দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ১ লাখ ১৪ হাজার ৫৩৯টি। যার মধ্যে সরকারি ৬৫ হাজার ৫৬৬টি। আর রাজধানীসহ সারাদেশে ৪৭ হাজারের বেশি কিন্ডারগার্টেন স্কুল রয়েছে। এসব স্কুলের ৯০ শতাংশেরই নিবন্ধন নেই। ইচ্ছেমতো তারা চলছে। ছোট জায়গা ভাড়া নিয়ে আলো-বাতাসহীন ভবনে চলছে ক্লাস-পরীক্ষা। গ্রন্থাগার, বিশুদ্ধ পানি ও স্বাস্থ্যকর টয়লেটের ব্যবস্থাও নেই এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।
আগে একটি বিধিমালা থাকলেও সেটি বাস্তবে কাজে দেয়নি। এখন সেটিকে আরও যুগোপযোগী করে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, কিন্ডারগার্টেন স্কুল নিয়ন্ত্রণে গত ফেব্রুয়ারিতে উদ্যোগ নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিধিমালা প্রস্তুত করে তা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সবশেষ আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংও শেষ। এসআরও নম্বর পাওয়ার অপেক্ষা। সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বিধিমালাটি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। আগামী সপ্তাহে ওই বিধিমালা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হতে পারে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বিধিমালা অনুযায়ী- দেশে কিন্ডারগার্টেন, নার্সারি, কেজি ও প্রিপারেটরি স্কুল নামে যেসব প্রতিষ্ঠান রয়েছে, তা আর থাকবে না। সরকারি প্রাথমিক বাদে বাকি সব স্কুল হবে ‘বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’। অনিবন্ধিত এসব স্কুলকে বিধিমালার গেজেট জারির তিনমাসের মধ্যে নিবন্ধন নিতে আবেদন করতে হবে।
জারি হতে যাওয়া এ বিধিমালায় স্কুলে প্রাথমিক অনুমোদন, নিবন্ধন, নবায়ন, শিক্ষক নিয়োগ, ভবনের জমির আয়তন, তহবিল গঠন ও পরিচালনা, ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনের বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। ফলে প্রতিষ্ঠান চালানো মালিকপক্ষ কোনো অজুহাত দেখাতে পারবেন না বলে মনে করছেন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, ফেব্রুয়ারি থেকে আমরা জোরেশোরে এটা (বিধিমালা) নিয়ে কাজ করেছি। এ বিধিমালা এখন চূড়ান্ত। আইন মন্ত্রণালয় থেকে এসআরও নম্বর পেলেই গেজেট জারি হবে। এতে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে পরিচিত হবে কিন্ডারগার্টেন বা নার্সারি স্কুলগুলো। বাংলা-ইংরেজি সব মাধ্যমের স্কুলকে এ বিধিমালা মেনে চলতে হবে। বিধিমালা জারির পর আমরা তিনমাস সময় দেবো। এর মধ্যে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে হবে। যারা আবেদন করবেন না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সচিব বলেন, বেসরকারি পর্যায়ে প্রায় ৪০ হাজারের বেশি প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। এর ৯০ শতাংশই চলছে নিবন্ধন ও অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতি ছাড়া। তবে আমাদের ২০১১ সালের যে বিধিমালা ছিল, তাতে নিবন্ধনের জন্য সচিব পর্যন্ত ফাইল আসতে হতো। এখন এটাকে আমরা সহজ করে দিচ্ছি। উপজেলা শিক্ষা অফিসার তদন্ত করে রিপোর্ট দেবে এবং এর ভিত্তিতে বিভাগীয় উপপরিচালক নিবন্ধন দেবেন।
ফরিদ আহাম্মদ আরও বলেন, গতানুগতিক পদ্ধতিতে আর প্রাথমিকে বৃত্তি দেওয়া হবে না। তবে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ ভাতা দেয়া হবে। কোন পদ্ধতিতে দেয়া হবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এ বিষয়ে কমিটি করা হয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে কমিটির প্রতিবেদন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ব্যতীত ব্যবহার বেআইনি ।
2023 DailyNews24BD.com