এনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠাতে আবারও চিঠি দিয়েছে পরিবার। গত ২৫ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে চিঠি দেয়া হয়। চিঠি দিয়েছেন খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান।
বৃহস্পতিবার আবেদনের বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, আবেদনটি আইন মন্ত্রণালয়ে পর্যবেক্ষণের পর্যায়ে রয়েছে। এখনও মতামত দেয়া হয়নি।
আবেদনটা কী করেছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমরা এটা দেখছি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদনটি করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে মতামতের জন্যে পাঠানো হয়েছে। আমরা দেখছি। দেখা অবস্থায় আছে। এখনো পুরো আবেদনটি আমি দেখিনি। তবে, আমার মনে হয় যে চিকিৎসার বিষয়ে বিদেশে পাঠানোর। অন্য কোনো আবেদন থাকার তো কথা না। তার কারণ হচ্ছে যে কিছুদিন আগে ৬ মাসের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
সরকারের পক্ষ থেকে আপনারা কোনো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে কিছু বলেননি আইনমন্ত্রী।
এক মাসের বেশি সময় ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা কখনো ভালো থাকছে, আবার পরক্ষণেই খারাপ হচ্ছে। গত ৯ আগস্ট রাতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেই থেকে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এখন তার লিভার, হৃদ্যন্ত্র ও কিডনির সমস্যা জটিল অবস্থায় রয়েছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
এর আগে ১২ সেপ্টেম্বর বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে দাখিল করা আবেদন ও আইন মন্ত্রণালয়ের আইনগত মতামতের আলোকে ফৌজদারি কার্যবিধির ক্ষমতাবলে শর্ত সাপেক্ষে দণ্ডাদেশ ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে পরবর্তী ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। যে দুই শর্তে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে, সেগুলো হলো- তিনি ঢাকায় নিজ বাসায় থেকে তার চিকিৎসা গ্রহণ করবেন। এই সময়ে তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালত। রায়ের পর তাকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়। এরপর ৩০ অক্টোবর এই মামলায় আপিলে তার সাজা আরও পাঁচ বছর বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট।
একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন একই আদালত।
২০২০ সালের মার্চে করোনা মহামারি শুরু হলে পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকার নির্বাহী আদেশে দণ্ড স্থগিত করে খালেদা জিয়াকে শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেয়। এরপর থেকে মুক্তির মেয়াদ বাড়তে থাকায় তাকে আর কারাগারে যেতে হয়নি।