উন্নয়ন কাজের জন্য সর্বজনীন পেনশন স্কিম থেকে ঋণ নেবে সরকার। এর ফলে বিদেশ থেকে ঋণ গ্রহণের প্রবণতা কমবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
তিনি বলেন, উন্নয়ন কাজে সরকার বৈদেশিক এবং অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন উৎস থেকে ঋণ নেয়। পেনশন স্কিম চালুর ফলে ঋণ নেয়ার আরও একটি উৎস যোগ হয়েছে। এতে বিদেশ থেকে ঋণ নেয়া কমে আসবে।
শনিবার ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত শিক্ষার্থীদের এক বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মন্ত্রী। ছায়া সংসদ নামে এই বিতর্ক প্রতিযোগিতার বিষয় ছিল- সর্বজনীন পেনশন স্কিম দীর্ঘমেয়াদি সামাজিক সুরক্ষায় সহায়ক হবে কি-না।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ এই বিতর্ক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। সেখানে দর্শকসারি থেকে পরিকল্পনামন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয়, সরকার পালিয়ে গেলে সর্বজনীন পেনশন স্কিম থাকবে কি-না।
উত্তরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সরকার পালিয়ে যায় না, ব্যক্তি পালায়। অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এ প্রক্রিয়ায় যুক্ত। সরকারের স্থায়িত্বের সঙ্গে সর্বজনীন পেনশনের কোনো সম্পর্ক নেই।
দুর্নীতির উদহারণ দিতে গিয়ে এম এ মান্নান বলেন, কারও হয়তো গুলশানে বাড়ি আছে। দেখা গেল, তিনি এরপর কানাডা কিংবা দুবাই বা অন্য কোনো দেশে বাড়ি কিনছেন। সৎভাবে উপার্জন করে ঠিকমতো কর দিলে সমস্যা নেই। সৎভাবে দেশের বাইরে অর্থ নিতে হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে।
তিনি বলেন, দেশের উচ্চবিত্ত পর্যায়ে দুর্নীতি বেশি হচ্ছে। কেউ কেউ ব্যাংকের বড় অংকের টাকা লোপাট করে বিদেশে পাচার করছেন। একটি অংশ ঋণ দিয়ে ফেরত দিচ্ছে না। বড় বড় অংকের কারণে দুর্নীতির পরিমাণ বেড়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, পেনশন স্কিম থেকে প্রাপ্ত অর্থ ঝুঁকিমুক্ত ও লাভজনক খাতে বিনিয়োগ করতে হবে। আর্থিকভাবে শক্তিশালী বাণিজ্যিক ব্যাংক, ট্রেজারি বন্ড, লাভজনক অবকাঠামোতে পেনশন স্কিমের টাকা বিনিয়োগ করা যেতে পারে। সুশাসনের অভাব, দুর্নীতি, লাগামহীন মুদ্রাস্ফীতি, মূল্যস্ফীতি যাতে সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাস্তবায়নে বাধা না হয়, সরকারকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
‘সর্বজনীন পেনশন স্কিম দীর্ঘমেয়াদী সামাজিক সুরক্ষায় সহায়ক হবে’ শীর্ষক ছায়া সংসদে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকদের পরাজিত করে সরকারি তিতুমীর কলেজ এর বিতার্কিকরা চ্যাম্পিয়ন হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক মাঈনুল আলম, সাংবাদিক শেখ নাজমুল হক সৈকত, সাংবাদিক জাকির হোসেন ও স্থপতি সাবরিনা ইয়াসমিন মিলি। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।