গত ৪১ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে জাপানের মুদ্রাস্ফীতি। গত ডিসেম্বরে এক বছর আগের তুলনায় মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে ৪ শতাংশ, যা ব্যাংক অব জাপানের লক্ষ্য মাত্রার চেয়েও দ্বিগুণ।
বিবিসি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশটিতে ১৯৮১ সালের পর গত ডিসেম্বরে জিনিসপত্রের সর্বোচ্চ মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। ফলে দেশজুড়ে বেড়েছে জীবনযাত্রার ব্যয়।
জাপানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যসামগ্রীর। এছাড়া বিদ্যুৎ ও এয়ার কন্ডিশনারের মতো টেকসই পণ্যের দামও বেড়েছে।
এদিকে, গত বছরের অক্টোবরেই ৩২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দরপতন ঘটে ইয়েনের। ওই মাসে এক মার্কিন ডলারের বিপরীতে জাপানি মুদ্রার মান দাঁড়ায় ১৫১ ইয়েন। যদিও এখন ডলারের মান ১৪০ ইয়েনের আশেপাশে। জ্বালানির দাম বৃদ্ধিকেই এর জন্য দায়ী করেছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
অর্থনৈতিক গবেষক ও জাপান ইক্যুইটি রিসার্চের প্রধান ডামিয়ান থং বলেছেন, উৎপাদকের খরচে সাথে পাল্লা দিয়ে ভোক্তাদের খরচও বাড়ছে কিন্তু বর্তমানে কোম্পানিগুলো ভোক্তাদের ওপরই খরচ চাপাচ্ছে। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে ও জীবনযাপনের খরচ কমাতে জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ভবিষ্যতে সুদের হার আরও বাড়াতে হতে পারে।
উল্লেখ্য, মুদ্রাস্ফীতি মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশ সুদহার বাড়ালেও সে পথে হাঁটেনি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। বরং প্রবৃদ্ধির জন্য তারা সুদহার অতি নিম্ন রাখা অব্যাহত রেখেছে।
পরিসংখ্যান বলছে, অন্যান্য উন্নত দেশ যেমন- যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় জাপানে মূল্যস্ফীতির হার তুলনামূলক কম হলেও, তা জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আশঙ্কা বা অনুমানকে ছাড়িয়ে গেছে। বিষয়টিকে অনেকে দেশটির কয়েক দশকের অর্থনৈতিক স্থবিরতার প্রতিফলন বলে মনে করছেন।
সর্বশেষ সরকারী পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতি ছিল ৬.৫ শতাংশ যেখানে ইউরোজোনে ৯.২ শতাংশ এবং যুক্তরাজ্যে ১০.৫ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতি ছিল।
সূত্র: আলজাজিরা, বিবিসি