স্মার্ট ফারমার্স কার্ড দেশের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের প্রান্তিক খামারিদের স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় অন্তর্ভুক্ত করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
বুধবার (২১ জুন) সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে ব্র্যাক ব্যাংকের উদ্যোগে খামারিদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে স্মার্ট ফারমার্স কার্ড উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ব্র্যাক ব্যাংক ও ভিসার যৌথ উদ্যোগে খামারিদের এ স্মার্ট ফারমার্স কার্ড তথা ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড প্রদান করা হচ্ছে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক মো. মোতাছিম বিল্লাহ। ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম আর এফ হোসেন এবং বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ ইমরান হোসেন অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করেন।
এ সময় মন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ইতোমধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর করেছেন। ডিজিটালাইজড ব্যবস্থায় আমরা অনেক উপকৃত হয়েছি। করোনাকালে মাঠ পর্যায়ের যোগাযোগসহ সরকারি সব কার্যক্রম ডিজিটালাইজড ব্যবস্থায় করা হয়েছে। মন্ত্রী যোগ করেন, প্রান্তিক পর্যায়ের একজন কৃষক এখন ঢাকায় বাজারদর জানার সুযোগ পান। ঢাকার একজন ক্রেতা এখন ভিডিওকলে প্রান্তিক পর্যায়ের খামার দেখেন এবং খামারির সাথে যোগাযোগ করেন, একজন উৎপাদক দেখেন বাজারে আজ সর্বোচ্চ মূল্য কতো আছে। এসব ব্যবস্থা এগিয়ে নিয়ে এসেছে ডিজিটাল পদ্ধতি। এ পদ্ধতি এখন দেশের গ্রাম-গঞ্জে ও একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে গেছে। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এ ডিজিটালাইজড ব্যবস্থাকে আরও আধুনিক করা সরকারের লক্ষ্য। স্মার্ট বাংলাদেশে আমাদের সব কাজ হবে স্মার্ট। এর অংশ হিসেবে ব্র্যাক ব্যাংকের উদ্যোগে খামারিদের স্মার্ট ফারমার্স কার্ড প্রদানের উদ্যোগ খুবই প্রশংসনীয়। শ ম রেজাউল করিম আরও বলেন, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সবাইকে সম্পৃক্ত হতে হবে।
সরকারের পাশাপাশি ব্যবসায়ী,খামারি, সাধারণ নাগরিক সবার রাষ্ট্রের প্রতি দায়িত্ব রয়েছে। রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যেমন নাগরিকের জন্য কর্তব্য রয়েছে, নাগরিক এর পক্ষ থেকেও রাষ্ট্রের প্রতি দায়িত্ব রয়েছে। রাষ্ট্র যদি বন্ধুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারণ না করতো, আন্তরিক না হতো তাহলে ব্যাংকের বিকাশ হতো না। দেশে বেসরকারি খাতে যত ব্যাংক হয়েছে, এটা হতে পারতো না। ব্যাংকিং খাতে সরকার সবধরণের সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে, সহযোগিতা করছে। এজন্য ব্যাংক যেন সবসময় ব্যবসা করার প্রতিষ্ঠান না হয়, ব্যাংকের কর্মকাণ্ড সেবাধর্মী হতে হবে। মন্ত্রী আরও বলেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে, কৃষি খাতে ব্যাংকগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। প্রান্তিক পর্যায়ের একজন বিপন্ন খামারিকে উঠে দাঁড়াতে সহায়তা করা ব্যাংকগুলোর দায়িত্ব। মনে রাখতে হবে কাউকে পেছনে রেখে উন্নয়ন কখনোই কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন নয়। এ জন্য শহরের সুযোগ-সুবিধা সরকার এখন গ্রামে পৌঁছে দিচ্ছে।
সম্মিলিতভাবে কৃষি খাতে, কৃষক ও খামারিদের সহযোগিতার হাত সম্প্রসারণ করতে হবে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। স্মার্ট ফারমার্স কার্ড এরই উদাহরণ। আশা করি খামারিরা এর মাধ্যমে ঝামেলাহীন লেনদেন করতে পারবে। এটাই আধুনিকায়ন। তবে এ কার্ড যেন ক্ষুদ্র খামারিদের সহায়ক হয়, এটা লক্ষ্য রাখতে হবে। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে খামারিরা যাতে সহজ শর্তে ঋণ পায়, এ ব্যাপারে আরও যত্নবান হতে হবে।