সকল ব্যবসার স্বাভাবিক ধারা অব্যাহত রাখতে দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার বজায় রাখার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ। তৈরি পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান।
অন্য সেক্টরের ব্যবসায়ী নেতারাও বলছেন, রাজনীতি সব সময়ই ব্যবসা-বাণিজ্যকে প্রভাবিত করে। করোনাকালে গত আড়াই বছরে পৃথিবীর অনেক দেশে আন্দোলন-সংগ্রাম হলেও বাংলাদেশ ছিল ব্যতিক্রম। সামাজিক বা রাজনৈতিক কোনো অস্থিরতা ছিল না দেশে। সামনে জাতীয় নির্বাচন আসছে। অতীতের মতো এবারও জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনীতিতে কিছু অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। ফলে খানিকটা শঙ্কায় আছেন ব্যবসায়ী নেতারা।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)’র সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ) বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলো মিছিল-মিটিং করবে। এটা তাদের সাংবিধানিক নাগরিক অধিকার। এ বিষয়ে ব্যবসায়ীদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু মিছিল-মিটিং-এর নামে ভাংচুর, লুটপাট, হরতাল, অবরোধ হলে তা দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তাই সুষ্ঠু ব্যবসায়িক পরিবেশের প্রয়োজনে রাজনীতিবিদরাও সেদিকে নজর দেবেন বলে আশা এই ব্যবসায়ী নেতার।
অপরদিকে, ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্সের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী বলেছেন, করোনাকালীন সময়ে ব্যবসায়ীরা মারাত্মকভাবে ক্ষতির শিকার হয়েছেন। বর্তমানে গ্যাস-বিদ্যুতের সংকটেও তারা দিশেহারা। উৎপাদন কম হওয়ায় অনেক সময়ে ক্রেতার আদেশ ঠিক মত পূরণ করতে না পারলে লোকসানও গুণতে হয় তাদের। তাই ব্যবসা হচ্ছে দেশের অর্থনীতির অনেক বড় চালিকা শক্তি। সেই শক্তিকে চলমান রাখতে রাজনৈতিক দলগুলোকে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে রাজনীতি করার আহ্বান জানান এ অর্থনীতিবিদ।
একই সঙ্গে সাধারণ জনগণের কথা মাথায় রেখে পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের প্রতিও অনুরোধ করেন অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী। অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার সঙ্গে বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতি, ভূ-রাজনীতি ও জলবায়ু পরিবর্তন সহনীয় মাত্রায় থাকলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে এমন আশা ড. মাহবুব আলীর।