বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে জাতীয় শোক দিবসে (১৫ আগস্ট) বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে মিলাদ মাহফিল এবং ধানমন্ডি ৩২ নম্বর থেকে কলাবাগান মাঠ হয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর পর্যন্ত শোক র্যালি রয়েছে।
দলটির দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্রব বড়ুয়ার স্বাক্ষরিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কর্মসূচির কথা জানা গেছে। তবে চেষ্টা করে এ প্রেস বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল কোনো নেতা বা দপ্তর সংশ্লিষ্ট কারো কাছ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পওয়া দুই পৃষ্ঠার প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগামী ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৯তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস যথাযথ মর্যাদার সাথে পালন করবে আওয়ামী লীগ। প্রতিবারের মতো এবারও শোকার্ত বাঙালি জাতির সাথে একাত্ম হয়ে আওয়ামী লীগ ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন উপলক্ষ্যে কেন্দ্রীয়ভাবে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
শোক দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের জন্য আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মী, সমর্থক এবং সকল সহযোগী, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনসমূহের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে আওয়ামী লীগ। একইসাথে আওয়ামী লীগের সকল জেলা, মহানগর, উপজেলা, থানা, পৌর, ইউনিয়ন, ওয়ার্ডসহ সমস্ত শাখার নেতৃবৃন্দকে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গৃহীত কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সাথে সঙ্গতি রেখে কর্মসূচি পালনের অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।
১৫ আগস্ট শোক দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের কর্মসূচিগুলো হলো, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে সূর্যোদয় ক্ষণে বঙ্গবন্ধু ভবন ও কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশে সংগঠনের সকল স্তরের কার্যালয়ে জাতীয় এবং দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন।
সকাল ৮টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্মৃতি-বিজড়িত ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ। সকাল সাড়ে ৮টায় বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে মিলাদ মাহফিল। সকাল ৯টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বর থেকে কলাবাগান মাঠ হয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর পর্যন্ত শোক র্যালি।
এর পর সকাল ১০টায় বনানী কবরস্থানে ১৫ আগস্টের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন, মাজার জিয়ারত, ফাতেহা পাঠ, মোনাজাত ও মিলাদ মাহফিল। দুপুর ১২টায় টুঙ্গীপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল।
বাদ জোহর কেন্দ্রীয়ভাবে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সকল মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল। মন্দির, প্যাগোডা, গির্জা, উপাসনালয়ে দেশব্যাপী বিশেষ প্রার্থনা কর্মসূচির অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয়ভাবে ১৫ আগস্টের প্রথম প্রহরে (রাত ১২:০১ মিনিট) মিরপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চে (৩/৭-এ সেনপাড়া পর্বতা, মিরপুর-১০) মোমবাতি প্রজ্জ্বলন ও বিশেষ প্রার্থনা, সকাল ১০টায় রাজধানীর মেরুল বাড্ডাস্থ আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে বৌদ্ধ সম্প্রদায় এবং সকাল ১১টায় ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায় প্রার্থনা সভার আয়োজন করবে।
দুপুরে সারা দেশে অস্বচ্ছল, এতিম ও দুস্থ মানুষদের মাঝে খাদ্য বিতরণ ও গণভোজের আয়োজন। বাদ আসর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল।
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের এক পর্যায়ে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান। এরপর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা, দলের এমপি-মন্ত্রীরা আত্মগোপনে চলে যান। এদের কেউ কেউ দেশ ছেড়েছেন বলেও শোনা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে এটাই আওয়ামী লীগের প্রথম প্রেস বিজ্ঞপ্তি যাতে তারিখ উল্লেখ রয়েছে ১৩ আগস্ট। তবে ১২ আগস্ট রাত ১২টার আগেই বিজ্ঞপ্তিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসে।
এ ছাড়া শুধু প্রেস বিজ্ঞপ্তি নয়, দলের সভাপতি শেখ হাসিনাও ইতোমধ্যে দলের নেতাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালন করার নির্দেশ দিচ্ছেন। গত তিন দিন আগে শেখ হাসিনা দলের এক জেলা পর্যায়ের নেতার সঙ্গে ফোনে কথা বলে ১৫ আগস্ট পালন করতে বলেছেন, যেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসেছে।
এরপর গত সোমবার (১২ আগস্ট) আরেকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসেছে, সেখানেও শেখ হাসিনা একটি জেলার আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় ১৫ আগস্ট যথাযথ মর্যাদায় পালনের নির্দেশ দিয়েছেন।
অন্য এক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসেছে, যেখানে একজন ১৫ আগস্ট সকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসবেন বলে উল্লেখ করেছেন। ওই ব্যক্তি ছাত্রলীগের সাবেক একজন নেতা বলে জানা গেছে।
Source :বাংলাদেশ জার্নাল