প্রথম ইনিংসেই ম্যাচটা প্রায় জিতে গিয়েছিল ভারত। দ্বিতীয় ইনিংসে বাকি ছিল শুধু আনুষ্ঠানিকতা। সেই আনুষ্ঠানিকতা সারতে বেশি সময় নিলেন না ভারতীয় ওপেনাররা। ফাইনাল ম্যাচ মাত্র ৬ ওভার ১ বলে জিতে এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়ন ভারত।
রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) এশিয়া কাপের ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে ১০ উইকেট হারিয়েছে ভারত। শুরুতে বল করে লঙ্কানদের ৫০ রানেই আটকে দেয় ভারত। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ২৬৩ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ভারত।
এই জয়ে এশিয়া কাপে পাঁচ বছরের আক্ষেপ ঘুচলো ভারতের। ২০১৮ সালের পর আবারও চ্যাম্পিয়ন হলো রোহিত শর্মার দল। সবমিলিয়ে এশিয়া কাপে এটি ভারতের অষ্টম শিরোপা। এশিয়া সেরার আসরে এতবার শিরোপা জেতেনি আর কোনো দল।
৩৭ বলে জিতে নতুন রেকর্ডের খাতায় নাম লিখিয়েছে ভারত। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের যেকোনো ফরম্যাটে সবচেয়ে কম বলে ফাইনাল ম্যাচ জেতার রেকর্ড এটি।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই ভারতীয় পেসারদের তোপে দিশেহারা হয়ে পড়ে লঙ্কানরা। প্রথম ওভারেই জাসপ্রীত বুমরাহর বলে আউট হন কুশল পেরেরা। ইনিংসের দ্বিতীয় বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।
ম্যাচটা পুরোপুরি একপেশে হয়ে যায় শ্রীলঙ্কান ইনিংসের চতুর্থ ওভারে। সিরাজের এই এক ওভারে লঙ্কানদের ম্যাচ থেকে পুরোপুরি ছিটকে দেয় ভারত। এই ওভারে লঙ্কানদের ৪ টপ অর্ডার ব্যাটারকে ফেরান মোহাম্মদ সিরাজ, তছনছ করে দেন তাদের ব্যাটিং লাইন।
ওভারের প্রথম বলে শুরুটা পাথুম নিসাঙ্কাকে দিয়ে। অফ স্ট্যাম্পের বাইরের লেন্থ বল হালকা ঠেলে দিতে গিয়ে জাদেজার হাত ধরা পড়েন লঙ্কান ওপেনার। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে দারুণ ব্যাটিং করা সাদিরা সামারাবিক্রমাকে ওভারের তৃতীয় বলে এলবিডব্লিউ করেন সিরাজ।
সামারাবিক্রমাকে আউট করার পরের বলেই চারিথ আশালঙ্কাকে ফিরিয়েছেন সিরাজ। তৈরি করেছিলেন হ্যাটট্রিকের সুযোগও। তবে সেই বলে আবার চার খেয়ে বসেন ডানহাতি পেসার। কিন্তু ওভারের শেষ বলে ঠিকই আবার উইকেট নিয়ে নেন সিরাজ, এবার ধনঞ্জয়া ডি সিলভা।
পরের ওভারে এসে দাসুন শানাকাকে ফিরিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো পাঁচ উইকেট শিকার করেন সিরাজ। শানাকাকে বোল্ড করে তার উদযাপনটা ছিল দেখার মতো। ফুটবলের মহাতারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর বিখ্যাত ‘সিউউ’ উদযাপন করেন তিনি।
১২ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর হালকা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন কুশল মেন্ডিস এবং দুনিথ ভেল্লালাগে। কিন্তু কুশলকে ফিরিয়ে সেই জুটিও ভাঙেন সিরাজ।
লঙ্কানদের শেষ তিনটি উইকেট নিয়েছেন হার্দিক পান্ডিয়া। এর মধ্যে পাথিরানা এবং প্রমোদ মাদুশানকে পরপর দুই বলে ফিরিয়েছেন তিনি। শ্রীলঙ্কা থামে ৫০ রানে।
২১ রানে ৬ উইকেট নিয়ে নিজের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেছেন সিরাজ। ভারতীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে ওয়ানডেতে চতুর্থ সেরা বোলিং ফিগার এটা। এর আগে জাসপ্রীত বুমরাহ, স্টুয়ার্ট বিনি এবং অনিল কুম্বলেও একই ইনিংসে ৬টি করে উইকেট পেয়েছেন। তবে সিরাজের চেয়ে রান কম দেয়ায় তালিকায় এগিয়ে আছেন তারা।
ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই লঙ্কান বোলারদের ওপর চড়াও হয়েছেন ভারতীয় দুই ওপেনার শুভমান গিল এবং ইশান কিষাণ। দুজনের ৫১ রানের জুটিতে কোনো বিপদ ছাড়াই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় রোহিত শর্মার দল। ১৯ বলে ২৭ রান করেছেন শুভমান। কিষাণ অপরাজিত ছিলেন ১৮ বলে ২৩ রান করে।