আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সরগরম রাজনীতির মাঠ। নানা অনিশ্চয়তা থাকলেও নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে বলে বারবার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে সরকার ও ক্ষমতাসীন দল। যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নও চায় সুষ্ঠু নির্বাচন। প্রতিবেশী ভারত দীর্ঘদিন নীরব থাকলেও সম্প্রতি দেশটি জানিয়েছে বাংলাদেশে অবাধ ও সংঘাতমুক্ত ভোট চায় তারা।
মাঠের বিরোধী দল বিএনপি একই দাবিতে সমমনা দল নিয়ে রাজপথে আন্দোলন করছে। দেশের সুশীল সমাজ, সচেতন মহলসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের চাওয়াও একই। তাহলে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে বাঁধা কোথায়-ঘুরেফিরে সর্বত্র এমন আলোচনাই চলছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক, রাজনৈতিক দল, পেশাজীবীসহ নানা শ্রেণির মানুষের সঙ্গে কথা বলে এ প্রশ্নের উত্তর জানার চেষ্টা করা হয়।
সবাই প্রায় অভিন্ন সুরে জানান, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে বড় বাধা হচ্ছে সদিচ্ছা ও আন্তরিকতার অভাব। এরই মধ্যে তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু হয়েছে। মনোনয়ন পত্র দাখিল ও বাতিল হওয়াদের আপীল শুনানীও করেছে নির্বাচন কমিশন। তবে মাঠ পর্যায়ে বিএনপি ও সমমনা কিছু রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আস্থার সংকট তীব্র থাকায় নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না তারা। কিন্তু সাধারণ মানুষের এবিষয়ে রয়েছে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া। নির্বাচন কমিশনের নির্বাচনী ব্যবস্থার প্রতি বেশিরভাগ দল ও মানুষের ভরসা নেই বলেও দাবী অনেকের। যদিও নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ নির্বাচনের সব প্রস্তুতি নিয়েছে বলে বারবার জানাচ্ছে গণমাধ্যমকে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন,সবার মুখেই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা শোনা যাচ্ছে। কিন্তু সেটা নিশ্চিত করতে বহু বাধা রয়েছে। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে আন্তরিকতার অভাব। অতীতে একই প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও তা রক্ষা করা হয়নি।
সাবেক কূটনীতিক তৌহিদুল হক বলছেন,আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে ক্ষমতা দখলের প্রতিযোগিতা থেকে সরে আসতে হবে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রধান বাধাগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে। কারন বিদেশী হস্তক্ষেপে কখনো দেশের সংকট সমাধান হবে না, ভাবনাটাও সুখকর নয়। এজন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক সমঝোতা। রাজনৈতিক দলগুলোর একে অপরের প্রতি আস্থা, বিশ্বাস এবং সর্বোপরি তাদের সদিচ্ছা ছাড়া এ বাধা কখনো দূর করা যাবে না। উলটো সংকট আরও ঘণীভূত হবে। যার ইঙ্গিত ইতোমধ্যে লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
নির্বাচন প্রশ্নে বড় দুটি দল নিজ নিজ অবস্থানে অনড়। চলছে রাজপথ দখলের লড়াই। তা রূপ নিচ্ছে সহিংসতায়।