অয়ুয়াং জিয়ুয়ানকে চীনের চন্দ্রাভিযান প্রকল্পের জনক মানা হয়। চীনা ভাষার পত্রিকা ‘সায়েন্স টাইমস’কে তিনি বলেন, চন্দ্রযান-৩-এর অবতরণ স্থলটি ৬৯ ডিগ্রি দক্ষিণ অক্ষাংশে, যা চাঁদের স্বীকৃত দক্ষিণ মেরু ৮৮.৫ ও ৯০ ডিগ্রির ধারেকেছেও নেই।
এশিয়ার সবচেয়ে বড় দুই দেশের মধ্যে দ্বৈরথ পৃথিবী ছাড়িয়ে এবার মহাশূন্যে গিয়ে ঠেকেছে।
গতমাসে ভারত এর চন্দ্রযান-৩ মিশনের মাধ্যমে প্রথম দেশ হিসেবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নিজেদের ল্যান্ডার ও রোভার অবতরণ করিয়েছে। এর মাধ্যমে চাঁদের সর্বদক্ষিণে ল্যান্ডার অবতরণে চীনের রেকর্ডকে ভেঙেছে এটি।
তবে এখন চীনের একজন শীর্ষ বিজ্ঞানী দাবি করেছেন, চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ভারতের অবতরণের সাফল্যকে অতিরঞ্জিত করে দাবি করা হচ্ছে।
অয়ুয়াং জিয়ুয়ানকে চীনের চন্দ্রাভিযান প্রকল্পের জনক মানা হয়। চীনা ভাষার পত্রিকা সায়েন্স টাইমসকে তিনি বলেন, চন্দ্রযান-৩-এর অবতরণ স্থলটি ৬৯ ডিগ্রি দক্ষিণ অক্ষাংশে, যা চাঁদের স্বীকৃত দক্ষিণ মেরু ৮৮.৫ ও ৯০ ডিগ্রির ধারেকেছেও নেই।
পৃথিবীতে ৬৯ ডিগ্রি দক্ষিণ অক্ষাংশ পড়েছে অ্যান্টার্কটিক সার্কেলে। তবে চাঁদে এ সার্কেলটি উপগ্রহটির দক্ষিণ মেরুর অনেক কাছে।
‘এটা ভুল!’ ভারতের মেরু অবতরণের দাবি প্রসঙ্গে জিয়ুয়ান বলেন। ‘চন্দ্রযান-৩-এর অবতরণস্থল চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নয়, দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে নয়, এমনকি দক্ষিণ মেরু অঞ্চলের কাছাকাছিও নয়।’
চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চল থেকে ৬১৯ কিলোমিটার দূরত্বে অবতরণ করেছিল চন্দ্রযান-৩, বলেন জিয়ুয়ান।
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) এ বিষয় নিয়ে মন্তব্যের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি ভারতের মহাকাশ সংস্থা।
চন্দ্রযান-৩-এর অবতরণের পর কম্যুনিস্ট পার্টির গ্লোবাল টাইমস পত্রিকা বেইজিংভিত্তিক জ্যেষ্ঠ একজন বিশেষজ্ঞ প্যাং ঝিহাও’র বরাত দিয়ে জানিয়েছিল, চাঁদে অভিযানের জন্য চীনের কাছে ভারতের চেয়ে আরও উন্নত প্রযুক্তি আছে।
‘চীন যে রকেট ইঞ্জিন ব্যবহার করেছে সেটিও ভারতের ইঞ্জিনের চেয়ে অনেক বেশি উন্নত,’ বলেন ওই বিশেষজ্ঞ।
তারপরও আর যেকোনো নভোযানের চেয়ে চাঁদের অনেক বেশি দক্ষিণে অবতরণ করেছে ভারতের চন্দ্রযান-৩। গত মাসে চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছাকাছি নভোযান নামাতে চেয়েছিল রাশিয়া। কিন্তু সেটি চাঁদের বুকে বিধ্বস্ত হয়।
২০১৯ সালে চীনের চ্যাং ৪ প্রথমবারের মতো চাঁদের অন্ধকার অংশে অবতরণ করে। এটি ৪৫ ডিগ্রি দক্ষিণে নেমেছিল। ১৯৬৮ সালে নাসা’র মানুষবিহীন প্রোব সার্ভেয়র ৭ চাঁদের ৪১ ডিগ্রি দক্ষিণে নেমেছিল।
চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ গর্বের পাশাপাশি আরও কিছু কারণেও গুরুত্বপূর্ণ। বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন, এ অঞ্চলে বরফের মজুত থাকতে পারে যা চাঁদে দীর্ঘসময় অবস্থানের জন্য ব্যবহার করা যাবে।
প্রায় অর্ধশতক বছর আগে নাসা’র অ্যাপোলো মিশন শেষ হওয়ার পর বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন উভয় দেশই চাঁদে নতুন করে নভোচারী পাঠানোর পরিকল্পনা করছে।