ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে বিচারে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান বা আইন করার দাবিতে সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে নোটিশে হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর বিষয়ে কটূক্তি ও অবমাননাকর মন্তব্য করার অভিযোগেও সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান করার দাবি জানানো হয়েছে।
সোমবার রাজধানীর শান্তিবাগের বাসিন্দা মো. আরিফুর রহমানের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জে আর খান রবিন এই নোটিশ পাঠান। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (ডিজি) ও পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) এ নোটিশ পাঠানো হয়।
নোটিশে বলা হয়েছে, ২০১৩ সালে ব্লাসফেমি আইনের আদলে বাংলাদেশে আইন তৈরির দাবি জানানো হয় বাংলাদেশি আলেম ওলামাদের পক্ষ থেকে। বিশ্বের অনেক দেশে ধর্মীয় অবমাননা, বিশেষ করে ইসলাম ধর্মের অবমাননার বিরুদ্ধে কঠোর আইন রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ‘কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম’এর ২০১৭ সালের রিপোর্টে ৭১টি দেশের তালিকা উঠে আসে, যেখানে ব্লাসফেমি আইন রয়েছে। এই আইনের অধীনে কোনও কোনও ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। যুক্তরাষ্ট্রের ‘লাইব্রেরি অব কংগ্রেস’ এর তথ্যানুযায়ী, ২০১৭ সালে ৭৭টি দেশের আইনে ‘ব্লাসফেমি, ধর্ম অবমাননা, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও অনুরূপ আচরণ’কে অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। বলা হয় ইসলামিক দেশগুলোতে ব্লাসফেমি আইনের অনুশীলন হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। তবে এই ধরনের আইন ইউরোপসহ বিশ্বের অনেক জায়গায়ই কার্যকর রয়েছে।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের আইনে বলা হয়েছে- ধর্ম অবমাননা এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে বিবেচিত হবে। কোনও ধর্মীয় স্থানের ক্ষতি সাধন, অসম্মান করা, লিখিত বা মৌখিকভাবে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা তৈরি, অসম্মান করার উদ্দেশ্যে ধর্মীয় স্থানে অনধিকার প্রবেশ বা ধর্মীয় বাক্য বা শব্দের বিকৃতি ধর্মীয় অবমাননা বলে গণ্য হবে।
নোটিশে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের আইন কোনও নির্দিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের জন্য নয়। সব ধর্মের অনুসারীরাই তাদের ধর্মানুভূতি আহত হলে এই আইনের দ্বারস্থ হতে পারেন। তবে বাংলাদেশের আইনে ধর্মানুভূতি আঘাত করার অভিযোগে মামলা করার বা বিচার প্রক্রিয়ায় শাস্তির উদাহরণ বেশি নেই।
ধর্ম অবমাননা কিংবা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অপরাধগুলো আমাদের বিদ্যমান আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়ে আসছে বহু বছর আগে থেকেই। দণ্ডবিধি ও ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের বিভিন্ন ধারায় ধর্ম অবমাননার যে শাস্তি ছিল ২০০৬ সালে এসে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে সেই শাস্তি আরও বাড়ানো হয়েছে। তাই যৌক্তিক সময়ের মধ্যে এ বিষয়ে যথাযথ বিধান বা আইন প্রণয়ন করতে নোটিশে অনুরোধ জানানো হয়েছে। অন্যথায় প্রতিকার চেয়ে নোটিশ প্রেরণকারী উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ব্যতীত ব্যবহার বেআইনি ।
2023 DailyNews24BD.com