বাংলাদেশের প্রথম কমার্শিয়াল ১২ মিটার ইলেকট্রিক সিটি বাস নিয়ে এসেছে ওয়ালটনের অটোমোবাইল প্রজেক্ট। ওয়ালটনের ফ্যাক্টরী এরিয়া লম্বায় আড়াই কিলোমিটারের বেশি এবং গেটের ভেতরে থেকে বিভিন্ন শেডে এমপ্লয়ী নিয়ে যাওয়া আসার জন্য এই বাসটি ব্যবহৃত হচ্ছে। একই সাথে ওয়ালটন আরএন্ডডি কাজের জন্য আরো একটি খোলা চেসিসের বাস নিয়ে এসেছে, যেটা নিয়ে গবেষণার কাজ চলমান।
বাসগুলোর স্পেসিফিকেশন এবং ফিচারস গুলো নির্ধারন করেছে ওয়ালটনের ইঞ্জিনিয়াররা। এই স্পেসিফিকেশনগুলি ডিজাইন এবং বাসের বিভিন্ন সিস্টেমের পারফরমেন্স রিকয়ারমেন্টের মধ্যে সমন্বয় করতে পারাটা ওয়ালটনের জন্যে একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিলো। একই সাথে বাংলাদেশের জন্য ব্যবহারোপযোগী একটি ফাস্ট চার্জিং ষ্টেশনও ইন্সটল করা হয়েছে এখানে। চার্জিং স্টেশন এবং বাসের জন্য বিভিন্ন গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ড স্টাডি করে, এবং Sustainable and Renewable Energy Development Authority (SREDA), বাংলাদেশ এর স্টান্ডার্ড ও গাইডলাইন অনুসরন করে এই বাস ও চার্জিং স্টেশন আনা হয়েছে।
বর্তমানে ঢাকার গণপরিবহন নিয়ে যে ভবিষ্যতমুখী Integrated Multimodal Transportation System নিয়ে যে ধরনের সরকারী পরিকল্পনা ও প্রকল্প আসছে তার সাথে সমন্বয়ের ক্ষেত্রে এবং ভবিষ্যতের গণপরিবহনকে আধুনিকায়নের দিকে পৌঁছানোর দিকে এই বাস একটা বড় মাইলফলক হিসেবে থাকবে। অনেকেই জানেননা যে SDG Goals কে প্রায়োরিটি দিয়ে ওয়ালটন নিজের ব্যবহারের জন্য ২ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন করে যা কয়েক বছরের মধ্যে ১৮ মেগাওয়াটে উন্নিত হবে। এর সাথে নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থায় ইলেক্ট্রিক বাস সংযোজন, SDG Goal এর দিকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য ওয়ালটনের আরো একটি পদক্ষেপ।
বাসের হাই লেভেল পারফরমেন্স বলতে গেলে বলতে হয় বাসের প্রায় ২০০ কিলোওয়াট ঘন্টার লিথিয়াম আয়রন ফসফেট ব্যাটারী ১৮০ কি.মি. রেঞ্জ দিতে পারে ৯০ জন যাত্রী নিয়ে। ১৫০kW ডিসি চার্জার দিয়ে ফুল চার্জ হতে এটা সময় নেয় মাত্র ১ ঘন্টা। গাড়িটাতে অবস্ট্যাকল ডিটেকশন, ন্যারো রোড ডিটেকশন, ইলেক্ট্রনিক ব্রেকিং সিস্টেম (EBS), ও ABS সহ অনেক আধুনিক সেফটি ফিচারও আছে। ১৪৫ কিলোওয়াটের মটরটি খুব অল্প সময়ে ৮০ কি.মি./ঘন্টা গতিতে উঠতে পারে আর সর্বোচ্চ গতিবেগ ১৪০ কি.মি./ঘন্টা।
ইলেক্ট্রিক গাড়ি যেখানে ব্যবহৃত হছে তার বদলে ইঞ্জিনের গাড়ি ব্যবহার করতে হতো। একটা ইঞ্জিনের গাড়িতে ডিজেল ব্যবহৃত হলে যে এনার্জি পাওয়া যায় গাড়ি চালানোর জন্যে, সেই ডিজেল দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে, সেই বিদ্যুৎ দিয়ে ইলেক্ট্রিক গাড়ি চালালে তার চে’ বেশি এনার্জি পাওয়া যায়। এটার মুল কারন হলো গাড়ির ইঞ্জিনের তেল থেকে এনার্জি কনভার্সনের এফিসিয়েন্সি খুব কম, যার তুলনায় পাওয়ার প্ল্যান্টের এনার্জি কনভার্সন এফিসিয়েন্সি, গ্রিডে ডিস্ট্রিবিউশন এফিসিয়েন্সি এবং চার্জার হয়ে গাড়ির মটরে এনার্জি কনভার্সন এফিসিয়েন্সি সব মিলিয়ে এনার্জি কনভার্সন এফিসিয়েন্সি বেশি। সহজ করে বললে, ১০০ লিটার ডিজেলে ডিজেল গাড়ি যদি ১০০০ কিলোমিটার যায়, এই ১০০ লিটার ডিজেলে পাওয়ার প্ল্যান্টে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে সে বিদ্যুৎ দিয়ে ইলেক্ট্রিক গাড়ি চালালে গড়ে ২০০০ কিলোমিটার যাওয়া সম্ভব। তাইলে পরিবহনের কাজে জ্বালানী ব্যবহার কমানোর একটা প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে ইলেক্ট্রিক গাড়ি।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ব্যতীত ব্যবহার বেআইনি ।
2023 DailyNews24BD.com