টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের হারের বদলা নিল বাংলাদেশ, বলাই যায়। অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে ভারতকে হারানোর সূবর্ণ সুযোগ ছিল টাইগারদের সামনে। কিন্তু সেদিন বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ভারতীয় দলকে হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। লিটন দাসের দুরন্ত ইনিংসের পরও তীরে গিয়ে তরী ডোবে। এবার ঘরের মাঠে ডেকে ভারতীয় দলকে হারিয়ে দিল বাংলাদেশ।
তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে মাত্র ১৮৭ রানের লক্ষ্য দেয় ভারত। ছোট লক্ষ্য টপকাতে রীতিমতো ঘামঝরাতে হয় বাংলাদেশের। তবে মেহেদী হাসান মিরাজের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে শেষ পর্যন্ত ১ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে টাইগাররা। এই জয়ে ১-০তে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।
মেহেদি হাসান মিরাজ ৪টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে ৩৯ বলে ৩৮ রান করে অপরাজিত থাকেন। মুস্তাফিজুর রহমান ২টি বাউন্ডারির সাহায্যে ১১ বলে ১০ রান করে নট-আউট থাকেন। ৫ ওভারে ৩৭ রানের বিনিময়ে ২টি উইকেট নিয়েছেন কুলদীপ।
মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে দুপুর ১২টায় ম্যাচটি শুরু হয়। নিয়মিত অধিনায়ক তামিমের অনুপস্থিতিতে দেশের ১৫তম অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক হয় লিটন দাসে। এদিন ভারতকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসান এবং এবাদত হোসেনের দারুণ বোলিংয়ে ৪১.২ ওভারে ভারতকে ১৮৬ রানে আটকে দেয় বাংলাদেশ।
জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে বরাবরের মত ব্যর্থ বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি। ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ দ্রুত ২ উইকেট হারিয়ে ফেলে। প্রথম বলে শূন্য রান করে দীপক চাহারের শিকার হয়ে ফেরেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এরপর দীপক-সিরাজদের সুইংয়ের সামনে বেশ অসহায় লাগলেও ধীরগতিতে রান তুলতে থাকেন এনামুল হক বিজয় ও লিটন দাস। তবে বিজয় ১৪ রান করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন।
এরপর চতুর্থ উইকেট জুটিতে অবশ্য সাকিব এবং লিটন ৪৮ রানের জুটি গড়েন। ব্যক্তিগত ৪১ রান করে ওয়াশিংটন সুন্দরের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।
এরপর মুশফিকের সঙ্গে ২১ রানের ছোট জুটি গড়েন সাকিব। ব্যক্তিগত ২৯ রানে কোহলির একটি অসাধারণ ক্যাচে ফেরেন তিনি।
তবে দলীয় শত রানের আগেই ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহ-মুশফিকের বিদায়ের পর ব্যাটে আসেন আফিফ হোসেন। কিন্তু ৩৮.২ ওভারে কুলদীপ সেনের বলে মোহাম্মাদ সিরাজের হাতে ধরা পড়েন আফিফ। ১২ বলে ৬ রান করেন তিনি। বাংলাদেশ ১৩৪ রানে ৭ উইকেট হারায়। ব্যাট করতে নামেন এবাদত হসেন। তবে ৩৮তম ওভারে হিট উইকেট হয়ে মাঠ ছাড়েন এবাদত হোসেন। কুলদীপের জোড়া আঘাত।
এর আগে ৩৪তম ওভারে শার্দুল ঠাকুরের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে মাঠ ছাড়েন মাহমুদউল্লাহ। ৩৫ বলে ১৪ রান করেন তিনি। এর ঠিক পরের ওভারের প্রথম বলে মোহাম্মাদ সিরাজের বলে বোল্ড হয়ে মাঠ ছাড়েন মুশফিকুর রহিম। ৪৫ বলে ১৮ রান করেন মুশফিক। তিনি কোনও বাউন্ডারি মারেননি।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে দুই ওপেনার শিখর ধাওয়ান ও রোহিত শর্মা দেখেশুনে খেলতে থাকেন। দলীয় ৫.২ ওভারে ধাওয়ানকে বোল্ড করে ভারত শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন মেহেদি মিরাজ। ভাঙে ২৩ রানের ওপেনিং জুটি। এরপর দলীয় ৪৮ রানে রোহিতকে বোল্ড করে দ্বিতীয় আঘাত হানেন সাকিব আল হাসান। একই ওভারে সাকিবের বলে লিটন দাসের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হয়ে ফিরে যান বিরাট কোহলি।
সেখান থেকে দলকে এগিয়ে নিয়ে যান রাহুল এবং ওয়াসিংটন সুন্দর। তারা ৬০ রানের জুটি গড়েন। সুন্দর ১৯ রান করেন। রাহুল ৭৩ রান করেন। তিনি চারটি ছক্কা এবং পাঁচটি চার মারেন। সেই জুটিও ভাঙেন শাকিব। তিনি ১০ ওভার বল করে ৩৬ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন। শাহবাজ আহমেদ ব্যাট হাতে ব্যর্থ। চার বল খেলে কোনও রান না করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। শার্দূল ঠাকুর (২) এবং দীপক চাহারকেও (০) একই ওভারে ফেরান শাকিব।
ভারতের হয়ে মোহাম্মদ সিরাজ তিনটি উইকেট পান। কুলদীপ সেন ও ওয়াশিংটন সুন্দর ২টি করে উইকেট তুলে নেন।
বাংলাদেশের হয়ে ৩৬ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন সাকিব। চার উইকেট নেন ইবাদত হোসেন। প্রথমে বল হাতে ৪৩ রানের বিনিময়ে ১টি উইকেট নেন মেহেদি। পরে ব্যাট হাতে ৩৮ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংসের কারণেই ম্যাচ সেরা হয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ব্যতীত ব্যবহার বেআইনি ।
2023 DailyNews24BD.com