ঢাকাসোমবার , ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • অন্যান্য
  1. অর্থনীতি
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. জীবনধারা
  6. বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
  7. বিনোদন ভুবন
  8. বিবিধ
  9. ভিডিও নিউজ
  10. রাজধানী
  11. রাজনীতি
  12. শিক্ষা
  13. সর্বশেষ
  14. সারাবাংলা
  15. স্বাস্থ্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বিশ্বে প্রথম কৃত্রিম গর্ভের সুবিধা, থাকছে সন্তানের উচ্চতা ও বুদ্ধিমত্তা নির্ধারণের সুবিধা

নিজস্ব প্রতিবেদক
জানুয়ারি ১৪, ২০২৩ ১২:০২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

জার্মানির বায়োটেকনোলজিস্টরা কৃত্রিম গর্ভ সুবিধা নিয়ে এসেছেন। যা বিশ্বে এই প্রথম। এই প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় সুবিধা সন্তানের বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করা। ইকটোলাইফের এই প্রযুক্তির মাধ্যমে বছরে ৩০ হাজার সন্তান উৎপাদন করা সম্ভব হবে। বলা হচ্ছে ৫০ বছর ধরে গবেষণার মাধ্যমে এ প্রযুক্তির উদ্ভাবন করা হয়েছে। স্ট্যাডি ফাইন্ডস, চ্যানেল ২৪ 

এই প্রযুক্তির ধারণা প্রবর্তন করেন হাশেম আল-গাইলি। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে সেই সব দম্পতি বাবা-মা হওয়ার সুযোগ পাবেন যারা কখনও সন্তান ধারণ করতে সক্ষম হবেন না। শুধু তাই নয় এই প্রযুক্তির মাধ্যমে বায়োলজিক্যালভাবেই পিতামাতা হওয়া যাবে।  

একে বলা হচ্ছে ‘এলিট প্যাকেজ’। কৃত্রিম গর্ভে প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে প্রথম ভ্রুণকে ‘জেনেটিক্যালভাবে ইঞ্জনিয়ার’ করা হবে। অর্থাৎ ল্যাবরেটরিতে ভ্রুণকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হবে। চোখ, চুলের রং, শিশুর শক্তি, উচ্চতা এবং বুদ্ধিমত্তার মতো বিষয়গুলো এখানে নির্বাচনের সুযোগ থাকবে। এছাড়া কৃত্রিম গর্ভের মাধ্যমে শিশুর বংশগত যে রোগ রয়েছে তা এড়ানো যাবে।

ইকটোলাইফ (EctoLife) হলো বিশ্বে প্রথম কৃত্রিম গর্ভের সুবিধা। এটি নবায়ণযোগ্য শক্তির মাধ্যমে চালিত হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে বিশ্বব্যাপী গর্ভকালীন বিভিন্ন জটিলতায় প্রায় ৩ লাখ নারীর মৃত্যু হয়। কিন্তু ইকটোলাইফ কৃত্রিম গর্ভ এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যেখানে নারীদের এ ধরনের সমস্যা আর থাকবে না। এছাড়া সি সেকশনের মতো জটিলতা দূর হবে। এছাড়া এই প্রযুক্তির মাধ্যমে অপরিপক্ক বাচ্চা প্রসব সমস্যা রোধ করা যাবে। 

হাশেম বলেন, জরায়ু ক্যান্সার এবং অন্যান্য জটিলতার কারণে অনেক নারী অপারেশনের মাধ্যমে জরায়ু ফেলে দেয়। এর ফলে নারীরা আর মা হতে পারেন না। কিন্তু নতুন এ প্রযুক্তি এ ধরনের নারীদের ক্ষেত্রে ব্যাপক সুবিধা বয়ে আনবে। বিশেষ করে জাপান, বুলগেরিয়া, দক্ষিণ কোরিয়াসহ অন্যান্য দেশের নারীদের এ ধরনের জটিলতা বেশি দেখা যায়। 

হাশেম আরও বলেন, আগামী ১০ থেকে ১৫ বছরের পর নারীরা এই প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে বেশি ঝুকে পড়বেন। ইতোমধ্যে গবেষণার মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা এবং বায়োটেনলোজিস্টরা এ প্রযুক্তি নিয়ে ১০০ শতাংশ সফলতা অর্জন করেছে। তবে সবগুলো ফিচার একসঙ্গে করে একটি প্রোটোটাইপ তৈরি করার ক্ষেত্রে মাত্র একটি উপাদান বাকী আছে। 

হাশেম বলেন, নৈতিকতার উপর সব মানদণ্ড নির্ভর করবে। বর্তমান সময়ে মানব ভ্রুণ নিয়ে ১৪ দিনের বেশি গবেষণার সুযোগ নেই। কারণ নৈতিকতার জায়গা থেকে ১৪ দিন পর মানব ভ্রুণ নষ্ট করে দিতে হবে। যখন এই নৈতিকতার নীতি উঠে যাবে তখন নারীরা ইকটোলাইফ প্রযুক্তির প্রতি বেশি আকৃষ্ট হবে। এবং শিক্ষাক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি ব্যাপক গুরুত্ব পাবে। 

এই সুবিধার মধ্যে ৭৫টি অত্যন্ত সজ্জিত ল্যাব রয়েছে, যার প্রতিটিতে ৪০০টি পর্যন্ত গ্রোথ পড বা কৃত্রিম গর্ভধারণ করা যায়। প্রতিটি পড মায়ের জরায়ুর ভিতরে বিদ্যমান সঠিক অবস্থার প্রতিলিপি করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। একটি একক ল্যাব থেকে প্রতি বছর ৩০ হাজার শিশুর জন্ম হবে। 

কৃত্রিম গর্ভ/ছবি: সংগৃহীত

পডগুলো একটি স্ক্রিন দিয়ে সজ্জিত যা শিশুর বিকাশের অগ্রগতির রিয়েল-টাইম ডেটা প্রদর্শন করবে। আর এসব ডেটা ফোন অ্যাপের মাধ্যমে দম্পত্তিকে জানিয়ে দেওয়া হবে। 

ইকটোলাইফ এর মাধ্যমে শিশুকে কোনো ধরনের ইনফেকশন স্পর্শ করতে পারবে না। পটগুলো এমনভাবে তৈরি যেখানে কোনো ধরনের জিবাণু প্রবেশ করতে পারবে না। প্রত্যেকটি পডে এমন সেন্সর যুক্ত করা হয়েছে যার মাধ্যমে শিশুটির হার্টবিট, তাপমাত্রা, রক্তের চাপ, বেড়ে ওঠার হার, এবং অক্সিজেনের মাত্র কত রয়েছে তা দেখা যাবে। 

এছাড়া শিশু যাতে বাইরের পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারে এবং সহজে ভাষা রপ্ত করতে পারে এজন্য এতে এমন প্রযুক্তি যুক্ত করা হয়েছে যার মাধ্যমে শিশুর মস্তিষ্কে শব্দ পৌছতে পারবে। এক্ষেত্রে একটি স্পিকার ব্যবহার করা হবে। যেটিতে বিভিন্ন শব্দ এবং বাজনা থাকবে। এই প্রযুক্তির অন্যতম উদ্দেশ্য একটি বুদ্ধিমান শিশুর জন্মদান।

কৃত্রিম গর্ভের পটগুলো দুটো কেন্দ্রীয় বায়োরিয়্যাক্টরের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। প্রথম বায়োরিয়্যাক্টরে রয়েছে পুষ্টি এবং অক্সিজেন, যা একটি কৃত্রিম নাভির মাধ্যমে শিশুকে সরবরাহ করা হবে। এই বায়োরিয়াক্টরে একটি তরল দ্রবণও রয়েছে যা অ্যামনিওটিক তরল হিসাবে কাজ করে। এটি মূলত মায়ের জরায়ুতে শিশুদের ঘিরে থাকে। অর্থাৎ এই পটগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যেখানে মায়ের গর্ভে যেসব উপাদান থাকবে তার সবকিছুই এখানে বিদ্যমান থাকবে। 

দ্বিতীয় বায়োরিয়্যাক্টরটি শিশুদের দ্বারা উৎপাদিত যে কোনো বর্জ্য পণ্য নির্মূল করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, যা একটি কৃত্রিম নাভির মাধ্যমে স্থানান্তরিত হবে। ইঞ্জিনিয়ারড এনজাইমগুলো একটি সূক্ষ্মস্তরের সাহায্যে বর্জ্য পণ্যগুলোকে পুনর্ব্যবহার করতে পারে এবং তাদের দরকারী পুষ্টিতে ফিরিয়ে আনতে পারে। 

এ প্রক্রিয়ায় শিশু জন্মদানের বিষয়টি খুবই মজার। যখন কৃত্রিম গর্ভের মধ্যে শিশুটির বয়স নির্দিষ্ট পর্যায়ে পৌঁছবে তখন তখন একটি বাটন প্রেস করে শিশুটির প্রসব কার্যক্রম সম্পন্ন হবে।