গত ২১ মে চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভোটার তালিকা নিয়ে হাইকোর্টে করা এক রিট পিটিশনের কারণে নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়। অবশেষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংগঠনটির নির্বাচনের তারিখ ও তফসিল ঘোষণা করেছে। একই সঙ্গে নতুন তালিকায় অভিনেতা ডিপজলসহ কয়েকজনের প্রার্থীতা বাতিল করা হয়েছে।
নতুন তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২০ আগস্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। ভোট গ্রহণের স্থান এফডিসির জহির রায়হান মিলনায়তন। এবারের নির্বাচনি বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. আবুল কালাম আজাদ। সদস্য হিসেবে রয়েছেন মন্ত্রণালয়ের আরো দুই উপসচিব মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া ও মো. আমিনুল ইসলাম।
মনোনয়ন ফরম কেনা যাবে ৩ জুলাই থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত; দাখিলের শেষ সময় ১৮ জুলাই। মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই করা হবে ২১ জুলাই। একইদিন বিকাল ৪টায় বৈধ প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। আপিল করা যাবে ২৭ জুলাই পর্যন্ত। আপিল শুনানি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে ৩ আগস্ট। চূড়ান্ত বৈধ প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করা হবে ৪ আগস্ট।
কেউ নির্বাচনে প্রার্থীতা বাতিল করতে চাইলে ১০ আগস্ট বিকেল ৪টার মধ্যে করতে হবে। এ ক্ষেত্রে তাকে স্বশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে। কেউ প্রার্থীতা বাতিলের পর যদি দেখা যায় বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা নির্বাচন যোগ্য সদস্য সংখ্যার সমান বা তারচেয়ে কম, তাহলে ভোটগ্রহণ করা হবে না এবং এ ধরণের প্রার্থীদের নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে। প্রার্থীতা প্রত্যাহারের পর নির্বাচন কর্তৃক সর্বশেষ প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে ১১ আগস্ট।
২০ আগস্টের নির্বাচনে প্রথম কার্যনির্বাহী সদস্যের নির্বাচন করা হবে। তাদের ভোটে সভাপতি ২ জন, সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, ২ জন, সহকারী সাধারণ সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নির্বাচন করা হবে। এটি করা হবে ২২ আগস্ট। নির্বাচনের ফল নিয়ে আপিল করা যাবে ২৫ আগস্ট বিকাল ৪টা পর্যন্ত। নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হবে ২৮ আগস্ট বিকাল ৪টায়।
হাইকোর্টের রিট পিটিশন ৬০৬৪/২০২২ অনুযায়ী বৈধ প্রার্থী হিসেবে সাধারণ সদস্যের মধ্যে রয়েছেন—মো. আবু সাঈদ (সেমন্তী মিউজিক), খোরশেদ আলম খসরু (টিওটি ফিল্মস), সুলতানা রোজ নিপা (এস রোজ ফিল্ম), মো. শাহ আলম (আলম মাল্টিমিডিয়া), সামসুল আলম (উইনার ফিল্ম), মো. জসিম উদ্দিন (রাইসা ফিল্ম প্রোডাকশন), মো. মুশফিকুর রহমান গুলজার (মুমী ফিল্ম ইয়ার্ড), মো. সোহরাব হোসেন (এস. এইচ মুভিজ), মো. শাহ আলম (স্বপ্নচূড়া ফিল্ম ইন্টারন্যাশনাল), শরীফ চৌধুরী (নেহা সুজাল চলচ্চিত্র), জাঁ-নেসার ওসমান (ফেইড ইন), সাদেক সিদ্দিকী (আনন্দ বাজার মাল্টিমিডিয়া), রাজীবুল হোসেন খন্দকার (এশিয়ান ইন্সটিটিউট অব মিডিয়া এন্ড কমিউনিকেশন বাংলাদেশ), মো. আলিম উল্যাহ (অপরাজিতা এন্টারটেইনমেন্ট), কাজী মো. ইসলাম মিয়া, (সচেতন ফিল্ম মিডিয়া), কামাল মোহাম্মদ কিবরিয়া লিপু (কিবরিয়া ফিল্মস)।
এছাড়াও রয়েছেন মোহাম্মদ খোরশেদুল আলম খন্দকার ওরফে খ. ম. খুরশীদ (এ-ওয়ান টেলিমিডিয়া), আলমগীর আলম জোয়াদ্দার রানা ওরফে এ. জে. রানা (সূর্য চলচ্চিত্র), এম. এন ইস্পাহানী (ওয়ান ফ্রেম), মোছা. জাকিরা খাতুন (জয়া) (আস্থা কথাচিত্র), এস এম ইমরুল কায়েস (সাগা এন্টারটেইনমেন্ট), গোলাম মোস্তফা শিমুল (কেয়া খালেক মাল্টিমিডিয়া), ফারজানা রশিদ ব্রাউনিয়া (বি. কে. চলচ্চিত্র), মোহাম্মদ শহিদুল আলম (ফজলুল হক ইনস্টিটিউট অব স্টাডিজ), আবদুল্লাহ চৌধুরী (হিমেল ফিল্ম ইন্টারন্যাশনাল), তাজুল ইসলাম (টিএইচ মাল্টিমিডিয়া) ও লিটন হায়দার (হায়দার এন্টারপ্রাইজ)।
হাইকোর্টের পিটিশন অনুযায়ী প্রার্থীতা বাতিল হওয়া সাধারণ সদস্যরা হচ্ছেন—মো. সেলিম খান (শাপলা মিডিয়া ইন্টারন্যাশনাল), মো. আতিকুর রহমান লিটন (শাপলা মিডিয়া), মেহেদী হাসান সিদ্দিকী মনির (তানজীব ফিল্মস), ড্যানি সিডাক (এসডি মুভিজ), নাদের চৌধুরী (জাজ মাল্টিমিডিয়া), মো. হাবিবুর রহমান অন্তর (স্বপ্ন চলচ্চিত্র), মো. আশরাফুল হোসেন আলম (হিরো আলম প্রোডাকশন), জাহাঙ্গীর সিকদার (এক্সেল ফিল্মস), মো. মনোয়ার হোসেন ডিপজল (অমিবনি কথাচিত্র), উত্তম আকাশ ওরফে আকাশ চৌধুরী (শেখ শান্ত কথাচিত্র), মোরশেদ খান হিমেল (মিজান সিনেমা সেন্টার), নারগিস আক্তার (ফেমকম বাংলাদেশ), এস. ডি রুবেল (নিউট্র্যাক চলচ্চিত্র প্রযোজনা ও পরিবেশনা), খন্দকার আরিফুজ্জামান (ডি. এ তায়েব ফিল্মস), অপূর্ব রায় (এ.পি.কে এন্টারপ্রাইজ)।
প্রার্থীতা বাতিল হওয়া সহযোগী সদস্যরা হচ্ছেন—আবুল হোসেন মজুমদার (ধারা মিডিয়া), বিপ্লব শরীফ (জোয়াদ্দার ফিল্মস), আজিজ আহমেদ পাপ্পু (অর্পিতা কথাচিত্র) ও মো. আসিকুর রহমান নাদিম (লিটন ফিল্মস)।
তফসিলে বলা হয়, চূড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুযায়ী বৈধ ভোটারগণ নতুন করে প্রার্থী হতে পারবেন। যাদের প্রার্থীতা বৈধ হয়েছে তাদের নতুন করে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হবে না। সংশোধিত ভোটার তালিকা অনুযায়ী বৈধ ভোটারের প্রার্থীতা বাতিল হয়েছে তারা মনোনয়নপত্র বিনামূল্যে সংগ্রহ করে পুনরায় দাখিল করতে পারবেন। তবে নিজে ভোটার না হওয়ার কারণে যাদের প্রার্থীতা বাতিল হয়েছে তাদের প্রার্থী হওয়ার সুযোগ নেই।
জানা যায়, সেলিম খান ও ডিপজল চাইলে পুনরায় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পারবেন। কারণ তাদের প্রার্থীতা মূলত মনোনয়নপত্রে থাকা প্রাস্তবকের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ যাওয়ায় বাতিল করা হয়েছে।
বাংলাদেশে চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতির নির্বাচন নিয়ে মামলা-মোকাদ্দমার কারণে ২০১২ সালের পর থেকে প্রশাসক দিয়ে চলছিল। ২০১৯ সালের ২৭ জুলাই নির্বাচিত কমিটি দায়িত্ব গ্রহণ করে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ব্যতীত ব্যবহার বেআইনি ।
2023 DailyNews24BD.com