চেক ডিজঅনার মামলায় কোনো ব্যক্তিকে জেলে পাঠানো সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদের পরিপন্থি বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি রায়ে কয়েকদফা গাইডলাইন দেওয়া হয়েছে।
যাতে বলা হয়েছে, জাতীয় সংসদ অতি দ্রুত নেগোশিয়েবল ইনস্টুমেন্ট আইনের ১৩৮ ধারা সংশোধন করবে আদালত এমনটা প্রত্যাশা করে। তবে যতদিন না ১৩৮ ধারার সংশোধনী আনা না হয়, ততদিন পর্যন্ত এই ধারার আওতায় চেক ডিজঅনারের মামলা আপসযোগ্য হবে। চেক ডিজঅনারের মামলা বিচারের এখতিয়ার সম্পন্ন দেশের সব আদালতে সাজার পরিবর্তে তিনগুণ পর্যন্ত জরিমানা দিতে পারবে।
রোববার বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ সংক্রান্ত কয়েকটি মামলা নিষ্পত্তি করে এ রায় দেন। এই রায়ের অনুলিপি দেশের সব আদালত ও আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠাতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রায়ের পর মামলার সংশ্লিষ্ট আইনজীবী এস এন গোস্বামী সাংবাদিকদের বলেন, হাইকোর্টের এই রায় বাস্তবায়ন হলে চেক ডিজঅনার সংক্রান্ত হাজার হাজার মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হবে। মামলাজট কমাতেও এ রায় ভূমিকা রাখবে।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, কোনো ব্যক্তিকে তার ব্যক্তি স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করা সংবিধান পরিপন্থি। নেগোশিয়েবল ইনস্টুমেন্ট আইনের চেক ডিজঅনার সংক্রান্ত মামলায় কোনো ব্যক্তিকে কারাগারে বন্দি রাখা ব্যক্তিগত স্বাধীনতা হরণের নামান্তর।
উন্নত বিশ্বের উদাহরণ টেনে পর্যবেক্ষণে বলা হয়, সিঙ্গাপুর, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে চেক ডিজঅনার মামলায় জেলে পাঠানোর বিধান নেই। এসব দেশে চেক ডিজঅনারের মামলাগুলোকে দেওয়ানি প্রকৃতির মামলা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বাংলাদেশ নেগোশিয়েবল ইনস্টুমেন্ট আইনে ১৯৯৪ সালে পেনাল কোড সংযোজনের মাধ্যমে আধা-ফৌজদারি হিসেবে পরিণত করা হয়েছে।