রাজধানীকে দৃষ্টিনন্দন ও পরিচ্ছন্ন রাখতে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত নেয়া হচ্ছে নিত্যনতুন পরিকল্পনা। এর অংশ হিসেবে একসময় নগরজুড়ে ফুটপাতে স্থাপন করা হয়েছিল ছোট বড় ডাস্টবিন। সচেতন নাগরিক হিসেবে পথচারী এবং আশপাশের মানুষ এসব ডাস্টবিনে ময়লা আর্বজনা ফেলার কথা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, ডাস্টবিন ব্যবহার না করে এর বাইরে ময়লা আবর্জনা ফেলছে নগরবাসী ও ঢাকার বাইরে থেকে বিভিন্ন কাজে আসা মানুষ। বড় ডাস্টবিনে উপচে পড়ছে ময়লা-আবর্জনা। নগরীর বিভিন্ন স্থানে এ রকম ময়লা-আবর্জনার অসংখ্য স্তূপ রয়েছে। ফলে রাজধানীর পরিবেশ দূষিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। অসচেতন নগরবাসীই প্রিয় ঢাকাকে নোংরা করে চলেছে প্রতিনিয়ত। আবার ডাস্টবিন যতটুকুই ব্যবহৃত হয়, সেসব ময়লাও অনেক সময় অপসারণ করা হয় না।
সরজমিনে ইস্কাটন গার্ডেন, মগবাজার, এলিফ্যান্ট রোড, হাতিরপুল, কাটাবন, শাহবাগ, শহীদ মিনার, কাকরাইল, সেগুনবাগিচা, ফার্মগেট, মালিবাগ,কারওয়ান বাজারসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সড়কের পাশে ছোট-বড় ডাস্টবিন থাকলেও সেগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে না।
জানা যায়, নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে ১০০টি করে ৫৭টি ওয়ার্ডে মোট পাঁচ হাজার ৭০০ ছোট আকারের স্টিলের ডাস্টবিন বসিয়েছিল সিটি করপোরেশন। এর মধ্যে বেশির ভাগ ডাস্টবিন ব্যবহৃত না হওয়ায় মরিচা ধরে গেছে। অনেকগুলো আবার উল্টে আছে।
বড় ডাস্টবিনগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। এসব ডাস্টবিনে বর্জ্য উপচে পড়ে। বের হয় দুর্গন্ধ। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ পথচারী লোকজন দুর্গন্ধ এড়াতে নাক চেপে ধরে পার হচ্ছেন ডাস্টবিনের জায়গাটুকু।
ইলিয়াস আল মামুন নামে একজন নগরবাসী ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘ইস্কাটন গার্ডেনে ছোট ছোট ডাস্টবিন আছে। অনেক ডাস্টবিনে ময়লা রাখা আছে, কিন্তু সরানো হচ্ছে না। আবার অনেকগুলো উল্টানো রয়েছে।’
মো. শুকুর আহমদ নামে আরেকজন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘ছোট ডাস্টবিন উল্টো হয়ে রয়েছে। আর বড়গুলো উপচে সড়কে পড়ে আছে ময়লা-আবর্জনা। ফলে দুর্গন্ধে নাকমুখ ঢেকে রাখলেও বমি আসে।
মুস্তাক হোসেন নামে আরও এক নগরবাসী ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘বলা হয়েছে বাসা-বাড়ি থেকে ময়লা আবর্জনা নেয়া হচ্ছে। কিন্তু আমার বাসা থেকে তো নেয় না। ফলে আমার মগবাজারের বড় ময়লার ডাস্টবিনে ফেলতে হচ্ছে ময়লা।’
রাজধানীর পরিবেশ সুন্দর রাখতে যতদ্রুত সম্ভব ময়লার স্তূপগুলো সরিয়ে নেয়ার দাবি জানান তিনি।
রাইসা খানম নামে এক নারী ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘যে এলাকায় ডাস্টবিন আছে সেই এলাকায় টিকে থাকতে কষ্ট হয়। পরিবেশ দূষিত হয়ে যায়। স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। পরিবেশ রক্ষা করতে নগরকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা খুব জরুরি। সিটি করপোরেশনের নতুন পরিকল্পনা দ্রুত সম্পন্ন করা হোক।’
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহম্মেদ ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমরা ছোট-বড় ডাস্টবিন দিয়েছিলাম অনেক আগে। এগুলো দিয়ে কাজ হচ্ছে না। নতুন পরিকল্পনা করে এসপিএস এর মাধ্যমে ময়লা আবর্জনা তুলে নেওয়া হবে এবং মালিবাগ-মগবাজারসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় যে ডাস্টবিন রয়েছে, ময়লা আবর্জনা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেনা, এসব এলাকা নিয়ে নতুন পরিকল্পনা চলছে। আমরা চাই রাজধানী পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকুক। এজন্য মানুষেরও সহযোগিতা খুব প্রয়োজন। আমাদের টিম বাসা-বাড়ি থেকে ময়লা-আবর্জনা নিয়ে আসছে। আশা করছি আমাদের পরিকল্পনা সফল হবে।