আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনায় বিনা পয়সায় টিকা দিয়েছি। বিনা পয়সায় যাদের ভ্যাকসিন দিয়ে তরতাজা করেছি, তারাই এখন সমালোচনা করছে।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে এত বাধা, তবুও নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতু করেছি। জাতির পিতা দেশ স্বাধীন করেছেন। এ স্বাধীনতা বৃথা যেতে পারে না। আমরা আমাদের কাজ করে যাব। সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করে যাব, যে যাই বলুক। প্রজন্মের পর প্রজন্ম পর্যন্ত যেন সুফল পায়; সে ব্যবস্থা করে দিয়েছি। ১০০ বছর মেয়াদী পরিকল্পনা করেছি।
শনিবার (১১ জুন) দুপুর ১২টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনায় সভায় এসব কথা বলেন তিনি। এসময় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ফুল দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানায়।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, জীবনে কারও কাছে কোনোদিন মাথা নত করিনি। জীবন ভিক্ষা চাইনি। আমি পরিবার থেকে বাবার কাছ থেকে এটা শিখছি যে, কারও কাছে কোনও অন্যায়ের কাছে মাথা নত করব না।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগকে সবসময় উজানে নাও ঠেলে চলতে হয়েছে। দেশে ফেরার পর ৮৩ সালে এরেস্ট করা হয়। ডিজিএফআই অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। যতবার গ্রেপ্তার হয়েছি, ততবারই নেতাকর্মীদের উদ্দেশে চিঠি দিয়েছি। চিঠির মাধ্যমে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছি। দেশবাসীকে চিঠি দিয়েছি।
সরকারপ্রধান বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার আন্দোলন ও চাপে আমারে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার অবাক হয়, ১৫ দিনে আমার মুক্তির জন্য ২৫ লাখ স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হয়। এটাই আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের জেনারেল নেতাকর্মীরা সবসময় ঠিক থাকেন। এটা বাবার সময়ও দেখেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, জেলে বসে দেশ কীভাবে চালাব, দল কীভাবে চালাবো; সেসব লিখে রেখেছিলাম। কীভাবে উন্নয়ন করব সেসব পরিকল্পনা লিখে রাখি। আমরা একটা বাজেট দিয়েছি। উন্নত দেশে ডিজিপি মাইনাসে। আমরা ৫ ভাগের উপরে রেখেছি। কিছু মানুষ অর্জনকে অর্জন হিসেবে নিতে পারে না, কেন তাদের এই দৈন্যতা? জনগণই হল আমাদের শক্তি। বিএনপির ক্ষেত্রে জন্মই হল আজন্ম পাপ। জনগণ বিএনপির শক্তি না।
এসময় শুভেচ্ছা বক্তব্যে শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবসকে গণতন্ত্রের বিজয় দিবস আখ্যা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। দলের নেতাদের নিয়ে সভাপতি শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানানোর পর তিনি বলেন, আজ গণতন্ত্রের বিজয় দিবস। এদিন আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার মুক্তির মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের বিজয় নিশ্চিত করেছে। শেখ হাসিনার হাত ধরেই বাঙালি ভোটের অধিকার ফিরে পেয়েছে, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত হয়েছে।
এসময় বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তোমারা মিথ্যাচার করো; আমরা কাজ করে জবাব দেই।
উল্লেখ্য, ১১ জুন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবস। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় গ্রেপ্তার হয়ে দীর্ঘ ১১ মাস কারাভোগের পর ২০০৮ সালের এই দিনে সংসদ ভবন চত্বরে স্থাপিত বিশেষ কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। এ উপলক্ষে দিনটিকে স্মরণ করে দলের নেতারা তার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
প্রথমে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ, পরে একে এক ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, ঢাকার দক্ষিণ সিটির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ও উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম, মহিলা আওয়ামী লীগ, কৃষক লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ), তাঁতী লীগ, যুব মহিলা লীগ, শ্রমিক লীগ, মহিলা শ্রমিক লীগ, আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগ এবং গণভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) কর্মকর্তারা শুভেচ্ছা জানান।