দেশে দক্ষ জনবলের অভাবে বিদেশি অনেক কর্মী এখানে কাজ করছেন। যারা বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর বেতন-ভাতা হিসেবে বছরে ৮ থেকে ১০ বিলিয়ন ডলার নিয়ে যাচ্ছে।
শনিবার ডিসিসিআই আয়োজিত শিল্প-শিক্ষাখাতের সমন্বয়: পরিবর্তশীল বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি শীর্ষক সেমিনারে এ বক্তব্য উঠে আসে।
সেমিনারে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) সভাপতি মো. সামীর সাত্তার বলেন, আমাদের শিল্পখাত দক্ষ জনবলের অভাবে অনেক বিদেশি কর্মী কাজ করছেন। যারা প্রতি বছর বেতন-ভাতা হিসেবে বছরে ৮ থেকে ১০ বিলিয়ন ডলার নিয়ে যাচ্ছে। এ জন্য আমাদের গুণগত শিক্ষাব্যবস্থার অনুপস্থিতি ও দক্ষ জনশক্তির অভাবকে দায়ী করা হয় এবং দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে শিক্ষা ও শিল্পখাতের সমন্বয় বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই।
ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এনএসডিএ)-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান নাসরীন আফরোজ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, সরকারের ‘স্মার্ট বাংলাদেশ-এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং ক্রমাগত পরিবর্তনশীল চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের জনগোষ্ঠীকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। শিল্পখাতের প্রয়োজনের নিরিখে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিকল্পে শিক্ষা ও শিল্পখাতের সমন্বয় আরও জোরদারের কোনো বিকল্প নেই। তবে বাংলাদেশে এ সমন্বয়ের অভাব অত্যন্ত প্রকট, যার ফলে আমাদের তরুণ জনগোষ্ঠীকে শিল্পখাতের জন্য দক্ষ করে গড়ে তোলা সম্ভব হচ্ছে না এবং এর প্রভাব প্রতিফলিত হচ্ছে সামগ্রিক আর্থনীতিতে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, শিক্ষা ও শিল্পখাতের সমন্বয় নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত আলোচনা হচ্ছে, এখন সময় এসেছে সেটিকে বাস্তাবে রূপ দেয়ার এবং এ জন্য সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ অতীব জরুরি। আমাদের শিক্ষা ও শিল্পখাতের মধ্যে কিছুটা আস্থার ঘাটতি আমরা পরিলক্ষিত করছি, যার নিরসন একান্ত আবশ্যক।
তিনি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি ‘রপান্তর পরিবর্তন’ আনয়নের লক্ষ্যে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং এ ব্যাপারে সবার সহযোগিতা কামনা করেন। দেশে জনবল তৈরির লক্ষ্যে একিট ইকো-সিস্টেম প্রণয়ন করতে হবে, যাতে করে ম্যাপিং-এর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।
নাসরীন আফরোজ বলেন, পরিবর্তনশীল বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে আমাদের শিক্ষার্থীদের উপযোগী ও দক্ষ করে তোলতে শিক্ষা ও শিল্প খাত এবং সরকারের সমন্বয় একান্ত অপরিহার্য এবং এলক্ষ্যে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি জানান, এরইমধ্যে এনএসডিতে ১৪টি পরিষদ গঠন করা হয়েছে, যেখান থেকে সমসাময়িক বিষয়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হচ্ছে।
আলোচকবৃন্দ বলেন, সব স্তরে মানসম্মত শিক্ষা কার্যক্রম নিশ্চিতকরণ, নীতি সহায়তা ও বিদ্যমান আইনের সংস্কার, গবেষণা ও উন্নয়নে খাতে আর্থিক প্রণোদনা প্রদানের পাশাপাশি বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি, শিক্ষা ও শিল্পখাতের মিথস্ক্রিয়া বাড়ানো, কাজের ক্ষেত্রে মানসিকতার পরিবর্তন এবং অবকাঠামোর উন্নয়নের ওপর জোরারোপ করেন।