যুক্তরাজ্যের রাজা ও রানীর সদ্য-মুকুটধারী চার্লস (তৃতীয়) ও ক্যামিলা রাজ্যাভিষেকের আনুষ্ঠানিকতা শেষে গির্জা থেকে বের হয়ে বাকিংহাম প্রাসাদে ফিরে গেছেন। রাজা ও রানী গোল্ড স্টেট কোচে প্রবেশ করে প্রাসাদের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। এ সময় গির্জার ঘণ্টা ও ট্রাম্পেট বাজছিল।
বিরতির পর তারা ফ্লাইপাস্ট দেখার জন্য রাজপরিবারের সদস্যদের সঙ্গে প্রাসাদের ব্যালকনিতে হাজির হবেন বলে জানা গেছে।
এর আগে যুক্তরাজ্যের রাজা হিসেবে শপথ নিয়ে মুকুট পরেন তৃতীয় চার্লস। একই সঙ্গে রানী হিসেবে রাজ্যাভিষেক হয় চার্লসের স্ত্রী কুইন কনসোর্ট ক্যামিলারও।
মুকুট পরার পর প্রিন্স উইলিয়াম তার পিতাকে আনুগত্যের শপথ হিসেবে নতজানু হয়ে ঐতিহ্যবাহী শ্রদ্ধা জানালে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন চার্লস।
এ সময় উইলিয়াম বলেন, ‘আমি উইলিয়াম, প্রিন্স অব ওয়েলস, আপনার প্রতি আমার আনুগত্য ও বিশ্বাসের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। আমি আপনার প্রতিনিধি হিসেবে আপনাকে বহন করব। ঈশ্বর আমাকে সাহায্য কর।’
তারপর তিনি দাঁড়িয়ে চার্লসের মুকুট স্পর্শ করেন এবং তার গালে চুম্বন করেন। চার্লস অভিভূত হয়ে তার ছেলের দিকে মাথা নেড়ে বলেন, ‘আমেন, আপনাকে ধন্যবাদ উইলিয়াম।’
কয়েক মিনিট পর ক্যামিলার মাথায়ও রানীর মুকুট পরানো হয় এবং রানী হিসেবে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সিংহাসনে বসেন।
ক্যান্টারবুরির আর্চবিশপ জাস্টিন ওয়েলবি রানীর মাথায় কুইন মেরির মুকুট পরিয়ে বলেন, ‘আপনার দাস ক্যামিলা, যিনি এই মুকুট পরিধান করেছেন, আপনার অনুগ্রহে এবং সমস্ত রাজকীয় গুণাবলিতে পরিপূর্ণ হোক।’
১৯১১ সালে জর্জ পঞ্চমের রাজ্যাভিষেকের জন্য মুকুটটি চার্লসের দাদি কুইন মেরির জন্য তৈরি করা হয়েছিল।
ডোভারের বিশপ তখন রানীকে ডোভের সঙ্গে রড ও লর্ড চার্টেসের ক্রসসহ রাজদণ্ড উপস্থাপন করেন।
রাজা চার্লস তিন বছর বয়স থেকে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী ছিলেন। মুকুট পরানোর আগে তাকে পবিত্র তেল দিয়ে অভিষিক্ত করা হয়েছিল।
মুকুট পরার কয়েক মিনিট আগে চার্লস বাইবেল নিয়ে শপথ করেছিলেন এবং চুম্বন করেছিলেন।
ক্যান্টারবুরির আর্চবিশপ জাস্টিন ওয়েলবি রাজা চার্লসের শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।
শপথ বাক্যে চার্লস বলেন, ‘আমি চার্লস, ঈশ্বরের সামনে আন্তরিকতার সঙ্গে স্বীকার করছি, সাক্ষ্য দিচ্ছি এবং ঘোষণা করছি যে, আমি একজন বিশ্বস্ত প্রোটেস্ট্যান্ট এবং আমি সেই অনুযায়ী কাজ করব। সিংহাসনে প্রোটেস্ট্যান্ট উত্তরাধিকার সুরক্ষিত আইনের প্রকৃত অভিপ্রায় আমার সর্বোত্তম ক্ষমতায় বহাল এবং বজায় রাখব।’
চার্লস মুকুট পরার পর হ্যারিকে তার আশপাশের রাজপরিবারের অন্যান্য সদস্যের সঙ্গে বলতে শোনা যায়, ‘ঈশ্বর রাজা চার্লসকে রক্ষা করুন। দীর্ঘজীবী হোক রাজা চার্লস। রাজা চিরকাল বেঁচে থাকুক।’
এর আগে রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যুক্তরাজ্যের ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে পৌঁছান ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস এবং তার স্ত্রী কুইন কনসোর্ট ক্যামিলা। বাকিংহাম প্যালেস থেকে একটি ঘোড়ার গাড়িতে করে শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে পৌঁছান তারা।
এদিকে রাজা চার্লসের রাজ্যাভিষেকে যোগ দিতে দেশ-বিদেশের নেতা ও তারকারাও ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে জড়ো হয়েছেন। বিশ্বের প্রায় ১০০টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর তাঁর বড় ছেলে চার্লস যুক্তরাজ্য এবং আরও ১৫টি দেশের রাজা হন।
সূত্র : ডেইলি মেইল