বেশকয়েক মাস আগে ফিফার নির্দেশনা অনুযায়ী ফিফা রেফারি হওয়ার পরীক্ষা দিয়েছিলেন জয়া চাকমা ও সালমা আক্তার মনি। ফিফার পরীক্ষায় পাস করেছেন দুজনই। তবে অপেক্ষা ছিল চূড়ান্ত অনুমোদনের।
অবশেষে সেই অপেক্ষার প্রহর শেষ হল। ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রথম নারী হিসেবে ফিফা রেফারি হলেন জয়া চাকমা। আগামী এক বছর মেয়েদের আন্তর্জাতিক ম্যাচ পরিচালনা করতে পারবেন এই পাহাড়িকন্যা।
তবে আরেক প্রতিযোগী সালমা আক্তার মনি বয়স কম হওয়ায় অনুমোদন পাননি। ফিফা রেফারি হতে হলে ন্যূনতম বয়স হতে হয় ২৩ বছর, মনির বয়স ২৩-এর কম। তাই ফিফার রেফারি হতে আরো অপেক্ষা করতে হবে তাঁকে।
জয়ার অনুমোদনের বিষয়টি এক ই-মেইলের মাধ্যমে নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। জয়া ছাড়া পুরুষদের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে পাঁচজন ফিফা রেফারি ও সাতজন সহকারী রেফারি হয়েছেন।
গত ২৩ আগস্ট বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ফিফা রেফারি হওয়ার জন্য ফিটনেস পরীক্ষা দিয়েছিলেন জয়া চাকমা। সেই পরীক্ষার রিপোর্ট ফিফার নিকট পাঠায় বাফুফে। অবশেষে ৫ ডিসেম্বর জয়ার অনুমোদন পাঠিয়েছে ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
২০১০ সালে রেফারিং জগতে পা রাখেন জয়া। দীর্ঘদিন ম্যাচ পরিচালনার অভিজ্ঞতা নিয়ে এবার আন্তর্জাতি ম্যাচ পরিচালনা করবেন তিনি। জয়াসহ এশিয়া থেকে আরো চারজন নারী ফিফার ম্যাচ পরিচালনা করেন। তাঁদের মধ্যে দুজন হলেন ভারতের; নেপাল ও ভুটান থেকে একজন করে।
রাঙামাটিতে জন্ম জয়া চাকমার। সেখানেই বেড়ে ওঠা। পাহাড় থেকে ওঠে আসা জয়া বয়সভিত্তিক দল পার করে খেলেছেন বাংলাদেশ জাতীয় নারী দলের হয়েও। ২০১২ সালে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়লে আর খেলাটা চালিয়ে যাননি। তখনই বিজেএমসিতে চাকরি হয়ে যায় জয়ার। ভর্তি হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে। এরপর অবশ্য ২০১৬ সাল পর্যন্ত বিজেএমসির হয়ে ঘরোয়া ফুটবলে খেলেছেন তিনি। সঙ্গে শুরু করেন রেফারিং ও মেয়েদের ফুটবলের কোচিং।
২০১২ সালে বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট দিয়ে নিয়মিত রেফারিং শুরু করেন জয়া। একে একে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ চ্যাম্পিয়নশিপের খেলা পরিচালনা করেছেন শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও তাজিকিস্তানে। ২০১৫ সালে বার্লিনে আন্তর্জাতিক ফুটবল উৎসবে ১০টি ম্যাচ পরিচালনা করেন। সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ টুর্নামেন্টেও ম্যাচ পরিচালনা করেছেন জয়া। এবার সব ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দাপিয়ে বেড়াবেন তিনি। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ব্যাজ-জার্সিসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি পাঠাবে ফিফা। এর পরই দেশ-বিদেশের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ম্যাচে দেখা যাবে বাংলাদেশের জয়াকে।