বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের নির্দেশনা মেনে চলছেনা ব্যাটারিচালিত যানবাহন। এত বিদ্যুৎ নির্ভর হাজার হাজার যানবাহনে প্রতিদিন অপচয় হচ্ছে লক্ষাধিক ইউনিট বিদ্যুৎ। অপচয় রোধে বিকল্প ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা। তবে চালকরা বলছেন সব শর্ত মেনেই বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন তারা।
দেশের একাংশে আমাদের শেরপুর এর সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, শহর জুড়েই অনিয়ন্ত্রিত তিন চাকার ওইসব ব্যাটারিচালিত যানবাহনের দৌরাত্ম দিন দিন বেঁড়েই চলছে ।
অটোবাইক মালিক ও শ্রমিকরা জানায়, জেলার পাঁচ উপজেলায় ইজি বাইক চলে অন্তত ২০ হাজার। আর ব্যাটারিচালিত রিকশাভ্যান চলে আরও ১০ হাজারের মতো। ব্যাটারিচালিত এসব যানবাহন পুরোটাই বিদ্যুৎ নির্ভর। এসব যানের ব্যাটারি ফুল চার্জেই চলে যায় দিনের অর্ধেক সময়। বিদ্যুতের বড় একটি অংশ চলে যায় এসব যানবাহনের পেটে।
শহরের বাগবাড়ী এলাকার বাসিন্দা অটোচালক কমল মিয়া বলেন, নিজের বাড়িতে প্রতিদিন রাত ৮টা থেকে পরদিন সকাল ৮টা পর্যন্ত তিনি অটোরিকশার ব্যাটারি চার্জ দেন। মাস শেষে তার সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল আসে। আরেক অটোচালক হাসান মিয়া জানান, অটোরিকশায় মোট পাঁচটি ব্যাটারি থাকে। এছাড়া বিশু নামের রিকশাভ্যান চলে চারটি ব্যাটারিতে।
এক প্রশ্নের জবাবে অটো চালক রবিন দাবি করেন তারা বাণিজ্যিক হারে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে ব্যাটারি চার্জ করছেন। বিদ্যুৎ বিভাগের পর্যবেক্ষণ বলছে প্রতিদিন গড়ে একটি ইজি বাইকের জন্য ১০-১২ ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যয় হয়। সেই হিসাবে ইজি বাইক এবং রিকশা ভ্যান মিলিয়ে ৩০ হাজার ব্যাটারিচালিত যানবাহনে প্রতিদিন গড়ে তিন লক্ষাধিক ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার হচ্ছে।
বিদ্যুৎ বিক্রয় এবং বিতরণ বিভাগ শেরপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী সুব্রত রায় বলেন, একটি অটো গড়ে ৮-১০ ঘণ্টা চার্জ হলে মাসে ২২০-২৪০ ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ হয়। এভাবে ১০ হাজার অটো চার্জ হলে দুই হাজার আটশ থেকে তিন হাজার কিলোওয়াট বা ৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ খরচ হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ছোট একটি এলাকার জন্য ৩০ হাজার ব্যাটারি চালিত যানবাহন অপ্রয়োজনীয়। আর এগুলোর জন্য যে পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যবহার হচ্ছে তাও কম নয়।
এ প্রসঙ্গে পুলিশ লাইন্স একাডেমীর প্রধান শিক্ষক ও নাগরিক সংগঠন জনউদ্যোগের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, অটোরিকশার ব্যাটারি চার্জের জন্য অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার হচ্ছে। ফলে জেলায় যে পরিমাণ বিদ্যুতের চাহিদা দেখা দিচ্ছে সে পরিমাণ বিদ্যুৎ আমরা পাচ্ছিনা এবং বরাদ্দের একটা বড় অংশ অটোরিকশার ব্যাটারি চার্জেই খরচ হয়ে যাচ্ছে।
আবুল কালাম আজাদ আরও বলেন, শেরপুরে দিন দিন লোডশেডিংয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই অটোরিকশা চার্জে অতিরিক্ত যে বিদ্যুৎ ব্যবহার হচ্ছে এ জন্য বাড়তি বিদ্যুৎ বরাদ্দ দেয়া উচিত। অথবা ওইসব যানবাহন চার্জিয়ের জন্য বিকল্প জ্বালানির ব্যবস্থা করা দরকার।