বহু অপেক্ষার পর অ্যাপেলপ্রেমীদের জন্য বাজারে এল আইফোন ১৫। শুক্রবার চীন, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে আগ্রহী ক্রেতারা লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে নতুন মডেলের আইফোন হাতে পেয়েছেন। এতদিন ওয়েবসাইটে অর্ডার ও প্রি-অর্ডার সুবিধা থাকলেও শুক্রবার থেকে দোকানে এসেছে আইফোন।
বিশ্লেষকরা জানান, আইফোন ১৫’র প্রি-অর্ডার প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে গেছে। বিশেষত, আইফোন ১৫ প্রো ও প্রো ম্যাক্স মডেলের উচ্চ চাহিদা দেখা গেছে। সরবরাহের তুলনায় চাহিদা বেশি থাকায় প্রি-অর্ডার দেয়া প্রো মডেলের ডিভাইসগুলো ভোক্তার হাতে পৌঁছাতে অক্টোবরের শেষভাগ বা নভেম্বরের মধ্য পর্যন্ত লেগে যেতে পারে।
এমন সময়ে নতুন আইফোন বাজারে এসেছে যখন টানা ৩ প্রান্তিক ধরে অ্যাপলের বিক্রি কমেছে। সর্বশেষ প্রান্তিকে অ্যাপলের রাজস্ব ছিল ৩৯ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার, যা এর আগের বছরের তুলনায় প্রায় ২ শতাংশ কম।
বিশ্লেষক ওয়েডবুশের প্রাক্কলন মতে, ৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে ২৫০ মিলিয়ন আইফোন ব্যবহারকারী তাদের পুরনো ডিভাইস পরিবর্তন করেননি। নতুন ফোনে প্রসেসর ও ক্যামেরার উন্নয়ন এবং মোবাইল অপারেটরদের দেয়া ছাড়ে এ বছর অনেকেই নতুন ডিভাইস কিনবেন বলে মত দিয়েছে সংস্থাটি।
আন্তর্জাতিক বাজারে আইফোন ১৫, আইফোন ১৫ প্লাস, আইফোন ১৫ প্রো ও আইফোন প্রো ১৫ ম্যাক্সের দাম যথাক্রমে ৭৯৯, ৮৯৯, ১ হাজার ৯৯ ও ১ হাজার ১৯৯ ডলার।
সর্বশেষ আইফোনে তুলনায় উল্লেখযোগ্য কিছু পরিবর্তন এসেছে। প্রো ও প্রো ম্যাক্সে টাইটানিয়ামের নির্মিত কেসিং যোগ করা হয়েছে। যার ফলে ফোনগুলো আগের তুলনায় আরও হালকা ও পাতলা হয়েছে।
৪৮ মেগাপিক্সেলের একটি মূল ক্যামেরা যোগ হয়েছে আইফোন ১৫র সব মডেলে। এতে রয়েছে বড় আকারের সেন্সর। শুধু প্রো ম্যাক্সে মডেলে যোগ করা হয়েছে ৫ এক্স অপটিকাল জুম ক্যামেরার জন্য নতুন টেলিফোটো লেন্স। প্রো মডেলের ডিজাইনও আগের তুলনায় কিছুটা ভিন্ন। নতুন ফিচারগুলোর জন্য আইফোনে যুক্ত করা হয়েছে আলট্রা-ওয়াইডব্যান্ড চিপ।
আইফোন ১৫ সাদা, কালো, গোলাপি, সবুজ ও হলুদ রঙে পাওয়া যাচ্ছে। আইফোন ১৫’র স্ক্রিন ৬ দশমিক ১ ইঞ্চি আর প্রোর স্ক্রিনের উচ্চতা ৬ দশমিক ৭ ইঞ্চি। তবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ফিচার হচ্ছে লাইটনিং পোর্টের বদলে অ্যান্ড্রয়েড ফোনের সুপরিচিত ইউএসবি-সি চার্জিং ব্যবস্থা। এখন অ্যাপলের ভোক্তারা একই ইউএসবি-সি চার্জার দিয়ে আইফোন, আইপ্যাড ও ম্যাক কম্পিউটার চার্জ দিতে পারবেন।
এক বছরের কম সময় আগে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভোটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেই, এই অঞ্চলে বিক্রির জন্য বাজারে আসা সব স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, ডিজিটাল ক্যামেরা, পোর্টেবল স্পিকার ও অন্যান্য ছোট ডিভাইসে ২০২৪ সাল নাগাদ ইউএসবি-সি চার্জিং সুবিধাযুক্ত করতে হবে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ডিভাইস কিনলেও ভোক্তারা যাতে একই চার্জার দিয়ে সবগুলো চার্জ দিতে পারেন, সেটা নিশ্চিত করতে এই সিদ্ধান্ত নেই ইইউ।
অ্যাপল ২৯ ডলারে একটি ইউএসবি-সি লাইটনিং অ্যাডাপ্টর বিক্রি করছে, যাতে ভোক্তারা তাদের পুরনো লাইটনিং পোর্টের ডিভাইসগুলোও ইউএসবি-সি চার্জার দিয়ে চার্জ দিতে পারেন। প্রতিষ্ঠানটি গণমাধ্যমকে জানায়, ভোক্তারা চাইলে তাদের পুরনো লাইটনিং চার্জারগুলো অ্যাপল স্টোরে নিয়ে এসে রিসাইকেল করাতে পারবেন।
সূত্র: সিএনএন