রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ) এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ সাংবাদিকদের জন্য তৃতীয় বিপজ্জনক দেশ হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার আরেকটি দেশ পাকিস্তানও এই তালিকায় রয়েছে। সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশ হিসেবে শীর্ষে রয়েছে যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিন।
প্রতিবেদন থেকে মূল তথ্য যা পাওয়া যায় ;
- ২০২৪ সালে দায়িত্ব পালনের সময় বিশ্বজুড়ে মোট ৫৪ জন সাংবাদিক হত্যার শিকার হয়েছেন।
- এর মধ্যে ৩১ জন সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলগুলোতে নিহত হয়েছেন, যেমন: গাজা, ইরাক, সুদান, মিয়ানমার এবং ইউক্রেন।
- ফিলিস্তিনে এ বছর নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, মোট ১৬ জন।
বিপজ্জনক নয়টি দেশের তালিকায়- ফিলিস্তিন: ১৬ জন সাংবাদিক নিহত, পাকিস্তান: ৭ জন, বাংলাদেশ: ৫ জন, মেক্সিকো: ৫ জন, সুদান: ৪ জন, মিয়ানমার: ৩ জন, কলম্বিয়া: ২ জন, ইউক্রেন: ২ জন, লেবানন: ২ জন।
গাজার ভয়াবহ অবস্থা
- গাজায় এ বছর সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক পরিস্থিতি ছিল।
- বিশ্বজুড়ে দায়িত্ব পালনকালে নিহত সাংবাদিকদের ৩০ শতাংশই গাজায় মারা গেছেন।
- বেশিরভাগ হত্যাকাণ্ডে ইসরায়েলি বাহিনীর সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে।
বাংলাদেশে পরিস্থিতি
বাংলাদেশে এই বছরে পাঁচ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে, যা দেশটিকে এই তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে রেখেছে।
সারা বিশ্বে ৫৫০ জনের বেশি সাংবাদিক কারাবন্দি আছেন।
- সবচেয়ে বেশি সাংবাদিক কারাবন্দি দেশগুলো হলো:
- চীন (১২৪ জন)
- মিয়ানমার (৬১ জন)
- ইসরায়েল (৪১ জন)
- এছাড়া ৫৫ জন সাংবাদিক জিম্মি অবস্থায় রয়েছেন, যাদের ৭০ শতাংশ সিরিয়ায়।
- এখনও ৩৪টি দেশের প্রায় ১০০ জন সাংবাদিক নিখোঁজ রয়েছেন।
আরএসএফ-এর ডিরেক্টর জেনারেল তিবো ব্রুটিয়েন সাংবাদিকদের সুরক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন: “এই সাংবাদিকরা মারা যাননি, তাদের হত্যা করা হয়েছে। তাদের অধিকাংশের হত্যার জন্য দায়ী সরকার বা সশস্ত্র বাহিনীগুলো। এ ধরনের অপরাধ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন এবং বিচারহীনতার উদাহরণ।”
আরএসএফ-এর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও হত্যার ঘটনা আগের তুলনায় বেড়েছে। বিশেষ করে সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলগুলোতে সাংবাদিকরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।
সাংবাদিকদের সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ। দায়মুক্তির সংস্কৃতি বন্ধে কার্যকর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ। সংঘাতপূর্ণ এলাকায় সাংবাদিকদের জন্য বিশেষ সুরক্ষা প্রটোকল তৈরি।