একটি চক্র অবৈধ পথে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র চোরাচালানের মাধ্যমে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রয় করছিল। চক্রটি চোরাচালানকৃত অবৈধ অস্ত্র অভিনব কৌশলে ভুয়া ও জাল লাইসেন্স তৈরির মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে বিক্রি করতো। সেইসঙ্গে বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা সংক্রান্ত চাকরি প্রদানে আকৃষ্ট করে আগ্রহীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিলো।
এমন একটি চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-২। সোমবার রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- চক্রের মূলহোতা মো. পলাশ শেখ (৩৮), তার সহযোগী মো. মনোয়ার হোসেন (৩২), রশিদুল ইসলাম (৪০), নাজীম মোল্লা (৩৫), মারুফ হোসেন (২৪) ও মো. নাইমুল ইসলাম (২২)।
তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমান দেশি-বিদেশি অস্ত্র, গোলাবারুদ ও ভুয়া লাইসেন্স উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব এই চক্রের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-২ এর একটি যৌথ আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে।
তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অস্ত্র কেনাবেচা এবং জাল লাইসেন্স তৈরী করে আসছিল।
গ্রেপ্তারকৃতরা আরও জানিয়েছে, চক্রটি অবৈধ পথে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র চোরাচালান করতো। পরে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে অভিনব কৌশলে ভুয়া ও জাল লাইসেন্স তৈরির মাধ্যমে অবৈধ অস্ত্র বিক্রয়ের জন্য বেসরকারী বিভিন্ন স্বনামধন্য নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা সংক্রান্ত চাকরি প্রদানে আকৃষ্ট করে আগ্রহীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিত।
র্যাব কর্মকর্তা বলেন, চক্রটির মূলহোতা গ্রেপ্তার পলাশ। এই চক্রের সদস্য সংখ্যা ৪-৫ জন। এই চক্রটির মূল কাজ ছিল পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে অবৈধ অস্ত্র সংগ্রহ এবং ভুয়া লাইসেন্স তৈরী করে বিভিন্ন বেসরকারী সিকিউরিটি কোম্পানীতে চাকুরী দেয়ার প্রলোভনের মাধ্যমে বিভিন্ন বিপুল পরিমান অর্থের বিনিময়ে অবৈধ অস্ত্র বিক্রয় করা। চক্রটি পার্শ্ববর্তী দেশ হতে রিভলবার, পিস্তল ও এক নলা বন্দুকসহ বিভিন্ন ধরণের আগ্নেয়াস্ত্র অবৈধ পথে দেশে নিয়ে আসে। পরে আগ্রহী চাকুরী প্রার্থীদের কাছে জাল লাইসেন্সসহ অবৈধ অস্ত্র বিক্রি করে এবং চাকুরি দিয়ে থাকে।
এই চাকুরী প্রদানের জন্য জন প্রতি ২-৩ লাখ টাকা পযর্ন্ত নিয়ে থাকে। অবৈধ অস্ত্র ও ভুয়া লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সিকিরিউটি গার্ড হিসাবে চাকরি করত। এছাড়াও চক্রটি বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কাছে চড়া দামে জাল লাইসেন্স তৈরি করে অবৈধ অস্ত্র বিক্রি করত বলে জানা যায়।
গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।