হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইয়াবা বহনের দায়ে ৬ সদস্যের একটি রোহিঙ্গা পরিবারকে আটক করেছে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন। বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় তাদের আটক করা হয়।
শুক্রবার এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক জানান, গতকাল সন্ধ্যা ৭টায় নভো এয়ারের কক্সবাজার ফ্লাইটে ঢাকায় অবতরন করে পরিবারটি। অবতরনের পর এয়ারপোর্ট এপিবিএন এর গোয়েন্দা দলের সন্দেহ হলে নজরদারিতে পড়েন তারা। এসময় তাদের আটক করে এয়ারপোর্ট এপিবিএন অফিসে নিয়ে আসা হয়। তৎক্ষণাৎ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা ইয়াবা বহন বা কোনো ধরনের অপরাধে জড়িত থাকার কথা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন।
নিজেদেরকে তারা একটি বাঙালি পরিবার হিসেবেও দাবী করেন। কিন্তু পুলিশের সন্দেহ হয় পরিবারটি ইয়াবা পাচারের সাথে জড়িত আছে। এই সন্দেহ যাচাই করতে পরিবারের ৪ সদস্যকে বিমানবন্দরের সংলগ্ন উত্তরার একটি প্যাথলজি সেন্টারে পরীক্ষা করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় ডাক্তারি পরীক্ষায় শিশু মো: রুবেল (১৫), তার ফুফু আছিয়া বেগম (২৫) এবং তার চাচী জোহুরা বেগমের (৩০) পাকস্থলীতে অস্বাভাবিক বস্তুর উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। এরপর তারা আরও জোরদার জিজ্ঞাসাবাদের মুখে স্বীকার করেন যে তারা পাকস্থলীতে ইয়াবা বহন করছেন।
জিয়াউল হক আরও জানান, ইয়াবা বহনের ব্যাপারে স্বীকারোক্তি দেয়ার পর তাদের জাতীয়তা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা নিজেদের রোহিঙ্গা বলেও স্বীকার করেন।
৬ সদস্যের এই পরিবার ইয়াবা বহনের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন সংঙ্গে থাকা আছিয়া বেগমের স্বামী আলী আহমদ(২৮)। এসময় আছিয়া বেগমের সাথে তার দুগ্ধপোষ্য শিশু উমায়ের হোসেন (৭মাস) এবং জহুরা বেগমের দুগ্ধপোষ্য শিশু উম্মে ছালমাও (১০ মাস) তাদের সাথে ছিলেন। জাতীয়তা এবং ইয়াবা বহনের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর রাতেই তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিয়ে যায় এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের একটি দল। সেখানে উল্লেখিত ৩ রোহিঙ্গা নাগরিকের পাকস্থলী থেকে ডাক্তারের তত্ত্বাবধায়নে মোট ১৩০ টি ইয়াবার প্যাকেট উদ্ধার করা হয়। এইসব ইয়াবার প্যাকেট থেকে ইয়াবা গননা করে সেখানে মোট ৬২৭৫ পিস ইয়াবা পাওয়া যায়। শিশু মো. রুবেলের পাকস্থলীতে ৪০ প্যাকেটে মোট ১৯৩০ পিস, আছিয়ার পাকস্থলীতে ৫২ প্যাকেটে মোট ২৫১১ পিস এবং জহুরা বেগমের পাকস্থলীতে ৩৮ প্যাকেটে ১৮৩৪ পিস ইয়াবা পাওয়া যায়।
অভিযুক্ত সকলেই মায়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিক। সকলেই কক্সবাজার টেকনাফের লেদা ক্যাম্পের অধিবাসী বলে জানা গেছে। তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে বিমানবন্দর থানায় মামলা দায়ের করা হচ্ছে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ব্যতীত ব্যবহার বেআইনি ।
2023 DailyNews24BD.com