গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ও নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমি অপরাধ করিনি। আমি তো নিজে এ প্রতিষ্ঠানের মালিক নই। আমার আদর্শ কর্মসূচিতে কোনো ত্রুটি ছিল না।
বৃহস্পতিবার শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থন শেষে আদালত থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, এত বড় কাজ করতে গেলে কিছু ভুল হতে পারে। আমরা তো ফেরেশতা নই। কিন্তু ভুল হলে তা ইচ্ছাকৃত নয়।
ইউনূসের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন দুদকের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
এ মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থন করতে বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে যান ইউনূস। দুপুর ১টার দিকে শুনানি শুরু হয়। বিচারক ইউনুসকে এজলাসের চেয়ারে বসার অনুমতি দেন। শুনানি শুরু হলে তিনি দাঁড়িয়ে যান। আদালতে আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনে ২৮ পৃষ্ঠার লিখিত বক্তব্য জমা দেয়া হয়।
ইউনূস ছাড়াও এ মামলার অপর তিন আসামি হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান এবং দুই পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান। আদালতে তারাও নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।
এসময় লিখিত বক্তব্যে আসামিরা বলেন, বাংলাদেশে গ্রামীণ ব্যাংকসহ ৫০টির অধিক সামাজিক প্রতিষ্ঠান ইউনূস গড়ে তুলেছেন। কোনো কোম্পানিতে তার নিজস্ব কোনো শেয়ার নেই। সুতরাং কোনো লভ্যাংশ বা লাভের টাকা কার পকেটে ঢোকে না।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে একজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান দেখান যিনি এতোগুলো ইম্প্যাক্ট তৈরি করেছেন। এতোগুলো বিদেশি ব্র্যান্ড কোম্পানিকে জয়েন্ট ভেঞ্চারে বাংলাদেশে এনেছেন। এত এত মানবসম্পদ তৈরি করেছেন।
তারা আরও বলেন, যখনই দেশের গরিবদের একটা সামাজিক সমস্যা হিসেবে দেখেছেন, তার সমাধানে একটা বিজনেস মডেল বানিয়ে দিয়েছেন। শিক্ষা সমস্যার জন্য বানিয়েছেন গ্রামীণ শিক্ষা, স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য বানিয়েছেন গ্রামীন কল্যাণ। এমন ব্যবসার ধারণা বা মডেল তৈরির জন্য যথেষ্ট সময় দিয়ে মালিকানায় নিজেকে কখনও জড়াননি। দেশে-বিদেশে কোথাও নিজের নামে কোনো জায়গা-জমি, গাড়ি-বাড়ি তার নেই।
কোম্পানি আইনসহ বিভিন্ন আইনের ব্যাখ্যাসহ এই মামলাটি কেন চলতে পারে না, তার ব্যাখ্যা দেয়া হয় বক্তব্যে। সেখানে মামলার আসামিদের অব্যাহতির প্রার্থনা জানানো হয়। সোয়া ঘণ্টার শুনানিতে এজলাসে কোনো কথা না বলেননি ইউনূস। পরে সেখান থেকে বেরিয়ে আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
নথি থেকে জানা গেছে, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান ২০১১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে বাদী হয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করেন। এতে ড. ইউনূস ছাড়াও গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম এবং মো. শাহজাহানকে বিবাদী করা হয়েছে। মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইন ৪ এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ব্যতীত ব্যবহার বেআইনি ।
2023 DailyNews24BD.com