কেরানীগঞ্জ (ঢাকা): কেরানীগঞ্জ উপজেলার অফিস পাড়ায় চুরির হিড়িক পড়েছে। গত এক মাসে উপজেলার চার দেয়ালের মধ্যেই চার চারটি চুরির ঘটনা ঘটেছে।
গত ১৯ জানুয়ারি (বুধবার) দিবাগত রাতে উপজেলা পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশনের (পিডিবিএফ) অফিসের তালা ভেঙে প্রায় এক লাখ টাকা মূল্যের কম্পিউটার পিসি, মনিটর, প্রিন্টারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি খবর প্রকাশের পর একেএকে বেরিয়ে আসছে উপজেলার ভিতরে চুরির নানা ঘটনা।
গত কয়েকদিন আগে কোনাখোলা পুলিশ ফাঁড়ির সামনে চুরি হয় ইলেকট্রিক, ডিশ ও ইন্টারনেট তার, কেরানীগঞ্জ মডেল থানা ভূমি অফিসের সামনে থেকে চুরি হয়েছে তাদের টিউবওয়েল, এসিল্যান্ড অফিসে সামনে থেকে চুরি হয়েছে মোটরসাইকেল, উপজেলা পরিষদ মার্কেট থেকে চুরি হয়েছে কম্পিউটার, প্রিন্টার, স্ক্যানার, ষ্ট্যাম্প, ডাক টিকিটসহ বহু মূল্যবান জিনিসপত্র। আর এতে উৎকণ্ঠায় দিন পার করছেন অফিসের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে দলিল লেখক, ষ্ট্যাম্প ভেন্ডার, দোকানদারসহ নানা পেশার মানুষ।
কেরানীগঞ্জ উপজেলা দারিদ্র্য বিমোচন কর্মকর্তা আরুতি মজুমদার জানান, বুধবার তার অফিসের তালা ভেঙে পুরো দুর্বৃত্তরা কম্পিউটার সেট নিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, এর কয়েকদিন আগে দুর্বৃত্তরা অফিসের বাইরের তার, সার্কিট ব্রেকারসহ অনেক কিছু নিয়ে গেছে। কম্পিউটার নিয়ে যাওয়ায় আমাদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফাইলও চলে গেল।
এফ এম কম্পিউটারের কর্ণধার কাউছার আহমেদ বলেন, বুধবার আমার অফিসের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে প্রায় তিন হাজার টাকা মূল্যের ইলেকট্রিক তার চুরি করে নিয়ে গেছে, এক সপ্তাহ আগেও একই কাজ করেছে চোরের দল। গত এক মাসে আমার অফিসে তিনবার চুরির ঘটনা ঘটল। চার দেয়ালের ভিতরে, পুলিশ ফাঁড়ির সঙ্গে এমন নিরাপদ জায়গায় যদি বারবার চুরি হতে থাকে আমরা কী করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালাব?
উপজেলা পরিষদ মার্কেটের ২১১ নম্বর অফিসের মালিক মো. মকবুল বলেন, গত ছয় মাসে আমাদের অফিস থেকে তালা ভেঙে দুইবারে চার সেট কম্পিউটার, প্রিন্টার, স্ক্যানার চুরি করে নিয়ে গেছে। বুধবারও তার নিয়ে গেল, এভাবে চলতে থাকলে আমরা নিঃস্ব হয়ে যাব। একই জিনিসপত্র চুরি হয়েছে ২১৪ নম্বর কক্ষ থেকেও।
গত দুই মাস আগে ২৩৪ নম্বর কক্ষ থেকে টাকা, ডাক টিকেট, আইপিএসসহ মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায় বলে গণমাধ্যমকে জানান স্ট্যাম্প ভেন্ডার মো. হাবিব।
এ ব্যাপারে কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান জানান, গত কয়েকদিনে উপজেলা চত্বরে একাধিক চুরির ঘটনা ঘটেছে। ঘন কুয়াশার কারণে এবং অফিস পাড়ায় কোন নাইট গার্ড না থাকার সুযোগ নিচ্ছে চোরেরা। তবে আমরা বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) থেকেই সিকিউরিটির ব্যবস্থা করেছি। আশা করছি এমন ঘটনা আর ঘটবে না।

