ঢাকারবিবার , ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • অন্যান্য
  1. অর্থনীতি
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. জীবনধারা
  6. বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
  7. বিনোদন ভুবন
  8. বিবিধ
  9. ভিডিও নিউজ
  10. রাজধানী
  11. রাজনীতি
  12. শিক্ষা
  13. সর্বশেষ
  14. সারাবাংলা
  15. স্বাস্থ্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ইমরান খান আস্থাভোটে ক্ষমতাচ্যুত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | ডেইলিনিউজ২৪বিডি.কম
এপ্রিল ১০, ২০২২ ১০:১১ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

দিনভর নাটকের পর পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে মধ্যরাতের অনাস্থা ভোটে হেরে ইমরান খানের প্রধানমন্ত্রীত্বের অবসান ঘটল।

ইমরানকে বিদায় করতে পার্লামেন্টের ৩৪২ আইনপ্রণেতার মধ্যে অন্তত ১৭২ জনের সমর্থন প্রয়োজন ছিল বিরোধীদের। সেখানে ১৭৪ ভোট পেয়ে তাদের অনাস্থা প্রস্তাব পাস হলে ক্ষমতায় আসার সাড়ে তিন বছরের মাথায় ইমরানের বিদায় নিশ্চিত হয়।

পাকিস্তান হল সেই দেশ, যেখানে কোনো সরকারপ্রধান তার মেয়াদের পুরো সময় ক্ষমতায় থাকতে পারেননি। তবে ৬৯ বছর বয়সী ইমরান খানই পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, যাকে পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে হেরে বিদায় নিতে হল।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে শনিবার সকালে অধিবেশন বসার পর নানাভাবে আস্থা ভোট এড়ানোর চেষ্টা করে গেছে ক্ষমতাসীন দল। শেষ পর্যন্ত পার্লামেন্টের স্পিকার আসাদ কাইসার প্রধানমন্ত্রীর প্রতি তার আনুগত্য বজায় রেখে পদত্যাগ করেন।

ইমরান খানের দল পিটিআইয়ের এমপিরা অধিবেশন থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন; ইমরান নিজেও পার্লামেন্টে ছিলেন না। 

এরপর ভারপ্রাপ্ত স্পিকার আয়াজ সাদিকের সভাপতিত্বে অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হয়, যার ফলাফল নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল আগেই। 

পাকিস্তানের আইনসভা এখন নতুন একজন নতুন প্রধানমন্ত্রী বেছে নেবে। সেজন্য আগামী সোমবার জাতীয় পারিষদে আবার ভোটাভুটি হবে। সেজন্য রোবার বেলা ১১টার মধ্যে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। 

এতদিন বিরোধী দলের আসনে থাকা দলগুলোর জোট ইতোমধ্যে পাকিস্তান মুসলিম লীগের নেতা শাহবাজ শরিফকে তাদের প্রার্থী মনোনীত করেছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ভাই শাহবাজের তোলা অনাস্থা প্রস্তাবেই ইমরান খানের পিটিআই সরেকারের পতন ঘটল।

ভোটাভুটি শেষে বিরোধী দলীয় নেতা শাহবাজ শরিফ পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে বলেন, “পাকিস্তানে আজ নতুন ভোরের সূচনা হল, আমরা পাকিস্তানকে নতুন করে গড়ে তুলব।”

এই আস্থা ভোট ঠেকাতে নানা নাটকীয়তার জন্ম দিয়েছিলেন ইমরান। গত ৩ এপ্রিল অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল করে দিয়েছিলেন ডেপুটি স্পিকার। ইমরানের আহ্বানে পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে আগাম নির্বাচন ডেকেছিলেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি।

কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট ওই দুই সিদ্ধান্ত অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করে শনিবার অধিবেশন পুনরুজ্জীবিত করে ভোটাভুটির নির্দেশ দিলে লজ্জানক প্রস্থান এড়ানোর পথ বন্ধ হয়ে যায় ইমরান খানের জন্য। 

নামকরা ক্রিকেটার থেকে রাজনীতির মাঠের পাকা খেলোয়াড় বনে যাওয়া ইমরান খান ছিলেন পাকিস্তানের ২২তম প্রধানমন্ত্রী। দুর্নীতি ঠেকানো ও অর্থনীতিকে ঠিক করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০১৮ সালে ক্ষমতায় এসেছিলেন তিনি।

কিন্তু কোনো প্রতিশ্রুতিই ঠিকভাবে পূরণ করে উঠতে পারেননি। মূল্যস্ফীতির উচ্চ হার আর বিদেশি ঋণের বিপুল বোঝার কারণে দ্রুত জনসমর্থন হারাতে থাকে তার দল।

ইমরানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সাধ পূরণ হয়েছিল পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর সমর্থন পাওয়ার মধ্য দিয়ে। সেই সেনাবাহিনীর সঙ্গে টানাপড়েনে জড়িয়েই মেয়াদ পুরো হওয়ার দেড় বছর আগে তার বিদায় ঘণ্টা বাজতে শুরু করে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।

পাকিস্তানের রাজনৈতিক ইতিহাসে এর আগে দুইবার ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট হয়েছিল। ১৯৮৯ সালে বেনজির ভুট্টো এবং ২০০৬ সালে শওকত আজিজকে সেই পরীক্ষার মুখে পড়তে হয়েছিল এবং তারা দুজনই তাতে উৎরে গিয়েছিলেন।

এবার পার্লামেন্টে ভোটাভুটি হলে ইমরানের উইকেট যে টিকবে না, সে বিষয়ে তিনি নিজেও নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলেন। তবে ভরাডুবির মুখেও তিনি জোর গলায় বলে আসছিলেন, তিনি পদত্যাগ করবেন না, পাকিস্তানের জন্য খেলে যাবেন ‘শেষ বল পর্যন্ত’।