নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত শ্রীলঙ্কা !
চলমান বিক্ষোভের জেরে শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) এ সংক্রান্ত নতুন গেজেটের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জরুরি অবস্থার অধ্যাদেশটি ৫ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে প্রত্যাহার হচ্ছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
অর্থনৈতিক ও বৈদেশিক মুদ্রা সংকটের কারণে ভয়াবহ লোডশেডিং এবং আর্থিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভে নেমেছেন সাধারণ মানুষ, যা দ্রুত রূপ নেয় নিয়েছে সরকারবিরোধী আন্দোলনে। পরিস্থিতি সামাল দিতে গত ১ এপ্রিল জরুরি অবস্থা জারি করে শ্রীলঙ্কা সরকার।
গত রবিবার (৩ এপ্রিল) একযোগে পদত্যাগ করেন দেশটির ২৬ জন মন্ত্রী। এরপর রাজাপক্ষের জোট সরকার ছেড়ে বেরিয়ে গেছেন ৪১ জন পার্লামেন্ট সদস্য। তবে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে এবং তার ভাই প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে পদত্যাগ করবেন না বলে সাফ জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) তার দলের সদস্যদের পক্ষ থেকে এমন তথ্য জানানো হয়। সদস্যদের মতে, কোনো দল যদি পার্লামেন্টে ১১৩ আসনের সমর্থন দেখিয়ে নিজেদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে পারে তাহলে গোতাবায়া ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন।
এদিকে শ্রীলঙ্কায় সরকারবিরোধী আন্দোলনও অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবারও (৫ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন সাধারণ মানুষ। এ সময় বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে জলকামান ও টিয়ার গ্যাস ছোড়ে নিরাপত্তাবাহিনী।
বিরোধীরা বলেন, ‘সরকার যদি মনে করে আমাদের দমাতে পারবে, তাহলে সেটা তাদের ভুল ধারণা। আমরা খাদ্য, জ্বালানি, অর্থসহ নানা সংকটে ভুগছি। দেশে পরিবর্তন দরকার। আর আমরা সেই পরিবর্তনের জন্যই এখানে এসেছি। আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব।’
বুধবার (৬ এপ্রিল) রাজধানী কলম্বোর সড়কে নেমে আসে কয়েকশ শিক্ষার্থী। ইন্ডিপেন্ডেন্স স্কয়ারের সামনে জড়ো হয়ে রাজাপাকসে সরকারের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেন তারা। তীব্র ক্ষোভ জানান চলমান অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে। প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দেয়া হয়।
হাসপাতালে ওষুধ ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাবের প্রতিবাদে রাজপথে নামেন চিকিৎসকরাও। তারা জানান, কমপক্ষে ১৮৯টি অতি জরুরি ওষুধের স্বল্পতা রয়েছে।
নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত শ্রীলঙ্কায় বেশ কিছুদিন ধরেই বাড়ছে জনরোষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১ এপ্রিল জরুরি অবস্থা জারি করে সরকার। তবে গণবিক্ষোভের মুখে তা প্রত্যাহারে বাধ্য হয় সরকার। এর আগেই পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায় ক্ষমতাসীন জোট, এসএলপিপি।