সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম টুইটার কিনে নিলেন বিশ্বের সেরা ধনকুবের ও টেসলা প্রধান ইলন মাস্ক। ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে এ টেক জায়ান্টের কর্ণধার এখন মাস্ক।
আনুষ্ঠানিকভাবে টুইটার বিক্রির ঘোষণার পর এক যৌথ বিবৃতিতে ইলন বলেন, ‘গণতন্ত্র (সঠিকভাবে) কাজ করার ভিত্তি হল বাকস্বাধীনতা। আর টুইটার হল সেই ডিজিটাল মাধ্যম, যেখানে মানুষের ভবিষ্যতের যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।’
টুইটার বোর্ডের চেয়ারপার্সন ব্রেট টেলর জানান, টুইটার কেনার জন্য ইলন যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়েছে। এটিই টুইটারের শেয়ারহোল্ডারের জন্য সবচেয়ে ভালো উপায় হবে বলেও মনে করেন তিনি।
এপ্রিলের শুরুতে টুইটারের ৯.২ শতাংশ শেয়ার কিনে নিয়েছিলেন ইলন মাস্ক। টুইটারের পরিচালনা পর্ষদেও তার যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্ত মাঝপথে তিনি সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। এরপর শেয়ারপিছু ৫৪.২ ডলারে টুইটার কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন এই ধনকুবের। দাবি, টুইটারে বাকস্বাধীনতার প্রসার ঘটাতে চান এবং সংস্থাটিকে ব্যক্তিগত মালিকানার আওতায় আনতে চান।
তবে তাঁর এই প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছিলেন বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ। টুইটারের মালিকানা যাতে পুরোদমে কেউ কিনে নিতে না পারে, সে জন্য ইলন মাস্কের প্রস্তাব ঠেকাতে ‘পয়জন পিল’ নীতি গ্রহণ করে পরিচালনা পর্ষদ। এই নীতির আওতায় টুইটারের নির্দিষ্ট অঙ্কের বেশি শেয়ার কেনার ওপর বাধ্যবাধকতা আরোপ করেন এই কমিটি।
তবে এতো নাটকীয়তার পরও মাস্ক শেষমেষ টুইটার কিনে নেন। সোমবার (২৫ এপ্রিল) বিকালে দ্য ওয়াশিংটন পোস্টে সিএফআরএ রিসার্চের বিশেষজ্ঞ অ্যাঞ্জেলো জিনো জানান, টুইটারের বোর্ডকে কোণঠাসা করে দিয়েছিলেন বলে মনে হচ্ছে। আর সেখান থেকে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি ইলনকে।
মাস্কের প্রস্তাব নিয়ে টুইটারের পরিচালনা পর্ষদ সোমবার বৈঠকে বসে, আর সেখানেই ৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলারে মাস্কের টুইটার কেনার প্রস্তাব গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়।
সোমবার মাস্ক টুইট করেন, ‘আমি আশা করব যে আমার সমালোচকরাও টুইটারে থাকবেন। কারণ সেটিই হবে প্রকৃত অর্থে বাকস্বাধীনতা।’
ইলন মাস্ক ২০০৯ সালে টুইটারে যোগ দেন। ব্যবহারকারী হিসেবে এই সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি বেশ সক্রিয়। তার ফলোয়ারের সংখ্যাও কম নয়। বর্তমানে তার ফলোয়ার সংখ্যা আট কোটির বেশি।
টুইটার কেনার অর্থ কোথা থেকে এসেছে, এমন প্রশ্নের জবাবে ওয়াশিংটন পোস্টকে এক সূত্র জানায়, ব্যাংক ঋণ এবং নিজস্ব ইকুটির মাধ্যমে সাড়ে ৪৬ বিলিয়ন ডলার জোগাড় করেছেন ইলন মাস্ক। সূত্র আরও জানিয়েছে, সম্প্রতি টুইটারের একাধিক বড় শেয়ারহোল্ডারের সঙ্গেও দেখা করেছিলেন ইলন। তাদের মধ্যে অনেকে তাকে সমর্থন করেন।