নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন। সম্মেলনের আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘নৈতিক’ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন। জি-২০ সম্মেলনের আগে আগে মোদির ‘নৈতিক’ এআই সরঞ্জামগুলির প্রসারের জন্য বৈশ্বিক কাঠামোর আহ্বানের লক্ষ্য হলো— এআই এবং ক্রিপ্টোকারেন্সির মতো খাতগুলিতে আইন করার ব্যাপারে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে অভিন্নতার প্রয়োজনে ক্রমবর্ধমান বিতর্কে ভারতের নেতৃত্বের অবস্থান নেওয়া।
এ ছাড়া এটি নয়া দিল্লির নিজস্ব অবস্থানের পরিবর্তনের প্রমাণ বটে। কারণ দেশে এআই নিয়ন্ত্রণে কোনো আইনি হস্তক্ষেপ বিবেচনা করা হয়নি আগে। এখন এই সংক্রান্ত প্রবিধান প্রণয়নের জন্য ‘ঝুঁকি-ভিত্তিক’ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এই পরিবর্তনের ইঙ্গিত গত জুলাইয়ে শীর্ষ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অব ইন্ডিয়ার (ট্রাই) প্রকাশিত একটি নতুন পরামর্শপত্রেও প্রতিফলিত হয়েছিল। যেখানে বলা হয়েছিল, কেন্দ্রের উচিত ভারতে ঝুঁকি-ভিত্তিক কাঠামোর দৃষ্টিকোণ থেকে এআই নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি দেশীয় সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষ তৈরি করা। এছাড়াও এআইয়ের ‘দায়িত্বপূর্ণ ব্যবহারের’ জন্য বিশ্বব্যাপী একটি সংস্থা গঠনের জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং অন্যান্য দেশের সরকারের সঙ্গে সহযোগিতার আহ্বান জানানো হয়।
‘দায়িত্বশীল’ বা ‘নৈতিক’ এআই ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোন ধরনের পদক্ষেপ হবে বা বৈশ্বিক সংস্থার জন্য কেমন নিয়ন্ত্রক তত্ত্বাবধান হবে—সে সংক্রান্ত প্রস্তাবটি আগামী মাসের শুরুর দিকে আসন্ন জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে ভারত সরকার উত্থাপন করতে পারে।
এসব ইঙ্গিতের মধ্যে রয়েছে কেন্দ্র এআই-ভিত্তিক প্ল্যাটফর্মসহ বিভিন্ন ধরনের অনলাইন মধ্যস্থতাকারীদের মধ্যে একটি স্পষ্ট পার্থক্য আঁকা এবং ডিজিটাল ইন্ডিয়া বিল নামে একটি নতুন আইনে এই মধ্যস্থতাকারীদের প্রত্যেকের জন্য ইস্যু-নির্দিষ্ট প্রবিধান তৈরি করা—যা তথ্য প্রযুক্তি আইন, ২০০০ এর স্থলাভিষিক্ত হবে।
এপ্রিলে ইলেক্ট্রনিক্স এবং আইটি মন্ত্রণালয় বলেছিল, তারা এআই সেক্টরকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কোনো আইন করার কথা বিবেচনা করছে না। কেন্দ্রীয় আইটি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবও স্বীকার করেছিলেন, যদিও এআইয়ের ‘নৈতিক উদ্বেগ এবং এই সম্পর্কিত ঝুঁকি ছিল, তবে ডিজিটাল এবং উদ্ভাবনী বাস্তুতন্ত্রের সক্ষমকারী যে এআই এটি প্রমাণিত হয়েছিল।
ভারতের‘নীতি আয়োগ’ সকলের জন্য দায়িত্বশীল এআইয়ের উপর একটি ধারাবাহিক গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছে। তারপরও বৈষ্ণব গত বাজেট অধিবেশনে লোকসভায় লিখিত বক্তব্যে বলেছিলেন, সরকার দেশে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ বা আইন আনার কথা বিবেচনা করছে না। যদিও মোদির ‘নৈতিক’ এআই তৈরির আহ্বান এআই নিয়ন্ত্রণে নিয়ন্ত্রক সংস্থা হবে কি হবে না সে সম্পর্কে ভারতের প্রথমদিকের অবস্থানের পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস