আগামী বছর থেকে পর্যায়ক্রমে ২০২৭ সালের মধ্যে দেশের প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে চালু হবে নতুন শিক্ষাক্রম। এরই অংশ হিসেবে আগামী শিক্ষাবর্ষে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে চালু হচ্ছে নতুন ধারার শিক্ষাপদ্ধতি। আর এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে নানা প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার।
এরই মধ্যে চলতি বছর ৬২টি স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পাইলটিং হয়েছে। আগামী বছর তিনটি শ্রেণিতে একযোগে নতুন শিক্ষাপদ্ধতি চালু করতে ছাপা হচ্ছে নতুন বই। শুরু হয়েছে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমও। প্রথমে মাস্টার ট্রেইনার তৈরি এবং পরবর্তীতে তাদের মাধ্যমে ডিসেম্বরের মধ্যেই সারা দেশে মাধ্যমিক পর্যায়ের ৪ লাখ শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
অন্যদিকে প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম এখনও শুরু হয়নি। তবে ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত এ পর্যায়ের পৌনে ৪ লাখ শিক্ষককে সরাসরি ও অনলাইনে প্রশিক্ষণ দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম বলেন, আগামী শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিকের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। এজন্য ডিসেম্বরের মধ্যেই ৪ লাখ শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।
তবে প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম এখনও শুরু হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী বছর নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রথম শ্রেণির বই ও মূল্যায়ন পদ্ধতি যাবে। এজন্য ডিসেম্বর থেকে আগামী জুন পর্যন্ত ৩ লাখ ৭৭ হাজার শিক্ষককের প্রশিক্ষণ দেয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে বেসরকারি কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষকদেরও প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে। অনলাইন এবং অফলাইনে দেয়া হবে এসব প্রশিক্ষণ।
সূত্র মতে, নতুন শিক্ষাক্রমে নতুন সিলেবাস ও বইয়ের মাধ্যমে পড়ালেখা ও মূল্যায়ন পদ্ধতি সম্পূর্ণ পাল্টে যাচ্ছে। এতে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো পরীক্ষা বা নম্বর পদ্ধতি থাকছে না। এর পরিবর্তে ক্লাসে ধারাবাহিক মূল্যায়ন এবং বছরে দুটি সামষ্টিক মূল্যায়ন করা হবে। এতে শিক্ষার্থীরা প্রচলিত মুখস্ত পদ্ধতির পরিবর্তে হাতে-কলমে শিখবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। যদিও পাইলটিং সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা কমে যাওয়া দেখে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মাঝে বেশ উদ্বেগ কাজ করছে। তাদের লেখাপড়ার মান ও ভবিষ্যৎ নিয়েও অনেকে শঙ্কিত। কিন্তু বাস্তবে নতুন শিক্ষাপ্রদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা ভালো কিছু শিখতে পারবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
তবে ২০১০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতি কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক শেখ ইকরামুল কবীর বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমের মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে শিক্ষকরাও এখনো অনেকটা অন্ধকারে। সৃজনশীল পদ্ধতি এখনও অনেক শিক্ষক বুঝে উঠতে পারেননি। এখন নতুন পদ্ধতির শিক্ষাক্রম বুঝতে অনেকেরই সমস্যা হবে। এতে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ লেখাপড়া অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়তে পারে। নতুন এ পদ্ধতি বাস্তবায়ন করতে শিক্ষকদের পর্যাপ্ত ট্রেনিংয়ের পাশাপাশি তাদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন কেউ কেউ।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ব্যতীত ব্যবহার বেআইনি ।
2023 DailyNews24BD.com