ইসলামের পাঁচটি ফরজ এর মধ্যে রমজান বা রোজা বা সিয়াম হচ্ছে তিন নম্বর ফরয। রোজা রাখা প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরজ করা হয়েছে। যা প্রত্যেক মুসলমানকে পালন করতে হয়। মূলত হিজরি সনের “রমজান” মাস অনুসারে রমজান বা রোজা পালন করা হয়। প্রত্যেক মুসলমান এই মাসের জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। রমজান মাসের ইবাদত সমূহ সর্বোচ্চ এবাদাত হিসেবে গণ্য করা হয়। এ মাসের সকল ছোট-বড় ভালো কাজগুলো সওয়াব বেশি বেশি দেয়া হয় এবং এই মাসে অতিরিক্ত এবাদত পালন করার সুযোগ থাকে।
রোজা কি?
মুসলমান জাতির জন্য রোজা কথাটি খুবই ও সম্মানজনক একটি শব্দ। সুবেহ সাদিক থেকে সূর্যাস্ত যাওয়া পর্যন্ত কোনো রকম পানাহার পাপাচার মিথ্যাচার এবং যাবতীয় ভোগবিলাস থেকে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করার নাম হল রোজা। রোজাকে প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানের উপর ফরয করা হয়েছে।
ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই মুসলিমরা রোজা রাখার নিয়ত মুখস্ত করে আসছেন কিন্তু এখনও অনেকেই নিয়ত পড়তে ভুল করেন। আসুন সঠিক উচ্চারণ টি আজ অর্থসহ জেনে নেই।
নিঃসন্দেহে আমরা অনেক কষ্ট করে রোজা রাখেনি কিন্তু এই রোজাটি যদি কিছু কারণবশত না হয় তখন আমাদের কেমন বোধ হবে? আজ আমি আপনাদের সাথে রোযা ভঙ্গের কারণ গুলো শেয়ার করবো।
রোজা ভঙ্গের সর্ব নিকৃষ্ট কারন হচ্ছে রোজা রেখে সহবাস করা। হাদিস এ বর্নিত আছে যে পুরুষ বা নারী রোজা রেখে ইচ্ছাকৃতভাবে সহবাস করবে এবং নারীর লজ্জাস্থানে পুরুষাঙ্গ পুরুপুরি ভাবে অদৃশ্য হয়ে যাবে সাথে সাথে ২ জন এর রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে।
রোজা রাখার পর আপনি কিছু পানাহার করতে পারবেন না কিন্তু ভুলবশত যদি আপনি কোন কিছু পানাহার করে ফেলেন তাহলে আল্লাহ আপনাকে মাফ করে দিবে আর আপনার রোজা ভঙ্গ হবে না । এছাড়া আপনি যদি রক্ত দেওয়া নেওয়া করেন এবং শরীরের ক্লান্তি দূর করার জন্য আপনি যদি স্যালাইন পুশ করেন তাহলে আপনার রোজা ভঙ্গ হবে।
রোজা রাখার জন্য আমাদের নির্দিষ্ট নিয়ত পড়া প্রয়োজন কিন্তু ভুলক্রমে যদি আমরা এর অর্থ বিকৃত করে ফেলে তাহলে রোজা না হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
রোজাদার কখনো তার নাক ও কান দিয়ে কোন ধরনের ওষুধ বা তেল প্রবেশ করাতে পারবে না। কারণ এইসব কাজ করলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়।
আপনি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করে থাকেন তাহলে সঙ্গে সঙ্গে আপনার রোজাটি ভঙ্গ হয়ে যাবে।
এই ছিল কিছু রোজা ভঙ্গের কারণ !
আসুন রোজা মাকরুহ হওয়ার বিশেষ কারণ গুলো জেনে নেই ।
রোজা মাকরুহ হওয়ার কারণসমূহঃ
মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম থেকে আমরা জেনেছি শবে বরাতের রোজার বিশেষ ফজিলত রয়েছে। শাবান মাসের ১৩, ১৪, ১৫ তারিখ এ মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম শবে বরাতের রোজা গুলো রাখতে বলেছেন। তিনি আরো বলেছেন তোমরা চাইলে একটি রোজা ও রাখতে পারো। একটি বিশেষ হাদিস থেকে জানা গিয়েছে হযরত উম্মে সালমা ও হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা বর্ণিত করেছেন প্রিয় নবী শাবান মাসটিতে সম্পূর্ণ মাস রোজা রাখতেন।
আমরা রোজার সকল বিষয় নিয়ে কথা বলছি তাই সেহরি ও ইফতারের নিয়ত আমাদের কিছু কথা বলা উচিত। সেহরি ও ইফতার করার আগে আমাদেরকে নির্দিষ্ট একটি দোয়া করতে হয় কিন্তু রোজার নিয়ত এর মত এটিতেও অনেকে ভুল করে থাকেন তাহলে আসুন সঠিকভাবে সঠিক উচ্চারণ এবং অর্থ জেনে নেই।
আশাকরি এখন আর আপনারা রোজার নিয়ত ও সাহরি-ইফতারের দোয়া পড়তে কোনরকম ভুল করবেন না। আরবিতে উচ্চারণ মনে না থাকলে আপনি বাংলায় পড়েও নিয়ত বা দোয়া করতে পারেন।
১: কত বছর বয়স থেকে রোজা রাখা ফরজ?
উওর: সাত বছর বয়স থেকে রোজা রাখা ফরজ এবং সাত বছরের পর থেকে যদি আপনি রোজা রাখেন তাহলে জেনে রাখুন আপনার জন্য সাজার ব্যবস্থা তৈরি হচ্ছে।
২: রোজা অবস্থায় আমি যদি সেক্সুয়াল অ্যাট্রেকশন ফিল করি তাহলে কি রোজা ভেঙে যাবে?
উওর: আপনি যদি নিজেকে সংযত রেখে অন্য দিকে মন নিয়ে যেতে পারেন তাহলে রোজা ভাঙবে না । কিন্তু যদি আপনার গোপন অঙ্গ দিয়ে কোন তরল পদার্থ বের হয়ে আসে তখন আপনার রোজা ভেঙে যাবে।
৩: রোজা থাকা অবস্থায় কি টিভি দেখা যাবে?
উওর: টিভি দেখা যাবে নাচ-গান ব্যতীত সবকিছুই দেখা যাবে। আমি সাজেস্ট করবো ইসলামিক চ্যানেল গুলো দেখার জন্য।
৪: ভুলবশত পানি খেলে কি রোজা ভেঙে যায়?
উওর: আপনি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে পানি পান করে থাকেন তাহলে নিশ্চিন্ত থাকুন আপনার রোজা ভাঙ্গে না।
৫: রোজা মাকরুহ হয়ে যাওয়া মানে কি রোজা ভেঙে যাওয়া?
উওর: না রোজা মাকরুহ হয়ে যাওয়া অর্থ রোজা হালকা হয়ে যাওয়া। ধরুন ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় আপনি ৩৩ পেয়েছেন যেখানে আপনার ১০০ তে ১০০ পাওয়ার সুযোগ ছিল।
শেষ কথা: আশা করি আজকের আর্টিকেল এর মাধ্যমে রোজা রাখার নিয়ত এবং রোজা ভঙ্গের কারণ গুলো সম্পর্কে আপনাদের যত ধরনের প্রশ্ন ছিল সব ধরনের প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গিয়েছেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ব্যতীত ব্যবহার বেআইনি ।
2023 DailyNews24BD.com