ঢাকাবুধবার , ৮ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  • অন্যান্য
  1. অর্থনীতি
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. জীবনধারা
  6. বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
  7. বিনোদন ভুবন
  8. বিবিধ
  9. ভিডিও নিউজ
  10. রাজধানী
  11. রাজনীতি
  12. শিক্ষা
  13. সর্বশেষ
  14. সারাবাংলা
  15. স্বাস্থ্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

পারমাণবিক বিদ্যুৎ যুগের ইতি টানল জার্মানি

নিজস্ব প্রতিবেদক
এপ্রিল ১৫, ২০২৩ ১১:৩৭ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

পারমাণবিক বিদ্যুৎ যুগের ইতি টেনেছে ইউরোপের শিল্পোন্নত দেশ জার্মানি। স্থানীয় সময় শনিবার জার্মানির শেষ তিনটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রকেও জাতীয় গ্রিড থেকে বিচ্ছিন্ন করা হবে। এর মধ্য দিয়ে জ্বালানির উৎস হিসেবে প্রচলিত পারমাণবিক বিদ্যুৎ চিরকালের জন্য ত্যাগ করছে দেশটি।

জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জার্মানিতে প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৬৭ সালে। এরপর বিভিন্ন সময় দেশটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করার কথা ভেবেছে। সর্বশেষ ছয় মাস আগে পারমাণবিক বিদ্যুৎ থেকে সরে আসার কথা ছিল দেশটির। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে ওই সময়সীমা কিছুটা বাড়ানো হয়।

পারমাণবিক বিদ্যুতের ব্যবহার নিয়ে জার্মানির জোট সরকারের মধ্যে দ্বন্দ্ব পুরোপুরি কাটেনি। পরিবেশবাদী সবুজ দল গত বছরই শেষ তিনটি কেন্দ্র বন্ধের সিদ্ধান্তে অটল থাকলেও উদারপন্থী এফডিপি দল জ্বালানি সংকট এড়াতে অনির্দিষ্টকালের জন্য সেগুলো চালু রাখার পক্ষে যুক্তি দিয়েছিল। সে সময় চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস নিজের বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে চলতি এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

এফডিপি সেই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করলেও ওলাফ শলৎস নিজের সিদ্ধান্তে এখনো অটল। এমনকি কেন্দ্রগুলো অকেজো করার বদলে রিজার্ভ হিসেবে রেখে দেয়ার প্রস্তাবও নাকচ করে দিয়েছেন তিনি। সবুজ দলের নেতৃত্বে পরিবেশ মন্ত্রণালয় মনে করিয়ে দিয়েছে যে, জার্মানির শেষ তিনটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র রিজার্ভ হিসেবে রাখা বেআইনি পদক্ষেপ হবে। এ ছাড়া এগুলো অকেজো করার প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রাশিয়া থেকে গ্যাস সরবরাহ কার্যত বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর জার্মানিতে জ্বালানি–সংকটের আশঙ্কা বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু সরকারের তৎপরতায় দ্রুত বিকল্প উৎসের ব্যবস্থা হওয়ায় ব্ল্যাকআউট বা কোনো অঘটন ঘটেনি। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির ধাক্কাও মোটামুটি সামলে নেয়া গেছে। ফলে পারমাণবিক বিদ্যুতের ওপর নির্ভরতার আর কোনো কারণ দেখছেন না বেশির ভাগ বিশেষজ্ঞ।

জার্মানির জ্বালানি প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো পারমাণবিক বিদ্যুৎ বন্ধ হওয়ার পর ঘাটতি পূরণ করতে আরও দ্রুতগতিতে গ্যাসচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলার ডাক দিয়েছে। কেন্দ্রীয় সংগঠনের মতে, দীর্ঘ মেয়াদে জ্বালানির সরবরাহ নিশ্চিত করতে এমন পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি। ভবিষ্যতে এমন কেন্দ্র গ্যাসের বদলে হাইড্রোজেন দিয়েও চালানো সম্ভব হতে পারে। তবে এমন কেন্দ্রে বিনিয়োগের জন্য সরকার কোনো উৎসাহ না দেয়ায় সেই উদ্যোগে গতি আসছে না।

এদিকে শনিবার বিদ্যুতের গ্রিড থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরও তিনটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পুরোপুরি বন্ধ হবে না। অনেক দিন ধরে সেই কাজের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। নিরাপদে সেই প্রক্রিয়া চালাতে ধীরে ধীরে চুল্লিগুলো ঠাণ্ডা করতে হবে। পানি ভরা চুল্লির মধ্য থেকে ফুয়েল এলিমেন্ট বের করে নিতে হবে। কেন্দ্র ভেঙে ফেলার বিভিন্ন পর্যায়ের জন্য বিশেষ অনুমতির প্রয়োজন রয়েছে। কেন্দ্রগুলো পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হতে বেশ কয়েক বছর, এমনকি কয়েক দশকও সময় লাগতে পারে।

জাপানের ফুকুশিমা পারমাণবিক কেন্দ্রে বিপর্যয়ের পর জার্মান সরকার ২০১১ সালে পারমাণবিক বিদ্যুৎ পুরোপুরি বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয়। এর আগে ২০০২ সালেও তৎকালীন সরকার নীতিগতভাবে সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পর নতুন করে কোনো কেন্দ্রের অনুমতি দেয়া হয়নি।