ষ্টাফ রিপোর্টার ।। করোনা মহামারির কারণে দেড় বছর বন্ধ ছিল স্কুল-কলেজ। এতো দিন শিক্ষার্থীরাও ছিল ঘরবন্দি। শিক্ষার্থীদের পদচারণায় আবার মুখর হওয়া অপেক্ষা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। দেড় বছর আগে করোনা মহামারির কারণে স্কুল-কলেজে যাওয়া বন্ধ হয় শিক্ষার্থীদের। অ্যাসাইনমেন্ট, অনলাইন-টিভি ক্লাসে চলে ক্লাসের পাঠ। এ ঘরবন্দি জীবনের অবসান হলো আজ। দীর্ঘদিন পর স্কুল কলেজ খোলায় উচ্ছাসিত শিক্ষাথীরা।
এ বছরে এবং আগামী বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের এবং প্রাথমিকের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ক্লাস হবে। বাকি শ্রেণিগুলোর শিক্ষার্থীদের ক্লাস সপ্তাহে একদিন করে হবে। সংক্রমণ কম থাকলে পরিস্থিতি বিবেচনায় তা পর্যায়ক্রমে বাড়ানো হবে।
এ বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ক্লাস কিছুদিন পরেই শেষ হয়ে গেলে নবম ও একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ক্লাস হবে, পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী এবং অষ্টম শ্রেণির জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার প্রস্তুতি থাকবে। পরিস্থিতি অনুকূল হলে পরীক্ষা নেওয়া হবে। প্রাক-প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের সশীর ক্লাস আপাতত বন্ধ থাকবে।
যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আইসোলেশন সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে তা শিক্ষা কার্যক্রমের ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করতে হবে। বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ব্যবস্থা করতে হবে। কোন স্থানে করোনা সংক্রমণের অবনতি/বিশেষ অবস্থার সৃষ্টি হলে সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসন/শিক্ষা বিভাগকে অবহিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলার বিষয়ে সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিল সিদ্ধান্ত নেবে। ১২ বছরের ঊর্ধ্বের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
এদিকে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্ত অনুাযায়ী ১০টি বিষয় বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
চেকলিস্টের মাধ্যমে দৈনিক তদারকি করা হবে প্রতিষ্ঠান, এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাঠাতে হবে ঢাকায়; শিক্ষার্থীদের দৈনিক সচেতন করা হবে; বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক ব্যবহার; হাত ধোয়ার ব্যবস্থা; দৈনিক প্রত্যেকের শরীরের তাপমাত্রা যাচাই- এজন্য গেইটে ৩০ মিনিট সময় বরাদ্দ; প্রয়োজনে পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা; লক্ষণ থাকলে শিক্ষার্থীকে অনুপস্থিত হিসেবে বিবেচনা না করা; স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে শ্রেণিকক্ষে বসানো।
১০ নির্দেশনার মধ্যে আরো আছে, স্কুলে কোনো সমাবেশ না করা। তবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষে যার যার আসনে রেখে হালকা শারীরিক কসরত; পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা; হোস্টেলে বিশেষ নির্দেশনা অনুসরণ।
কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থায় অনিয়ম পেলে ওই প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। আজ রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আজিমপুর গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে পরিদর্শনে এসে এ কথা বলেন মন্ত্রী।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, করোনা পরিস্থিতি ও ডেঙ্গুর প্রকোপ থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে কোনো অনিয়ম পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, আমরা আজ এখানে এসেছি কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে। কিন্তু আমরা প্রায়ই না জানিয়ে সব জায়গায় যাব। কোথাও যদি কোনো নিয়মের ব্যত্যয় দেখি, তাহলে সংশ্লিষ্ট যারা থাকবেন শিক্ষক কর্মকর্তা বা আমার অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, যাঁদের বিষয়টি দেখভাল করার কথা, কিংবা যাঁরা এটি দেখছেন তাঁদের বিরুদ্ধে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। কোনো অভিভাবক যেন স্কুলের ভেতরে এসে ভিড় না জমান। একান্তই যদি কাউকে ভেতরে অবস্থান করতে হয়, তাহলে অবশ্যই শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে অবস্থান করবেন।’