চলমান করোনা মহামারি মোকাবিলায় সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধের মেয়াদ শেষ হচ্ছে রোববার। বারবার এই বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়ানোয় সবার মনে এখন ঘুরপাক খাচ্ছে একটাই প্রশ্ন- আবারো কি বাড়ছে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ? নাকি বিধিনিষেধ শিথিল করে স্বাভাবিক করে দেওয়া হবে জনজীবন?
জানা গেছে, বিধিনিষেধ আরও সাত দিন বাড়িয়ে ৩১ মে পর্যন্ত বহাল রাখার সুপারিশ করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। তবে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটিও এবার বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়ানোর সুপারিশ করেনি। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা যাবে রোববার।
এদিকে নতুন করে বিধিনিষেধ দেওয়া হলে স্বাস্থ্যবিধি মানাসহ কিছু নির্দেশনা দিয়ে রোববার প্রজ্ঞাপন জারি করা হতে পারে।
এ প্রসঙ্গে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহিদুল্লা গণমাধ্যমকে বলেন, গত ১৮ মের পর আর কোনো আপডেট নেই। মিটিংও হয়নি। আমাদের মূল ফোকাস স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য সরকারের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা নেওয়া। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে বিপদ আছে।
তিনি আরও বলেন, টিকা কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। আমাদের টার্গেট ১২ কোটি টিকা প্রদান। এটা নিশ্চিত করতে হবে। ঈদের সময়ের পরিস্থিতির কারণে করোনা বেড়ে যাওয়া শঙ্কাটা এখনও আছে। এই মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে পুরো জুন মাসই ঝুঁকির মধ্যে আছি আমরা।
লকডাউন আর বাড়বে কিনা এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহিদুল্লা বলেন, যত ঢিলেঢালাই হোক লকডাউনের একটা বেনিফিট আছে। সরকার যদি অ্যাফোর্ড করতে পারে লকডাউন আরও এক-দুই সপ্তাহ বাড়াতে পারে, সেটা খারাপ হবে না এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত।
এদিকে গত ১৭ মে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ভারতের করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে দেশের লকডাউনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ২৩ মে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে। এছাড়া শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের টিকাদান সম্পূর্ণ হলেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এর আগে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চলমান বিধিনিষেধ আরও এক সপ্তাহ বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন দিয়েছে সরকার। সেই বিধিনিষেধের মেয়াদ শেষ হবে ২৩ মে।
কোভিড-১৯ সংক্রমণ আর মৃত্যুর ঊর্ধ্বগতি রুখতে সারাদেশে গত ৫ এপ্রিল থেকে শুরু হয় সাত দিনের লকডাউন। লকডাউন শেষে দুদিন বিরতির পর গত ১৪ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে আট দিনের কঠোর লকডাউন শুরু হয়।
সেই মেয়াদ শেষ হয় গত ২১ এপ্রিল মধ্যরাতে। তবে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় লকডাউনের মেয়াদ ২৮ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত বাড়ানো হয়। পরে লকডাউন বাড়ানো হয় ৫ মে পর্যন্ত।
এরপর গত ৩ মে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে আবারও লকডাউন বাড়িয়ে আগামী ১৬ মে পর্যন্ত বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে, অনেকে ধারণা করছেন ২৩ মে এর পরবর্তী শেষ ১ সপ্তাহ লকডাউন হতে পারে ।