির বেশি, যা আদম শুমারির তুলনায় অনেক বেশি। আর এই সংখ্যা পুরো ব্যবস্থাপনার ওপরই প্রভাব ফেলে। বিভিন্নভাবে বেশকিছু জন্মনিবন্ধন হয়েছে বলে স্বীকার করেন তিনি। বলেন, তবে এই সমস্যা সমাধানের কাজ চলছে। রাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই দলিলের স্বচ্ছতা ও নজরদারি আরও বাড়ানোর পরামর্শ সংশ্লিষ্টদের।
তথ্যসূত্রঃ যমুনা নিউজ ।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ব্যতীত ব্যবহার বেআইনি ।
2023 DailyNews24BD.com