অপুর সঙ্গে শাকিবের বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। এরপর প্রকাশ পায় বুবলীর সঙ্গে বিয়ে ও সন্তান শেহজাদ খান বীরের খবর। চলচ্চিত্র পাড়ায় শাকিব খান ও বুবলীর বর্তমান সম্পর্কের অবস্থা নিয়ে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। কিছুদিন আগেও একটি গণমাধ্যম স্পষ্ট জানিয়ে দেয় শাকিব বুবলীর বিচ্ছেদ হয়েছে।
কদিন পরেই বুবলী সেটার প্রতিক্রিয়া দেখান আরেক গণমাধ্যমে। সরাসরি না বললেও বুবলী সেখানে নানাভাবেই বলেন যে শাকিবের সঙ্গে তাঁর এখনও সম্পর্ক রয়েছে।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে শাকিব খান যা বলছেন, তার একটি অর্থ দাঁড়ায় বুবলীর সঙ্গে যদি বিচ্ছেদ নাও হয়ে থাকে তবুও সম্পর্ক রাখবেন না শাকিব খান! শাকিব খানের ওই বক্তব্যের কোনো বিকল্প হতেই পারে না। এছাড়াও শাকিব যে নিউ ইয়র্ক থেকে দেশে ফেরার সময় বলেছিলেন, ‘এবার আর গোপনে নয়, আয়োজন করে পরিবারের পছন্দে বিয়ে করবেন। ’ অর্থাৎ বুবলীকে নিয়ে শাকিবের দীর্ঘ পরিকল্পনা যে নেই তা স্পষ্ট। এছাড়াও অপুর মতোই বুবলীর প্রতিও শাকিব নাখোশ। কারণ যেভাবে সন্তান ও বিয়ের খবর প্রকাশ করেছেন বুবলী, সেটা শাকিবের পছন্দ নয়।
শাকিব খান বলছেন, ‘প্রেম, বিয়ে, সন্তান- প্রত্যেক মানুষের একান্তই ব্যক্তিগত বিষয়। এগুলো ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচার করার বিষয় নয়। আর আমি আমার পার্সোনাল লাইফকে পাবলিকের সামনে আনতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি না। আমার ইচ্ছা ছিল সময়মতো সুন্দর আয়োজনের মাধ্যমে ঘটা করে বিষয়টি সবাইকে জানিয়ে সবার সঙ্গে একসঙ্গে আনন্দ করব। কিন্তু অপু বা বুবলী কেউই আমাকে সেই সুযোগ দেয়নি। ’
বুবলী বা অপু কারো সঙ্গেই ভবিষ্যতে সম্পর্ক রাখবেন না এটা সরাসরি না বললেও স্পষ্ট করে দিয়ে শাকিব বললেন, ‘আমার অপছন্দের এমন কাজ করে সবার কাছে আমাকে ছোট করার পরও কী তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা যায়? আমার সঙ্গে বিয়ে ও সন্তান নিয়ে তাদের মনে যখন এমনই উচ্ছ্বাস ছিল, তখন তারা বিয়ে বা সন্তান জন্মের পরপরই সবাইকে বিষয়টি কেন জানাল না? কোথায়, আমি তো তাদের মুখ বন্ধ করে রাখিনি! প্রকাশই যদি করতে হলো তাহলে এত দেরিতে কেন? তাহলে কী তারা আমার শত্রুদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আমাকে অপমান আর ধ্বংস করতে চেয়েছিল?’
২০১৭ সালের এপ্রিলে শবনম বুবলীর সঙ্গে শাকিব ঘরোয়া পরিবেশে একটি ছবি তোলেন। ছবিটিতে ‘ফ্যামিলি টাইম’ ক্যাপশন লিখে নিজের সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রকাশ করেন বুবলী। এর পরই শাকিব খান-অপুর বিবাহ ও সন্তানের খবর প্রকাশ্যে আসে। আসে বলতে অপু বিশ্বাসই দীর্ঘদিন গোপনে থাকা বিয়ে ও সন্তানের বিষয়টি খোলাসা করেন। নিউজ টুয়েন্টিফোর চ্যানেলে এসে লাইভে শাকিবের সঙ্গে নিজের সম্পর্কের কথা, সন্তানের কথা বলতে বাধ্য হন অপু বিশ্বাস।
২০১৮ সালের ১২ মার্চ শাকিব খান ও অপু বিশ্বাসের বিবাহবিচ্ছেদ কার্যকর হয়। এরপর দুজনের পথ বেঁকে যায়। দুজনই নতুন করে নিজেদের দিকে মনোযোগী হন।
চলচ্চিত্রে শাকিবের নিয়মিত জুটি হন বুবলী। ফলে বুবলীর সঙ্গে শাকিবের সম্পর্কের বিষয়টি জোরালো হয়। বেশ কয়েকটি সিনেমা জুটি বেঁধে অভিনয় করেন তাঁরা। এরপর ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে আকস্মিকভাবে উধাও হন বুবলী। জানা যায়, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে। ১১ মাস নিভৃতে ছিলেন বুবলী। ওই সময় শোনা যায় বুবলী অন্তঃসত্ত্বা। সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্যই নিউ ইয়র্ক গেছেন। পরে চলচ্চিত্রপাড়ার বাতাসে শোনা যায় বুবলী মা হয়েছেন, বাবা হয়েছেন শাকিব। বিষয়টি ২০২২-এ এসে সত্য হয়। কিন্তু অপু বিশ্বাসের মতো বুবলীকেও একই পথে হাঁটতে হচ্ছে।
অতীতে যাদের কাছে টেনে নিয়েছিলেন, তাদের ভুল মানুষ আখ্যা দিয়ে শাকিব খান শনিবার বলেন, ‘আমি আমার জীবনের সবচেয়ে বড় শিক্ষা পেয়েছি দুটি সময়। প্রথমত, করোনাকালে যখন একাকী ছিলাম। দ্বিতীয়ত, আবারও যখন নিঃসঙ্গভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেছি তখন। আমি সেই দিনগুলোতে একাকী থাকায় নিজের জীবনের ফেলে আসা দিনগুলো নিয়ে হিসাব করার অফুরন্ত সময় পেয়েছিলাম। তখন নিজের পেছনের জীবনের হিসাবনিকাশ করতে গিয়ে দেখলাম, না বুঝে অনেক ভুল করে ফেলেছি। বেশিরভাগ ভুল করেছি ভুল মানুষের সঙ্গে মিশে। মনে হচ্ছে সেই ভুলেরই খেসারত দিচ্ছি এখন। তাই জীবনের বাকি দিনগুলোতে আর কোনো ভুল মানুষের সঙ্গে মিশতে চাই না। আর কোনো ভুল করতে চাই না। ভুল করে মেশা সেই বাজে মানুষগুলোকে আর পাশে রাখতে চাই না। ’
আর বুবলীর সঙ্গে যে থাকছেন না, নিউ ইয়র্ক থেকে ফেরার সময়ই জানিয়ে দিয়েছেন শাকিব। এক সাক্ষাৎকারে শাকিব খান বলেছিলেন, ‘এবার আর গোপনে নয়, আয়োজন করে পরিবারের পছন্দে বিয়ে করবেন। ’ এ থেকে সমীকরণ ওই একই দাঁড়ায়, শাকিবের করোটিতে অপু-বুবলী নেই। শাকিব এখন নতুনভাবে চলবেন।