পেরুর বামপন্থী প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাসিলোকে দেশটির আইনপ্রণেতারা অভিশংসনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করেছে। এরপর পরই পুলিশ বুধবার তাকে আটক করে।
এদিকে পেদ্রো কাসিলোকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট দিনা বোলোয়ার্তে। তিনি পেরুর ইতিহাসে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট।
সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাসিলোর বিরুদ্ধে আগেই অভিশংসনের প্রস্তাব দেন দেশটির আইনপ্রণেতারা। এ নিয়ে বুধবার ভোটাভুটি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নিজেকে রক্ষা করতে পেদ্রো সংসদ ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা চালান। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে তিনি ডিক্রি জারি করে দেশ শাসনের কথা বলেন।
টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে তিনি জানান, অস্থায়ীভাবে সংসদ ভেঙে দেবেন, ডিক্রির মাধ্যমে শাসনভার পরিচালনা এবং দেশে নতুন নির্বাচন আয়োজন করবেন। তার এ ঘোষণাকে সুস্পষ্ট অভ্যুত্থান হিসেবে উল্লেখ করেন তার নিজ দল ও বিরোধী দলের সদস্যরা।
এছাড়া পুলিশ ও সেনাবাহিনীও স্পষ্ট করে বলেছে, প্রেসিডেন্টের এসব কার্যক্রমকে সমর্থন করবে না তারা। এ পরিস্থিতিতে তার পতন ত্বরান্বিত হয়ে পড়ে।
পেদ্র্রোর নাটকীয় বিদায়ের মাধ্যমে তার ১৭ মাসের শাসনের অবসান হয়েছে। এ সময়টায় পেরুর রাজনৈতিক পরিস্থিতি বেশ উত্তপ্ত ছিল। এই ১৭ মাসে পাঁচবার মন্ত্রিসভা গঠন ও পরিবর্তন করেছেন তিনি।
এদিকে কয়েক দিন আগে দেশটির বিচার বিভাগ ঢেলে সাজানোর ঘোষণা দেন পেদ্রো। যারা তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগুলো তদন্ত করছিল। তার এসব সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হন মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা। তারা একে একে পদত্যাগ করতে থাকেন।
অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও নিজেকে রক্ষা করতে পারেন নি পেদ্রো। তার বিরুদ্ধে ‘সংবিধান পরিপন্থী অভ্যুত্থান চেষ্টার’ অভিযোগ ওঠে। এ কারণে ক্ষমতা হারানোর পর পরই তাকে আটক করা হয়েছে।
একটি ছোট্ট গ্রামে জন্ম নেয়া পেদ্রো ২৪ বছর ধরে শিক্ষকতার পেশায় যুক্ত ছিলেন। তিনি ২০১৭ সালে দেশব্যাপী ধর্মঘটের নেতৃত্ব দেয়ার পর পরিচিতি পান। এর আগ পর্যন্ত তিনি পরিচিত ছিলেন না। সে সময়ে তিনি সরকারকে বেতন বাড়ানোর দাবি মানতে বাধ্য করেছিলেন।