আহমেদাবাদ, ১২ জুন ২০২৫ : ভারতের গুজরাট রাজ্যের আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বিধ্বস্ত হয়েছে, যা গত এক দশকের মধ্যে দেশটির সবচেয়ে মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। বিমানটি উড্ডয়নের মাত্র কয়েক সেকেন্ড পরই মাটিতে আছড়ে পড়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সৃষ্টি করে।
ঘটনার বিবরণ
- ফ্লাইট নম্বর: এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট AI-171 (লন্ডন গ্যাটউইকগামী)
- বিমানের ধরন: বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার (বয়স ১১ বছর)
- সময় ও স্থান: ১২ জুন, ভোর ৫:৪৫ মিনিটে আহমেদাবাদের সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের পরপরই বিধ্বস্ত হয়।
- হতাহত:
- বিমানে যাত্রী-ক্রু: ২৪২ জন (২৩০ যাত্রী + ১২ ক্রু) – প্রাথমিকভাবে ২৪১ জনের মৃত্যু নিশ্চিত, মাত্র ১ জন জীবিত উদ্ধার (ব্রিটিশ নাগরিক)
- স্থলজনে ক্ষয়ক্ষতি: বিমানটি একটি বাসস্থানীয় এলাকায় পড়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ৩৫-৪০ জন নিহত ও বহু আহত
তদন্ত ও সম্ভাব্য কারণ
- প্রাথমিক ধারণা:
- বিমানের ইঞ্জিনে অগ্নিকাণ্ড বা থ্রাস্ট ব্যবস্থায় ত্রুটি
- পাইলটের নিয়ন্ত্রণ হারানো বা টেকঅফের সময় টেকনিক্যাল গ্লিচ
- অতিরিক্ত ওজন বা ভারসাম্যহীনতা
- ব্ল্যাক বক্স: ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার (FDR) উদ্ধার হলেও ককপিট ভয়েস রেকর্ডার (CVR) এখনও অনুপস্থিত
- আন্তর্জাতিক সহায়তা: মার্কিন NTSB ও ইউকে এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা তদন্তে অংশ নিয়েছেন
প্রতিক্রিয়া ও ত্রাণ তৎপরতা
- প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং শোক প্রকাশ করেন।
- এয়ার ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে প্রতি নিহতের পরিবারকে ১ কোটি রুপি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা।
- বোয়িং কোম্পানি তাদের বিশেষজ্ঞ দল পাঠিয়ে তদন্তে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
- এটি বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনারের প্রথম বাণিজ্যিক দুর্ঘটনা (২০১১ সাল থেকে পরিষেবায়)।
- ১৯৯৬ সালের চার্কি-দাদরি সংঘর্ষের পর ভারতের সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা।
নিরাপত্তা জোরদার
- ভারতীয় বিমান কর্তৃপক্ষ (DGCA) এয়ার ইন্ডিয়ার বাকি বোয়িং ৭৮৭ ফ্লিটের জরুরি নিরাপত্তা পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে।
এই ঘটনা ভারতের বিমান চলাচল নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ঘিরে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। আনুষ্ঠানিক তদন্ত রিপোর্ট ৩ মাসের মধ্যে প্রকাশের কথা রয়েছে।
সূত্র: DGCA, এয়ার ইন্ডিয়া, স্থানীয় প্রশাসন, আন্তর্জাতিক এভিয়েশন সংস্থা