বিদেশে চাকরি প্রত্যাশীদের ঋণ সহায়তা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যাতে বিদেশে যাওয়ার জন্য তাদের জমি বিক্রি করতে বা প্রতারণার শিকার হতে না হয়।
তিনি প্রবাসী শ্রমিকদের প্রক্রিয়া অত্যন্ত স্বচ্ছ করতে এবং চাকরি প্রত্যাশীদের কাছে এ সংক্রান্ত সব ধরনের তথ্য সহজলভ্য করতে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানোর জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন।
সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই নির্দেশ দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার এই বৈঠকে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেন।
বৈঠকের পর সচিবালয়ে সংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বিদেশে যারা যাবেন তাদের সমস্ত প্রক্রিয়া নির্ভুল ও স্বচ্ছ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, তিনি (প্রধানমন্ত্রী) এ ব্যাপারে গণমাধ্যম- টেলিভিশন, রেডিও এবং সংবাদপত্রে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানোর নির্দেশনা দেন-যাতে করে চাকরি (প্রত্যাশীরা) সঠিক তথ্য পায় এবং বিদেশে যাওয়ার প্রকৃত ব্যয় সম্পর্কে জানতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা চাকরি প্রত্যাশীদেরও বিদেশে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে বলেন। যেহেত ব্যাংক সঠিক নিয়োগপত্র ছাড়া ঋণ দেয় না- তাই তারা নিরাপদ থাকবেন, এতে করে প্রবাসীরা প্রতারিত হবেন না।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বিদেশে চাকরির জন্য বাংলাদেশি শ্রমিকদের কোনোক্রমেই যেন অতিরিক্ত অর্থ দিতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদেশ নির্দেশনা দেওয়ার পাশাপাশি চাকরি প্রত্যাশীদের মন্ত্রণালয় এবং এর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে বিদেশ যেতে বলেন। কারণ, অনেক বাংলাদেশি শ্রমিক তাদের চাকরি সম্পর্কে কিছু না জেনেই দালালদের কথায় প্রভাবিত হয়ে তাদের খপ্পড়ে পড়ে সরাসরি অর্থ পরিশোধ করে বিদেশ যান। সভায় এ ধরনের কিছু ঘটনা সম্পর্কেও আলোচনা হয়।
তিনি আরো বলেন, যদি তারা জমি বিক্রি না করে ব্যাংক থেকে ঋণ নেন, তবে তাদের নিয়োগ সম্পর্কে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ব্যাংক তাদের অর্থ দেবে না। তাই তারা নিরাপদ থাকবেন।
সচিব বলেন, কিছু বাংলাদেশি ৩-৪ লাখ টাকা ব্যয় করে মালয়েশিয়া যান, কিন্তু দুই বছরেও তারা সেই টাকা উপার্জন করতে পারেন না এবং খালি হাতে দেশে ফিরে আসেন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মীরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ ১০০টি শিল্প অঞ্চলে কয়েক লাখ শ্রমিক প্রয়োজন হবে উল্লেখ করে চাকরি প্রত্যাশীদের এই বিষয়টিও অবহিত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নিদের্শনা দেন। এখন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো নির্মিত হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, চাকরি প্রত্যাশীরা শিল্প অঞ্চলগুলোতে কি ধরনের দক্ষতার প্রয়োজন রয়েছে- তা জেনে যথাযথ প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধি করে দেশেই ভাল উপার্জন করতে পারবেন।