ঢাকাসোমবার , ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • অন্যান্য
  1. অর্থনীতি
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. জীবনধারা
  6. বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
  7. বিনোদন ভুবন
  8. বিবিধ
  9. ভিডিও নিউজ
  10. রাজধানী
  11. রাজনীতি
  12. শিক্ষা
  13. সর্বশেষ
  14. সারাবাংলা
  15. স্বাস্থ্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

রাজমিস্ত্রি জুয়েল এখন বিসিএস ক্যাডার

নিজস্ব প্রতিবেদক
আগস্ট ৫, ২০২৩ ২:৫২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

নূন আনতে পান্তা ফুরায়। টানাটানির সংসার। এ অবস্থায় মাত্র আট বছর বয়সে দিনমজুর বাবা মারা যাওয়ায় সংসারের হাল ধরতে হয় তাকে। এর মধ্যে নিজের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া দুঃসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।

অভাব ও শত কষ্টের মধ্যে থেকেও দমে যায়নি। করেছে রাজমিস্ত্রির কাজ। এর পাশাপাশি টিউশনি করে নিজের লেখাপড়ার খরচ যুগিয়েছে। এবার সদ্য প্রকাশিত ৪১ তম বিসিএসে প্রকৌশলী ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন নাটোরের লালপুর উপজেলার সেই রাজমিস্ত্রি জুয়েল আলী।


জুয়েল উপজেলার দক্ষিণ লালপুর গ্রামের মৃত হাসান মোল্লার ছেলে। তিনি লালপুর শ্রীসুন্দরী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও লালপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। পরে রাজশাহী প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিভিল বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেন।

জুয়েলের মা জামেলা বেগম জানান, স্বামী মারা যাওয়ার পর অর্থাভাবে বার বার ছেলের পড়াশোনা বন্ধ করতে হয়েছে। তবে বিভিন্ন সময় ভালো রেজাল্ট করার কারণে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা পাওয়ায় সেইসব টাকা দিয়ে লেখাপড়া করেছে, নিজে টিউশনি করেছে। খুব কষ্ট করে লেখাপড়া শিখেছে।  কষ্টের দিনগুলো তার এখন শেষ হয়েছে, আমার ছেলের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।

দীর্ঘ কষ্টের পথ অতিক্রমের সেই অনুভূতি জানাতে গিয়ে অনেকটা অপ্লুত হয়ে পড়েন জুয়েল। তিনি বলেন, আট বছর বয়সে আমার বাবা মারা যান। তারপর পরিবারের বড় ছেলে হওয়ায় সেই বয়সেই মায়ের পাশাপাশি আমাকেও সংসারে হাল ধরতে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে হয়েছে। কয়েকবার পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। শিক্ষকদের সহযোগিতায় আবারও পড়াশোনা শুরু করি। অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি, এসএসসি ও এইচএসসিতে এ প্লাস পাওয়ার পর থেকে ডাচ বাংলা ব্যাংক ও প্রাকীর্তি ফাউন্ডেশন থেকে বৃত্তি পেয়েছিলাম। এই বৃত্তির মাধ্যমে অনার্স মাস্টার্স শেষ করেছি। পরবর্তীতে বিসিএসের জন্য আমার স্ত্রী মানসিক ও আর্থিকভাবে সাপোর্ট দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমি সব সময় চাইতাম মায়ের মুখে হাসি ফোটাবো। একটা সরকারি চাকরি পাওয়ার স্বপ্ন ছিল। ভালো পোশাক, ভালো খাওয়া-দাওয়া এসব অতটা আশা করিনি কোনদিন। আজ সাফল্যের চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছে গেছি। দায়িত্ব পালনকালে সব সময় আমি ন্যায় ও নিষ্ঠার সঙ্গে আমার ওপর অর্পিত কাজটা সঠিকভাবে করবো।

প্রাকীর্তি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান নুরিয়া পারভীন জানান, জুয়েল একজন খুবই গরীব পরিবারের সন্তান তবে অনেক মেধাবী। খুব কষ্ট করে তিনি আজ বিসিএস ক্যাডার হয়েছেন। আমরা তার উত্তর উত্তর সাফল্য কামনা করি। যেন সারাজীবন মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারে।